শেষের পাতা

গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ভারতীয়দের ফেরাতে ঢাকার চিঠি

মিজানুর রহমান

২৫ জুন ২০২১, শুক্রবার, ৯:৩৯ অপরাহ্ন

দেশের বিভিন্ন বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প, গার্মেন্টস, আইটিসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে (কী পোস্টে) থাকা ভারতীয় কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরানোর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। করোনার কারণে ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কয়েক শ’ কর্মী ভারতে গিয়ে আটকা পড়ে আছেন। বাৎসরিক ছুটি কিংবা পরিবারের জরুরি প্রয়োজনে দেশে গিয়েছিলেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত মারাত্মক হওয়ায় মধ্য এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, ভারতীয় এসব কর্মী বিশেষত বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে যুক্ত বিশেষজ্ঞ এবং গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদের দীর্ঘ অনুপস্থিতি প্রকল্প বাস্তবায়নে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলছে। এতে প্রকল্পগুলোর কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়া এবং বাজেট বরাদ্দ বেড়ে যাওয়াসহ অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে। সেই সব শঙ্কা বিবেচনায় অপরিহার্য কর্মীদের জরুরিভিত্তিতে কর্মস্থলে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভারত সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, অভ্যন্তরীণভাবে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি-কর্ম শুরুর তাগিদ দিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থাগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাশিয়ার সহযোগিতায় বাস্তবায়িত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে যুক্ত রাশিয়ান কর্মীদের সম্প্রতি বিশেষ ব্যবস্থায় ফেরানো হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলা করে ভারতীয়দের ফেরানো যায় কিনা- সেটাই ভাবছে সরকার। সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত থেকে রাশিয়ানদের ফেরাতে সরকার কী প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি অনুসরণ করছে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, স্পেশাল ফ্লাইটে ফেরানো হয়েছে তাদের। এয়ারপোর্ট থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের প্রকল্প এলাকায় নেয়া হয়েছে। প্রকল্প অফিসের তত্ত্বাবধানে অত্যন্ত সূচারুভাবে তাদের কোয়ারেন্টিন সম্পন্ন হয়েছে। ফেরত আসা রাশিয়ান কর্মীরা নিরাপত্তা সতর্কতার সবক’টি ধাপ মেনে চলেছেন। ফলে ব্যক্তিগতভাবে তারা নিরাপদ থেকেছেন অন্যরাও নিরাপদ ছিলেন। উল্লেখ্য, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট এবং গার্মেন্টস খাতের কী পোস্টগুলোতে অনেক ভারতীয় কর্মী কাজ করেন। প্রায় দেড় বছর ধরে দুনিয়াব্যাপী তাণ্ডব চালানো মহামারি করোনাকালে বেশির ভাগ ভারতীয় তাদের কর্মস্থলে ছিলেন, তারা সংক্রমণ মুক্ত ছিলেন। পরবর্তী উভয় দেশের করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটলে অর্থাৎ নতুন বছরের শুরুতে পরিস্থিতি খানিক স্বাভাবিক হলে শত শত কর্মী বাৎসরিক ‘হোম লিভ’ বা পরিবারের প্রয়োজনে দেশে গেছেন। মার্চ-এপ্রিলে তাদের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে মধ্য এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে বিশেষ বিমান পরিসেবা ‘এয়ার বাবল’সহ সব ধরনের ফ্লাইট যোগাযোগ বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ। স্মরণ করা যায়, বাংলাদেশ ও ভারতে মহামারি নিয়ন্ত্রণে থাকায় চিকিৎসা, পড়াশোনা, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ জরুরি প্রয়োজনে নাগরিকদের পারস্পরিক যাতায়াতে একটি বিশেষ চুক্তির আওতায় ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে ‘এয়ার বাবল’ চালু ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ বিশেষত: করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের ভয়াবহতায় সেই বিশেষ বিমান পরিসেবাও বন্ধ হয়ে যায়। ভারতে বর্তমানে করোনার হার নিম্নগামী উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মানবজমিনকে বলেন, ভারতে সংক্রমণ হারে নিম্নগামিতা অব্যাহত থাকলে এবং বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে দ্রুতই এয়ার বাবল ফের চালু হবে। এটি সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে পরিস্থিতি কতোটা নিয়ন্ত্রণে আসে তার উপর।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status