অনলাইন

করোনায় ৭৭% পরিবারের আয় কমেছে, ঋণ বেড়েছে ৩১ শতাংশের: ব্র্যাক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৪ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৭:৪৬ অপরাহ্ন

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বাংলাদেশের ৭৭ শতাংশ পরিবারের গড় মাসিক আয় কমেছে। আর ৩১ শতাংশ পরিবারে ঋণ বেড়ে গেছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, ইউএন উইমেন বাংলাদেশ ও নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এই গবেষণা চালায়। ‘কোভিড-১৯-এর কারণে জনমিতিক ও আর্থসামাজিক পরিবর্তনসমূহ: নতুন পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই গবেষণার ফলাফল বুধবার রাতে এক ভার্চুয়াল সংলাপে তুলে ধরেন ব্র্যাক বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন পরিচালক কেএএম মোর্শেদ।

ব্র্যাকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২০ সালের ১০ই ডিসেম্বর থেকে ২৫শে ডিসেম্বর পর্যন্ত এতে ৬ হাজার ৩৭০টি খানার উপর এই জরিপ চালানো হয়। গবেষণায় গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সময়কে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

গবেষণায় দেখা যায়, মহামারির কারণে ৭৭ শতাংশ পরিবারে গড় মাসিক আয় কমেছে। ৩৪ শতাংশ পরিবারের কেউ না কেউ চাকরি বা আয়ের সক্ষমতা হারিয়েছেন।

গবেষণায় অংশ নেয়া পরিবারগুলোর গড় মাসিক সঞ্চয় ৬২ ভাগ কমে গেছে, ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩১ শতাংশ।

গবেষণায় অংশ নেয়া শতকরা ৪৪ ভাগ জানিয়েছেন, তারা কোনো উপার্জনমূলক কাজ পাননি। ফলে কিছু পরিবার সঞ্চয় ভেঙে বা সম্পদ বন্ধক দিয়ে খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়া গ্রামে বা মফস্বল শহরে ফিরে যাওয়া আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের প্রায় ৭৭ শতাংশ মনে করেন, কাজ বা চাকরি খুঁজে পাওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

খানাগুলোর প্রায় ২৫ শতাংশ ফেরত আসা আন্তর্জাতিক অভিবাসী অভিবাসন ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন, যার পরিমাণ ৭৬ হাজার টাকা থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত।

মহামারিকালে পরিবারগুলোতে গড়ে মাসিক রেমিট্যান্স ৫৮ শতাংশ কমে যাওয়ার তথ্যও উঠে এসেছে গবেষণায়।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাম বা মফস্বল শহরে ফিরে আসা পরিবারগুলো স্থানীয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।

এছাড়া গ্রামে বা মফস্বল শহরে ফিরে যাওয়াদের প্রায় ১৩.৩৫ শতাংশের বয়স চল্লিশের বেশি, যাদের কর্মস্থলে ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ফেরত আসা পরিবারগুলোর নারীদের ৭৪ শতাংশ আয়মূলক কাজে যুক্ত হতে পারছেন না, ২৬.৮ শতাংশ বাইরে স্বাধীনভাবে চলতে পারছেন না, ২০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে খাপ খাওয়াতে সমস্যায় পড়ছেন ও নাগরিক সুবিধার অভাব বোধ করছেন।

এছাড়া ১৮ শতাংশের গৃহস্থালি কাজের চাপ বেড়েছে এবং শিশু লালনপালন ও সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিতে সমস্যায় পড়ছেন।

গবেষণায় দেখা যায়, এই সময়ে সংঘটিত বিয়ের ৭৭ শতাংশ কনের বয়স ছিল ১৮ বছরের নিচে, যাদের ৬১ শতাংশই ছিল ১৬ বছরের কম বয়সী।

গবেষণার ফলাফলের বিষয়ে সংলাপে ইউএন উইমেন বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি শোকো ইশিকাওয়া বলেন, দীর্ঘসময় স্কুল বন্ধ থাকায় বাল্যবিবাহ বেড়ে গেছে। অর্থনৈতিক সংকটে পড়া পরিবারগুলো কন্যা সন্তানদের বাল্যবিবাহের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই অবস্থা থেকে বাঁচতে এসব পরিবারকে সামাজিক সুরক্ষা দিতে হবে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে।

সংলাপে আরও বক্তব্য দেন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. ডেনিয়েল নাওজোকস, ব্র্যাক ইউএসএ এর পরিচালক (স্বাস্থ্য) ড. এডাম সোয়ার্টজ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status