শিক্ষাঙ্গন

প্রতীকী কর্মসূচিতে শতবর্ষপূর্তি উদ্যাপন শুরু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে- ভিসি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

২ জুলাই ২০২১, শুক্রবার, ৮:৫২ অপরাহ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত সমাজের সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব তৈরিতে এবং দক্ষ ও প্রকৃত মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ গড়তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় মূল বক্তা হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো- ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড্ডয়নের মাধ্যমে দিবসটির প্রতীকী কর্মসূচি শুরু হয়। সভাপতির বক্তব্যে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯০৫ এর বঙ্গভঙ্গ এবং ১৯১১ এর বঙ্গভঙ্গ রদের রাজনৈতিক, সামাজিক ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে তৎকালীন নেতৃবৃন্দ অনুভব করেছিলেন এই অঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা অতীব প্রয়োজন। জ্ঞানোদীপ্ত, বুদ্ধিদীপ্ত সমাজ বিনির্মাণ, বিশেষ করে অবহেলিত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে নেতৃত্ব দেয়ার গুণাবলি অর্জনের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্ম। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিম-লে খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অন্তর্ভুক্ত হওয়াও একটি উদ্দেশ্য। এ সময় প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, অতীত থেকে এ পর্যন্ত এ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে, সাংস্কৃতিক, নাট্য, বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস হলো এ জাতির মুক্তি আন্দোলনের ইতিহাস। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ জাতির জ্ঞান বিস্তারে, বাঙালি জাতির যে রূপ, অর্জন সকল কিছুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ জাতিকে সমৃদ্ধ করেছে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, শতবর্ষ ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার গৌরবময় ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। এটি আমার বিস্ময়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপমহাদেশের প্রথম অসাম্প্রদায়িক এবং একটি জাতীয়তাবাদী বিশ্ববিদ্যালয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িকতা ছিল, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, যদিও পূর্ববঙ্গের মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু তার শিক্ষকরা ছিলেন অন্য সম্প্রদায়ের। এ ভাষা সৈনিক বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশে আধুনিক শিক্ষার প্রবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাগ অসীম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় যে কাজটি করতে পারেনি সে কাজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করেছে। একটি স্বাধীন অসাম্যতায় জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে, বাংলা ভাষার সাহিত্যকে এই চর্যাপদের আমল থেকে রবীন্দ্রনাথ, শামসুর রাহমান পর্যন্ত যে স্রোত, সে স্রোতকে বেগবান করেছে। বাংলা ভাষাকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদায় উন্নীত করেছে। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান কার্জন হল প্রাঙ্গণে একটি বুদ্ধ নারিকেল গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে শত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিরও উদ্বোধন করেন। শতবর্ষের বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ মূল অনুষ্ঠান আগামী ১লা নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status