অনলাইন

জানেন কিম জং উনের নতুন দুশ্চিন্তার কারণ কি?

সেবন্তী ভট্টাচার্য্য

২১ জুন ২০২১, সোমবার, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মাথাব্যাথার কারণ এখন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র নয়, তার নিজের দেশের লোকদের খাদ্যের ব্যবস্থা করা। মঙ্গলবার এই স্বৈরাচারী শাসক একটি গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন বৈঠক করেছেন। যাতে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, যে উত্তর কোরিয়া ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম  কেসিএনএ অনুসারে কিম বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ায় খাদ্য সরবরাহ কমে যাচ্ছে। গত বছর ঝড়ের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা থেকে কৃষি ক্ষেত্রকে পুনরায় আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে।

এদিকে কোভিড -১৯ এর জন্য সীমান্ত বন্ধ থাকায় খাদ্যের আমদানি-রফতানির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। যার জেরে রাজধানী পিয়ংইয়াঙে প্রয়োজনীয় পণ্যগুলির দাম এখন আকাশছোঁয়া। চিনি, সয়াবিন তেল এবং ময়দার মতো আমদানিকৃত পণ্যগুলির দাম বেড়েছে। পিয়ংইয়াংয়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিখ্যাত টঙ্গিল মার্কেটে আলুর দাম তিনগুণ বেড়েছে, যেখানে স্থানীয় ও বিদেশিরা কেনাকাটা করেন। বাসিন্দারা আরও জানিয়েছেন যে অপরিহার্য আইটেমগুলি যেমন একটি ছোট প্যাকেট কালো চা, প্রায় ৭০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। ঘাড়ে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে কফি। বাজারে এক প্যাকেট কফি কিনতে গেলে দাম দিতে হচ্ছে  ১০০ ডলারেরও বেশি। কিম ঝেড়ে না কাশলেও জাতিসংঘ জানাচ্ছে উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ৮ লক্ষ ৬০ হাজার টন খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, দেশের দু মাসের রসদের সমান। 

এপ্রিলে পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর ছিল উত্তর কোরিয়াবাসী  ১৯৯০ এর দুর্ভিক্ষের কথা মনে করে ভয়ে শিউরে উঠছিলেন, সেই সময়ে হাজার হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন।  অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন দেশের যে ক্ষমতাশালী পরিবারের হাতে রাজদণ্ড রয়েছে তাদের দেশবাসীকে খাওয়ানোর ক্ষমতা কেন নেই? তাহলে তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার জন্মায় কী করে? তবে কিম ভুল বা ব্যর্থতা স্বীকার করতে ভয় পান নি- এমনকি তার লোকদের সামনে কান্নাকাটিও করতে পারেননি। ২০১১ সাল থেকে তাঁর নির্ধারিত লক্ষ্যটি ছিল উত্তর কোরিয়ানদের জীবনযাত্রার মান উন্নতি করা, দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেওয়া এবং পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন পিয়ংইয়াং কিমের লক্ষ্য পূরণে লড়াই করবে।তবে এই মুহূর্তে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তিক্ততা থেকে দূরে থাকতে চাইছেন কিম।  কিম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের  উত্তর কোরিয়া নীতি বিশ্লেষণ করেছেন  এবং নিজেকে  আলাপ-আলোচনার জন্য তৈরী করছেন । এই কিম-ই  জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম শত্রু হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন।এই বিবৃতির জেরে আমেরিকার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার আলোচনার দরজা বন্ধ হয়ে গেছিলো।

২০১৯ সালে হানয়তে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে  কিমের শীর্ষ সম্মেলনে উভয় পক্ষ কোনও সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার পরে, উত্তর কোরিয়া বারবার উল্লেখ করেছে যে ওয়াশিংটন পিয়ংইংয়ের বিরুদ্ধে তথাকথিত "বৈরী নীতি" পরিবর্তন না করা পর্যন্ত দেশ আর আলোচনায় আগ্রহী নয়। এখন বাইডেন  প্রশাসনও  স্পষ্ট করে দিয়েছে যে উত্তর কোরিয়া, তার পারমাণবিক কর্মসূচি এবং দেশে বৃহত্তর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তার বিদেশ নীতি এজেন্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।যদিও হোয়াইট হাউস বলেছে যে তারা ট্রাম্প এবং ওবামা প্রশাসনের দ্বারা নির্মিত কৌশল থেকে বেরিয়ে নিজস্ব চিন্তাধারা নিয়ে চলবে। এখন দেখার কিম তাঁর একরোখা মনোভাব থেকে বেরিয়ে দেশবাসীর সমস্যা সমাধানে নতুন কী পথ অবলম্বন করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status