এক্সক্লুসিভ

সিলেটে পশুর হাট

লোকারণ্য, স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে

১৫ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৮:০৪ অপরাহ্ন

লোকে- লোকারণ্য হাট। দেখলেই চোখ আটকে যায়। হাজার হাজার মানুষের সমাগম। কারও মুখে মাস্ক নেই। ক্রেতা-বিক্রেতা ভিড় করছেন বাজারে। আছে উৎসুক জনতাও। এমন দৃশ্য গতকাল চোখে পড়লো সিলেটের একটি পশুর হাটে। লকডাউন চলছে। বিধিনিষেধও শেষ হয়নি। এই অবস্থায় পশুর হাট এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে ওই এলাকায়। সিলেট শহরতলীর শিবেরবাজার। সদর উপজেলার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র এটি। সপ্তাহে বুধ ও  রোববার এখানে বসে হাটবাজার।  কোরবানির পশুর হাটের জন্য বাজারে নতুন করে ইজারার প্রয়োজন হয়নি। বাজারের ইজারাদার আজির উদ্দিনই একপাশে খোলা মাঠে এবার পশুর হাটের আয়োজন করেছেন। সাজসজ্জা করে ত্রিপল টানিয়ে করেছেন হাসিলের টাকা গ্রহণের ব্যবস্থাও। লকডাউনের কারণে কড়াকড়ি আরোপ চলছে সিলেট নগরে। বিশেষ করে নগরের কাজিরবাজারের দিকে চোখ সবার। বাজার কর্তৃপক্ষও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজারে বিকিকিনির ব্যবস্থা করেছেন। হাট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আছে কড়াকড়ি। কাজিরবাজারের হাটের ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন- লকডাউনের কারণে কাজিরবাজারে এখনো পশু বিকিকিনি শুরু হয়নি। প্রশাসনের নির্দেশের পর বাজার কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিকিকিনি শুরু করবেন। এদিকে নগরে অস্থায়ী পশুর হাট বসানো নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আজ-কালের মধ্যে এ ব্যাপারে ঘোষণা আসতে পারে। এ অবস্থায় সিলেট নগরীর আশপাশ গ্রামীণ এলাকার হাটগুলোতে ইতিমধ্যে পশু বিকিকিনি শুরু হয়েছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাট কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি না  মেনেই পশু বেচা-বিক্রি করছেন। গতকাল শিবের বাজারে এ ধরনের দৃশ্য চোখে পড়েছে। বিকালে বাজারে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। কারও মুখে মাস্ক নেই। এমনকি হাট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বাজারে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি পালনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বিষয়টি যেন ভুলে গেছেন সবাই। স্থানীয়রা
জানিয়েছেন, শিবের বাজার পশুর হাট বসে হাটবাজারে। গতকাল ছিল হাট বাজারের নির্ধারিত দিন। এ কারণে দুপুর থেকেই ব্যাপারীরা তাদের পশু নিয়ে বাজারে আসেন। স্থানীয় খামারি ও কৃষকরাও পশু নিয়ে আসেন বাজারে। দুপুরের দিকে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল কম। কিন্তু বেলা গড়িয়ে বিকাল হতেই কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। একটি পশু কিনতে বাজারে আসেন ৫-৬ জন। তারাও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বাজারে ঢুকে পশুর দরদাম করেন। বিকালের দিকে অনেকেই আবার দল বেঁধে পশু নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। বাজারের ভেতরে হাট কর্তৃপক্ষের হাসিল রয়েছে। এসব হাসিলে বসা ব্যক্তিদের মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। পশুর হাটের এই মানুষের সমাগম মূল বাজার পর্যন্ত বিস্তৃতি ঘটেছিল। শিবের বাজারের এই হাট নিয়ে জালালাবাদ থানার ওসি নাজমুল হুদা মানবজমিনকে জানিয়েছেন, এই বাজার নতুন না। লকডাউনে হাটের কর্তৃপক্ষ প্রায়ই স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পশুর হাট বসাচ্ছে। গত রোববারও সে হাট বসিয়েছিল। পুলিশ যাওয়ার পরপরই হাট থেকে ব্যাপারী ও ক্রেতারা পালিয়ে যায়। পুলিশ আসার পর আবার হাট বসানো হয়েছিল। পুলিশ আবার গিয়ে অভিযান চালিয়েছিল। তিনি বলেন- এরপর সতর্ক করা হলেও হাট কর্তৃপক্ষ মানেনি। ফের হাট বসানোর বিষয়টি জানার পর গতকাল বিকালে তিনি কঠোর অ্যাকশনে যাবেন বলে জানান। এদিকে গতকাল বিকালে হাটেই ছিলেন ইজারাদার আজির উদ্দিন। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের আসার খবরে তিনি বাজার থেকে চলে যান। এরপর মোবাইল ফোনও বন্ধ করে দেন। তবে বাজার থেকে চলে যাওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি হাটের ইজারাদার হওয়ার কারণে সপ্তাহে দুইদিন বাজার বসাচ্ছেন। হাট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে প্রচারণা চালালেও কোনো কাজ হয়নি। তিনি এ ব্যাপারে আরও কঠোর হবেন বলে জানান।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status