বই থেকে নেয়া

মওদুদ আহমদ যখন রিমান্ডে (৮১)

‘আমাকে জেলে আসতে হয়েছে অন্য লোকজনের দোষে’

স্টাফ রিপোর্টার

২০ জুন ২০২১, রবিবার, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন

শুক্রবার ২৯ আগস্ট ২০০৮ দিন ৫০৫
সরকার নতুন একটি মামলা দায়ের করায় আমার মুক্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমার বিরুদ্ধে সরকারের এই প্রতিহিংসার কোনো কারণ আমি খুঁজে পাই না। জেনেশুনে আমি কারো ক্ষতি করিনি। তাহলে আমার ওপর এ নির্যাতন কেন? আমাকে জেলে আসতে হয়েছে অন্য লোকজনের দোষে, যারা ছিলেন সত্যি সত্যিই দুর্নীতিবাজ এবং সরকার ও দলের জন্য যারা অনেক বদনাম কামিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, তাদের বেশির ভাগই ছাড়া পেয়ে গেছেন। কিন্তু আমি এখনো রয়ে গেছি কয়েদখানায়। এর চাইতে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? আমি কোনো দোষ করিনি, নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য ক্ষমতার কোনো অপব্যবহার করিনি, কোনোরকম দুর্নীতিতে জড়িত ছিলাম না কিংবা দুর্নীতিবাজ হিসেবে আমার কোনো পরিচিতিও নেই। এরপরও আমি জেলখানায় আটক রয়েছি ১৭ মাসেরও বেশি সময়!

শনিবার ৩০ আগস্ট ২০০৮ দিন ৫০৬
আমি দারুণ হতাশ হয়েছি যে, আপিল ডিভিশন হাইকোর্ট ডিভিশনের মঞ্জুর করা সব কয়টি জামিন বহাল রেখেছেন কেবল আমারটি ছাড়া। আমার বেলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের আদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ স্থগিত ঘোষণা করেছেন। আমি শুনলাম যে, সাদা পোশাকধারী ৫-৬ জন ফিল্ড ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের একটি দল সকাল থেকে প্রধান বিচারপতির অফিস কক্ষে দেনদরবার করে এবং আমার জামিন মঞ্জুর না করার জন্য চাপ দেয়। এটা অবশ্যই সত্য, কারণ তা না হলে একই আদালতের একই বিচারপতিরা এ ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারেন না। ব্যারিস্টার খোকনও এ ধরনের নিষ্ঠুরতা সহ্য করতে পারছিল না। অনেকটা কান্নাভেজা কণ্ঠে আরো জানালো যে, সরকার বৃহস্পতিবার আমার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির আরো একটি মামলা দায়ের করেছে। ফলে আমার বিরুদ্ধে এখন রয়ে গেছে দুটি নতুন মামলা। এদিকে সুপ্রীম কোর্ট ছয় সপ্তাহের জন্য যাচ্ছে ছুটিতে। ফলে আমার মুক্তির বিষয়টি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে আমি মুক্তির যে স্বপ্ন দেখছিলাম সে স্বপ্ন ভেঙে গেছে। হাসনাও একই রকমে হতাশ হয়েছে ঠিক যেমন হতাশার শিকার হয়েছে আমান, আনা, আমার নির্বাচনী এলাকার লোকজন এবং আত্মীয়স্বজনরা। সবকিছু আমি এখন ছেড়ে দিয়েছি আল্লাহর হাতে।

রবিবার ৩১ আগস্ট ২০০৮ দিন ৫০৭
আমি এখন মূকপ্রায়। কথা বলতেও যেন কষ্ট হয়। জীবন হয়ে গেছে প্রায় ছন্দহীন। চোখের কান্নাও একরকম শুকিয়ে গেছে। এটা এমন একটা অনুভূতি যা ভাষায় প্রকাশ করা দুষ্কর। মুক্তির সব আশা-আকাক্সক্ষা বিলীন হয়ে গেছে। সুড়ঙ্গের অপর প্রান্তে আশার কোনো ছটা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না এবং সামনে এখন শুধু অবারিত অন্ধকার। আর যেন সহ্য করতে পারছি না। ভেঙে পড়ছি ক্রমশ শারীরিক ও মানসিকভাবে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ইবাদতেও এখন আর মনোনিবেশ করতে পারছি না।
আজ কন্যা আনার জন্মদিন। আমি কায়মনোবাক্যে তার শুভ কামনা করি।

