শেষের পাতা

লক্ষ্মীপুর-২ ও ৬ ইউপি’র নির্বাচন আজ

সব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

২১ জুন ২০২১, সোমবার, ৯:২৯ অপরাহ্ন

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপনির্বাচন ও রামগতি এবং কমলনগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা  
ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের টহল অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দুলাল তালুকদার।
তবে টানাবৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়ছে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিতরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুপুর থেকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছানো শুরু হয়েছে। এ আসনে নির্বাচন হবে ইভিএমে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জাতীয় পার্টির শেখ ফয়েজ উল্যাহ শিপন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২ হাজার ৯শ’ ৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪ হাজার ৬শ’ ৬৪ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ২শ’ ৯৯ জন। কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৬টি। ২১শে জুন সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
ভোটারদের দাবি, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপনির্বাচন ও ইউপি নির্বাচন নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই ভোটারদের। বিএনপি ভোটে না আসায় ভোটার ও সাধারণ মানুষের আগ্রহ নেই বললেই চলে। তারপর যারা কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবেন, যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারেন- সেটা নিশ্চিত করার দাবি জানান ভোটাররা। পাশাপাশি ভোটকে কেন্দ্র করে যেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও মারামারি-হানাহানি না হয়, সেদিকে প্রশাসনকে নজর দেয়ার আহ্বান জানান তারা।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ ফয়েজ উল্যাহ শিপন অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের কর্মীরা তার নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, যেন তারা কেন্দ্রে না আসতে পারে। কেউ ভোট দিলেও এমপি আর না দিলেও এমপি। ইতিমধ্যে এ ধরনের কথাবার্তা বলে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে  অভিযোগ উঠেছে। তারপরও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন বলে আশা লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ ফয়েজ উল্যাহ শিপনের।
অপরদিকে, নির্বাচনী মাঠে ভোটারদের মাঝে কোনো ধরনের ভয়ভীতি নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরীর নয়ন বলেন, মানুষের মাঝে ভোটের আমেজ দেখা দিয়েছে। কখন ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন, সে অপেক্ষা করছে মানুষ। শতভাগ বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
অপরদিকে ১ম দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৬টি ইউপিতে একইদিন ভোট অনুষ্ঠিত হবে। কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ, চরফলকন, হাজিরহাট ও রামগতির চরবাদাম, চরপোড়াগাছা ও চররমজি এসব ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪০ জন  প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজার ৩১৪ জন।
তবে বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ না নিলেও ৬টিতেই রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রয়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্র্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা, পাল্টা হামলা ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ তুলেছেন। এদিকে প্রতিটি ইউপিতে প্রচার-প্রচারণা গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। আবার অনেকে মামলা ও হামলার ভয়ে রয়েছেন আতঙ্কে। আবার কেউ বলেছেন, ভোট করে লাভ কি। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা।   
তোরাবগঞ্জ ইউপি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল আহমদ রতন অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মির্জা আশ্রাফুল জামাল রাসেলের সমর্থকদের হামলা, মামলার ভয়ে তার কর্মীরা আত্মগোপনে। তারা বলছে, ভোট দিলেও চেয়ারম্যান, না দিলেও চেয়ারম্যান হবে। ইতিমধ্যে ভোটারদের কেন্দ্রে না আসতে হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
তবে হামলা-মামলাসহ ভয়ভীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রাথী মির্জা আশ্ররাফুল জামাল রাসেল বলছেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকা মার্কায় ভোট চান। বিজয় হলে এলাকায় নানান উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত থাকবে। বন্ধ হবে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। একই কথা বলছেন আওয়ামী লীগের অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও।
এ দিকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের রিটার্নিং অফিসার ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দুলার তালুকদার বলেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। প্রতিটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যেন সবাই নির্বিঘ্নে নিরাপদে ভোট দিতে পারে, সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ ও পুলিশ সুপার ড. এএইচ এম কামরুজ্জামান বলেছেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য সক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সবাই নির্বিঘ্ন্নে ও নিরাপদে যেন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে। সে অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে নিয়োজিত থাকবে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন এ দুই কর্মকর্তা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status