শেষের পাতা

ঘরে ঘরে শিশুদের জ্বর

সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের

তামান্না মোমিন খান

২২ জুন ২০২১, মঙ্গলবার, ৯:১৫ অপরাহ্ন

এই বৃষ্টি এই রোদ। কখনো গরম লাগছে আবার কখনো ঠাণ্ডা। প্রকৃতির এমন লীলাখেলায় ঘরে ঘরে হচ্ছে শিশুদের জ্বর। সাড়ে তিন বছরের পিয়াল দিব্যি খেলাধুলা করে। গত ক’দিন ধরে মাকে বলছিল 
তার চোখ জ্বলে আর পায়ে ব্যথা। এর দু’দিন পরেই আসে জ্বর। কিছুতেই যেন পিয়ালের জ্বর নামছে না। ছয় ঘণ্টা পর পর দুই চামচ করে নাপা খাওয়ানার পরও একবারের জন্যও ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ছে না। পিয়ালের মা সীমা ইসলাম বলেন, ছেলেটা জ্বরে একদম কাহিল হয়ে গেছে। যখন জ্বর উঠছে তখন ১০৩ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর উঠে যাচ্ছে। আবার নাপা খাওয়ানোর পর জ্বরটা একশোতে নামছে। কিন্তু জ্বরটা একেবাবের জন্য ছেড়ে যাচ্ছে না। ক’দিন ধরে বৃষ্টির পানি দিয়ে জানালার গ্লাসে ছবি আঁকছিল পিয়াল। বৃষ্টির পানি লেগেই মনে হয় জ্বর এসেছে ওর। এদিকে দু’দিন জ্বর ছিল আড়াই বছর বয়সী আব্দুল্লাহ। জ্বর চলে গেলেও মুখে কিছুই খাচ্ছে না সে। দুর্বলতার কারণে সারাদিন শুয়ে থাকে অথবা ঘুমিয়ে থাকে আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লাহর বাবা কিবরিয়া বলেন, জ্বরটা তেমন একটা বেশি আসেনি বাচ্চার। দু’দিন ছিল মাত্র। কিন্তু জ্বর চলে যাওয়ার পরও সারাদিন শুয়ে থাকে সে। অন্য সময় জ্বর হলে এভাবে শুয়ে থাকেনি আব্দুল্লাহ। বোনের সঙ্গে খেলাধুলা করতো সে। কিন্তু এবার এতটাই দুর্বল হয়েছে যে খেলতেও চাইছে না। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে কিছুই খেতে চাইছে না সে। অন্যদিকে মানাফ ও মাহানাফ দুই ভাইবোনের জ্বর। মাহানাফের বয়স পাঁচ বছর আর মানাফের বয়স দুই। মাহানাফের মা লাবনী জেসমীন বলেন, মানাফের জ্বর আসার একদিন পরই মাহানাফের জ্বর আসে। দুই বাচ্চারা অসুস্থ। এখন কারে রেখে কারে দেখি। রাতের বেলায় ফ্যান বাড়িয়ে ঘুমালে সকাল বেলা শীত লাগতে থাকে। বাচ্চাদের গায়ে যদি পাতলা কাপড় দিয়ে রাখি দেখা যায় কিছুক্ষণ পর তারা ফেলে দেয়। আবার ফ্যান না চালালে দেখা যাচ্ছে ঘেমে যাচ্ছে। এভাবেই মনে হয় ওদের জ্বর এসেছে। ঘরে ঘরে শিশুদের যে জ্বর হচ্ছে এটা ভাইরাল ফিবার। আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সুরাইয়া বেগম। তিনি বলেন, বাচ্চাদের জ্বর হলে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে করোনার যেসব উপসর্গ আছে সেগুলোর লক্ষণ রয়েছে কিনা সেদিকে নজর দিতে হবে। যদি জ্বরের সঙ্গে শিশুর শ্বাসকষ্ট থাকে বা ডায়রিয়া দেখা দেয় বা মাত্রাতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়ে তবে শিশুকে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে। এসব লক্ষণ না থাকলে শিশুদের যদি শুধু জ্বর থাকে তাহলে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এখন ঘরে ঘরে শিশুদের যে জ্বর হচ্ছে তা ভাইরাল ফিবার। আবহাওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে। এমন জ্বর হলে শুধু নাপা খাওয়ালেই হবে। শিশুর শরীর বেশি গরম হলে কপাল ও শরীর পানি দিয়ে মুছিয়ে দিতে হবে। তরল জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়াতে হবে। সাধারণত জ্বর হলে শিশুরা খেতে চায় না। সেক্ষেত্রে শিশুকে জিং ও ভিটামিন দেয়া যেতে পারে। এ সময় বাবা-মাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে অতিরিক্ত গরমে যেন শিশুর শরীর ঘেমে না যায় আবার অতিরিক্ত ঠাণ্ডার মধ্যে যেন শিশু না থাকে। কারণ শিশুর শরীর ঘেমে ঠাণ্ডা জ্বর আসতে পারে। আবার ঠাণ্ডার কারণেও শিশুর জ্বর আসতে পারে।

 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status