সেরা চিঠি

তোমার শিক্ষা পূর্ণতা পেলো বাবা

২৭ জুন ২০২১, রবিবার, ৮:৪৫ অপরাহ্ন

প্রিয় বাবা,

আমার এই চিঠিটা পেয়ে তুমি নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছো, কারণ তোমার সঙ্গে আমার যাবতীয় আদান-প্রদান তো হোয়াটস অ্যাপেই  হয়ে থাকে। তাহলে আবার চিঠি কেন? আসলে বাবা কিছু কিছু কথা থাকে যা হোয়াটস অ্যাপের যান্ত্রিকতায় মূর্ত হয় না। তার জন্য সাবেক কালি, কলম, পোস্টকার্ড লাগে। তাই আমি চিঠিই লিখছি তোমাকে। তুমি সারা জীবন আমাদের ভাইবোনদের যে শিক্ষা দিয়েছো, সেটা অবশেষে আমার এই একুশ বছর বয়েসে করতে পেরেছি, সেটা জানানোর জন্যই এই চিঠি। কোনো এক শীতের দুপুরে ছোট বোন টুপুর যখন অর্ধেক খাবার নষ্ট করে উঠে চলে যাচ্ছিল, তুমি বলেছিলে, টুপুর খাওয়া শেষ করে যাও। মনে রেখো, ঠিক এই সময়টাতে কতো লোক অভুক্ত আছে। তাদের সামান্য খাবারটুকু জোটেনি। তাদের কথা মনে করে খাবার এভাবে নষ্ট করো না। এরপর খাওয়া-দাওয়ার শেষে আর্ত মানুষদের কাহিনী শুনিয়ে তুমি আমাদের ভাইবোনদের শিক্ষা দিয়েছিলে, আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। আর একটা শিক্ষা দিয়েছিলে, কষ্ট আসবে, দুঃখ আসবে কিন্তু সবসময় তাদের কথা ভাববে যারা তোমার থেকেও বেশি কষ্ট পাচ্ছে, দুঃখ পাচ্ছে। বাবা, এতদিনে তোমার কথামতো একটা কাজ করতে পেরেছি। আমাদের এই রাজস্থানের পিলানির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হোস্টেলের ছাত্রদের সংগঠিত করে আমরা একদিন কোভিড আক্রান্ত অসহায়, আর্তদের  খাওয়াচ্ছি। রবিবার দুপুরে এটা হচ্ছে। প্রচুর গরিব দুঃখী মানুষ আসছে। হ্যাঁ, এর জন্য আমাদের শনিবার রাত্রের গ্রান্ড ফিস্ট বন্ধ রাখতে হয়েছে। তাতে কোনো আক্ষেপ নেই বাবা, যখন দেখি পিলানির চক-এ বসে ভিক্ষা করা মানুষটার খিচুড়ি আর আলুর দম দেখে চোখটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। বাবা, তখন যেন মনে হয় তোমার শিক্ষা আজ এতদিন পড়ে পূর্ণতা পেলো। তোমাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ধৃষ্টতা আমার নেই। শুধু তোমাকে প্রণাম জানাই আর একবার।

ইতি
তোমার রক্তিম    
               
(পুনশ্চ: টুপুর এখন ক্লাস টেনে। ওকে বলো- ও যেন আর খাবার নষ্ট না করে)
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status