বিশ্বজমিন

আসামে গরু জবাই নিয়ন্ত্রণে বিধানসভায় বিল উত্থাপন

মানবজমিন ডেস্ক

১৩ জুলাই ২০২১, মঙ্গলবার, ১:৩৪ অপরাহ্ন

আসাম বিধানসভায় গরু জবাই নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। এর নাম ‘আসাম ক্যাটল প্রিজার্ভেশন বিল, ২০২১’। সোমবার রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্বশর্মা। এর উদ্দেশ্য রাজ্যে গবাদিপশু জবাই, ভক্ষণ এবং পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা। এটি ছিল রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথমদিন। সরকার ওই বিল উত্থাপন করলেও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধী দলীয় এমএলএ’রা অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন। বিধানসভায় বিলটির পক্ষে অনাপত্তি থাকলে এর অধীনে গরুর মাংস বিক্রি, কাউকে দেয়া অথবা প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ হবে এমন সব এলাকায়, যেখানে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই হিন্দু, জৈন, শিখ এং গরুর মাংস ভক্ষণ করেন না এমন অন্য সম্প্রদায়।  এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এতে আরও বলা হয়েছে, এই বিল পাস হলে কোনো মন্দির, বৈষ্ণবদের উপাসনালয় সত্রা ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কার্যকর থাকবে নির্দেশ। যথাযথ কর্তৃপক্ষ যদি এমন কোনো প্রতিষ্ঠান অথবা এলাকার জন্য এই বিধান প্রয়োজন মনে করে, তবে তারা এই বিলটি প্রয়োগ করতে পারবে। বিলে বলা হয়েছে, ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি বাদে অনুমোদিত স্থান ছাড়া অন্য কোথাও সরাসরি বা পরোক্ষভাবে কোনো ব্যক্তি গরুর মাংস বা গরুর মাংস দিয়ে তৈরি কোনো জিনিস বিক্রি, বিক্রির জন্য প্রস্তাব বা প্রদর্শন করতে পারবেন না। কিনতেও পারবেন না’।

এই বিলটি আইনে পরিণত হলে এর প্রবিধানের অধীনে সাব ইন্সপেক্টরের পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা অথবা একজন রেজিস্টার্ড পশু বিষয়ক কর্মকর্তা অথবা রাজ্য সরকার কর্তৃত্ব অনুমোদিত যেকোনো ব্যক্তিকে তাদের বিচারিক ক্ষমতার অধীনে যেকোনো বাড়িতে প্রবেশ এবং অনুসন্ধান করার ক্ষমতা দেয়া হবে। যদি অনুমোদিত ব্যক্তি বিশ্বাস করার কোনো কারণ পান যে, সেখানে এই আইনের অধীনে অপরাধ হয়েছে অথবা অপরাধ হয়ে থাকতে পারে বলে মনে হয়, তাহলে অনুসন্ধানকারী এই আইনে দেয়া ক্ষমতার অধীনে ব্যবস্থা নেবেন।

এই বিলের অধীনে জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে রাজ্য সরকারের পক্ষে অনুমোদিত পশু বিষয়ক কর্মকর্তা সার্টিফাই করার পরে পশু জবাই করা যাবে। কোনো গবাদি পশু যদি প্রতিকার অযোগ্য, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে অথবা অন্য গবাদি পশুর জন্য বিপদের কারণ হয়ে থাকে তাহলে ওইসব পশুকে জবাই করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও এ বিষয়ে অনুমোদিত পশু বিষয়ক কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

অনিয়ন্ত্রিতভাবে পশু জবাই কমিয়ে আনার জন্য রাজ্য সরকারকে সরাসরি গোশালা প্রতিষ্ঠার অথবা স্বীকৃত কোনো সংগঠনকে নির্দেশ দিতে অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে-  যাতে তারা এমন প্রতিষ্ঠান চালু করেন, যেখানে গবাদিপশুর যতœ নেয়া হয়। এই আইনের অধীনে কোনো ব্যক্তি তার গবাদি পশু বৈধ অনুমতি ছাড়া রাজ্যের একস্থান থেকে রাজ্যের বাইরে কোথাও নিয়ে যেতে পারবেন না, যেখানে গবাদি পশু জবাই করা আইন দিয়ে এখনও নিয়ন্ত্রিত নয়। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে গবাদি পশু রাজ্যের যেকোনো স্থান থেকে আসামের মধ্য দিয়ে অন্য রাজ্যে পরিবহনের ক্ষেত্রেও। গবাদি পশু বিক্রি অথবা কেনার জন্য নিবন্ধিত পশুর মার্কেটে পশু বিক্রির জন্য নেয়া বা কিনে আনতে কোনো অনুমোদন প্রয়োজন হবে না। এই বিল বা আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তি হিসেবে তিন থেকে আট বছরের জেল ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। জরিমানার পরিমাণ হতে পারে ৩ লাখ রুপি থেকে ৫ লাখ রুপি পর্যন্ত।

আসামে গবাদিপশু জবাই নিয়ন্ত্রণের জন্য এখনও বিদ্যমান আছে ‘আসাম ক্যাটল প্রিজার্ভেশন অ্যাক্ট ১৯৫০’। এই আইনের অধীনে যে পশুর বয়স ১৪ বছরের ওপরে তা শর্তসাপেক্ষে জবাই করার অনুমোদন আছে। নতুন আইনটি পাস হলে পুরনো এই আইন বাতিল হয়ে যাবে। পুরনো আইনে গরুর মাংস খাওয়া কোনো অপরাধ ছিল না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status