শেষের পাতা

ঢাবিতে সশরীরে পরীক্ষা শুরু হলেও ফের অনিশ্চয়তা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার

২২ জুন ২০২১, মঙ্গলবার, ৯:১৫ অপরাহ্ন

গত ১৫ই জুন একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শুরু হয়েছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। গত রোববার ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ৭ম সেমিস্টারের পরীক্ষার মাধ্যমে এ পরীক্ষা শুরু হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ও রাজধানীর পার্শ্ববর্তী সাত জেলায় নতুন করে লকডাউনের কারণে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ ফের অনিশ্চয়তায় পড়েছে। সেক্ষেত্রে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত থাকলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ ওইসব এলাকার অনেক শিক্ষার্থী নেটওয়ার্কিং জটিলতার কারণে অনলাইন ক্লাসেই বসতে পারেনি। জানা গেছে, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেয়া অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতি ছিল প্রায় মাত্র ৪৫ শতাংশ। আরিফুর রহমান নামে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনলাইনে সবাই পরীক্ষা দিতে পারবে না। কারণ অনেক এলাকা থেকে আমাদের বন্ধুরা অনলাইন ক্লাস করতে গিয়েই পারেনি। সেক্ষেত্রে পরীক্ষাতো আরও দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। তাই টিকা নিশ্চিত করে হল খুলে পরীক্ষা গ্রহণই ভালো সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করি। গত পহেলা জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় সেশনজট নিরসনকল্পে অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের স্থগিত সব পরীক্ষা আগামী ১৫ই জুন থেকে সশরীরে নেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবাসিক হল না খোলার শর্তে সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউট পরীক্ষাসমূহ গ্রহণ করবে। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এসব পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। একই শর্তে অন্যান্য সেমিস্টার ফাইনাল, বার্ষিক কোর্স ফাইনাল ও ব্যবহারিক পরীক্ষাসমূহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পহেলা জুলাই থেকে অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব না হলে হার্ডওয়্যার ও ওয়েটল্যাব ভিত্তিক ব্যবহারিক পরীক্ষা ব্যতিত সকল পরীক্ষা অনলাইনে নেয়া হবে। এছাড়া, সভায় সেশনজট নিরসন এবং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ‘লস রিকভারি প্ল্যান’- প্রণয়ন করা হয়েছে। এই প্ল্যান-এর আওতায় সেমিস্টার পদ্ধতির ক্ষেত্রে পরীক্ষাসহ সেমিস্টারকাল ৬ মাসের পরিবর্তে ৪ মাস এবং বার্ষিক কোর্স পদ্ধতির ক্ষেত্রে ১২ মাসের পরিবর্তে ৮ মাস করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরীক্ষার ফলাফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশসহ পরীক্ষার শিফ্‌ট সংখ্যা বৃদ্ধি করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এদিকে গত রোববার হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ায় যেসব শিক্ষার্থীর ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা ছিল না তাদের বেশ কয়েকজনকে থাকার ব্যবস্থা করেছিল ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ। তবে একই পথে হাঁটতে চাইলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় বেশকিছু বিভাগকে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি ভাবতে হচ্ছে। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতিও ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। গতকাল সরকার ঢাকার পার্শ্ববর্তী ৭ জেলায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। এসব এলাকার কেউ অন্য জেলায় মুভমেন্ট করতে পারবে না। এ অবস্থায় এসব জেলার শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সশরীরে পরীক্ষায় অংশ নেয়া অসম্ভব। সেক্ষেত্রে অনলাইন পদ্ধতিতে হাঁটতে হবে বিভাগগুলোকে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে আমরা সশরীরে পরীক্ষাকে উৎসাহিত করি না। সেক্ষেত্রে পূর্বে দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইনে পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামালকে বলেন, করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার কথা আগে থেকেই বলা হয়েছিল। পরীক্ষা সশরীরে নাকি অনলাইনে নিবে এটি বিভাগ-ইনস্টিটিউটের এখতিয়ার। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status