সোমবার ১ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দিন ৫০৮
দেখেশুনে মনে হচ্ছে সরকার বেগম জিয়ার পরে আমাকে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এক্ষেত্রে আমাকে ধৈর্যধারণ করে থাকতে হবে। অবশ্যই টিকে থাকতে হবে আমাকে।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আনীত ছয়টি মামলায় আপিল বিভাগ সরকারের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। তারপরও এটা আশ্চর্যজনক যে, আওয়ামী লীগ তারেকের মুক্তির বিরুদ্ধে একটি অবস্থান নিয়েছে। দেশে বিরাজমান সকল রাজনৈতিক সমস্যা ও অনিশ্চয়তার মধ্যেও দুই বৃহৎ দল এখনো পরস্পরের বিরুদ্ধে লেগে আছে। লোকজন এখন বলাবলি করছেন যে, আমরা ফিরে যাচ্ছি সেই পুরনো ঘুণে ধরা রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যা জনগণের কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। ইতিমধ্যেই জাতির অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়ে গেছে এবং এই ক্ষতির পরিমাণও নির্ণয় করা সম্ভব নয়। এই ক্ষত শুকাতে ২০ বছরেরও বেশি সময় লেগে যাবে। যৌথবাহিনী ও টাস্কফোর্সের জবাবদিহিতাবিহীন কর্মকাণ্ড পুরোদমে চলছে এবং কতদিন তা চলবে সে ব্যাপারে কারো কোনো ধারণা নেই।

মঙ্গলবার ২ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দিন ৫০৯
ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের বেলায় একই ঘটনা ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে আনীত ছয়টি মামলায় জামিন হবার পর তিনি যখন মুক্তির স্বপ্ন দেখছিলেন তখন শুধু তার বিরুদ্ধে নয়, তার লন্ডনে অধ্যয়নরত পুত্রকেও গ্রেফতার করে জেলখানায় আনা হয়েছে। অন্যদিকে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জোরেশোরে প্রচার করছে আর পক্ষান্তরে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হচ্ছে নতুন মামলা, আটকে দেওয়া হচ্ছে চলতি মামলাগুলোর ওপর পাওয়া জামিন। এটা অত্যন্ত জটিল ও বিভ্রান্তিকর একটি পরিস্থিতি। বারবার আমার মনে প্রশ্ন জাগে, এরা কারা? কেন তাদের এই নিষ্ঠুর আচরণ? কী তাদের আসল উদ্দেশ্য? কিসের দ্বারা তারা অনুপ্রাণিত? তাদের কি বাবা, মা, ভাইবোন-পুত্র-স্ত্রী পরিবার নেই? তারা কি মনুষ্যপদবাচ্য নয়? কেন তাদের এই প্রতিহিংসাবোধ এবং তা কার বিরুদ্ধে?
হাসিনা, জলিল ও নাসিমের বিদেশে চিকিৎসার্থে মুক্তি অর্জনের বেলায় বিএনপি কোনো ধরনের বিবৃতি দেয়নি। অথচ তারেক রহমানকে চিকিৎসার্থে মুক্তির বেলায় আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এতে তাদের মনের নিচুতাই প্রমাণিত হয়। তারা বিএনপিকে নিগৃহীত করে অবৈধ সরকারকে আরো বেশি উৎসাহিত করছে।
চিকিৎসার জন্য আমাকে নেওয়া হয়েছিল পিজি হাসপাতালে, কিন্তু সেখানে আমার কোনো চিকিৎসা হয়নি। ডা. প্রফেসর আবদুল্লাহকে সেখানে পাওয়া যায়নি। ডা. হেলাল সারাক্ষণ ছিল আমার সাথে। তবে আমার কাজগুলি ভালোভাবেই করতে পেরেছি। পরিবার আর চেম্বারের খবর নেওয়া, বইয়ের পাণ্ডুলিপি বিনিময় ইত্যাদি।

বুধবার ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দিন ৫১০
খালেদা জিয়ার সাথে দেনদরবারের অংশ হিসেবে তারেক রহমান তার বিরুদ্ধে আনা সবগুলো মামলায় জামিন পেলেও এখন অবধি তাকে মুক্ত করা হয়নি। কেউ কেউ এখনো সমস্যা তৈরি করার প্রয়াস চালাচ্ছে। পত্রিকার খবরে এটা শুনে আশ্চর্য লেগেছে যে, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী তাদের পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছে। কীভাবে এটা সম্ভব? গোটা বিষয়টাই রহস্যাবৃত বলে মনে হচ্ছে।
বেগম জিয়া জেলে যাওয়ারও প্রায় এক বছর হয়ে গেছে। তিনি জেলখানায় কেমন আছেন? জীবনে তিনি যত ভুল করেছেন তার একটি তালিকা কি তিনি তৈরি করেছেন? আমি নিশ্চিত যে, অন্তত কয়েকটি ভুলের জন্য তিনি এখন অনুতপ্ত।
আমি কর ফাঁকির মামলায় হাজিরা দিতে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে গিয়েছিলাম। ব্যারিস্টার খোকন ছিল সেখানে। এ মাসের ১১ তারিখে আবার আমাকে হাজিরা দিতে হবে।
আমি এ সেলে থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে যাদের জেলখানায় সঙ্গী হিসেবে পেয়েছি তাদের মধ্যে রয়েছেন তারেক রহমান, ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, শেখ সেলিম, নাজমুল হুদা, জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকুল্লাহ মাসুদ, আমানুল্লাহ আমান, মীর নাসিরুদ্দিন, ফজলুল হক মিলন, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, মতিউর রহমান নিজামী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, মুজিবর রহমান সারোয়ার, আলী আহসান মো. মুজাহিদ, সামসুল ইসলাম ও এমকে আনোয়ার। আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন যতদিন আমাদের সাথে ছিলেন ততদিন আমাদের পক্ষ থেকে খাবার ও রান্নাসহ অন্যান্য বিষয়ে তিনি সব তদারকি করতেন। তিনি ছিলেন ম্যানেজার হিসেবে খুবই ভালো।

বৃহস্পতিবার ৪ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দিন ৫১১
কাল বিকেল ৪টায় তারেক রহমানকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা না হওয়া অবধি তাকে হাসপাতালে থাকতে হবে। তারেক রহমান এখন মুক্ত ও দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। কাজেই এখন শুরু হবে বেগম জিয়ার মুক্তির প্রক্রিয়া। সত্য হোক বা না হোক, তারেকের কয়েকজন ঘনিষ্ঠজনের কারণে বেগম জিয়াকে পর্যন্ত দুর্নীতিবাজ হিসেবে নিন্দার সম্মুখীন হতে হয়েছে এবং দলের শত শত নেতাকর্মী জেলে আবদ্ধ হয়েছে। আমার মতো একজনও ১৭ মাস যাবৎ জেলে আছি। খালেদা জিয়ার প্রচণ্ড রকমের চাপের ফলেই তারেক রহমানের মুক্তি অর্জন সম্ভব হয়েছে এবং মা শেষ পর্যন্ত তার ছেলেকে কারাগার থেকে বের করে আনতে পেরেছেন। জেনারেলরা কোন পরিস্থিতিতে বেগম জিয়ার দাবির কাছে হার মানলেন তা জানা একটি চিত্তাকর্ষক ব্যাপার হতে পারে।
তারেক রহমান ও আমি অন্যান্য সহকর্মীর মতো একই ধরনের মামলায় জড়িত হয়ে আমরা এখন কারারুদ্ধ। আপিল বিভাগ আমার ছাড়া সকলের জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমি সবকিছু ছেড়ে দিয়েছি আল্লাহর হাতে। আমাকে অবশ্যই ধৈর্য ও বিশ্বাস অটুট রাখতে হবে, নজর রাখতে হবে স্বাস্থ্যের দিকে।

শুক্রবার ৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দিন ৫১২
বিচারপতি চাকলাদারের সাহসী ভূমিকায় সুপ্রীম কোর্ট শেষাবধি নমনীয় ভাব দেখাচ্ছেন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ নির্বাচনের দিকে গড়াচ্ছে। এ মাসের মাঝামাঝি নাগাদ বাদবাকি রাজনীতিবিদও জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন।
প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, কামাল মজুমদারের মতো আওয়ামী লীগ নেতারা ইতিমধ্যেই ছাড়া পেয়ে গেছেন। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও ওবায়দুল কাদেরসহ অন্য ৭ জনের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। আগে যেভাবে জামিনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হতো এখন আর তেমনটি করা হচ্ছে না; তবে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে একশ্রেণীর লোক এ ধরনের জামিন মঞ্জুরীর বিরুদ্ধে আপত্তি তুলছেন। আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পক্ষের দাবিদার ড. কামাল হোসেন তাদের মধ্যে একজন।
বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক প্রফেসর মো. মনিরুজ্জামান পরলোকগমন করেছেন। তিনি ছিলেন মেধাবী এবং দীর্ঘদিন যাবৎ আমার সাথে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত।

শনিবার ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দিন ৫১৩
হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পরেও আপিল বিভাগ আমার জামিনের আবেদন নাকচ করে দেওয়ায় আমি চরমভাবে হতাশ ও বিক্ষুব্ধ হয়েছি, অথচ আমার মতো অন্যান্য সবার জামিন মঞ্জুর হয়েছে। আমি এর কোনো যুক্তি বা কারণ খুঁজে পাই না।
স্পষ্টতই সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে এটর্নি জেনারেল এটা করিয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দিতে গিয়ে আপিল বিভাগ থেকে কোনো যুক্তিও দেখানো হয়নি। সরকার কি আমাকে ভয় পাচ্ছেন? আমার বিরুদ্ধে কেন এই বিষোদগার? কি অপরাধ আমার?
তৌফিকের কারণে তার পরিবারের ওপর দিয়ে মহাঝড়ঝঞ্ঝা বয়ে যাচ্ছে। সব ধরনের মানসিক চাপ সইতে না পেরে তার কন্যা দুলি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন গর্ভপাতের শিকার হয়েছে। দুলি অত্যন্ত মেধাবী একটি মেয়ে।

রবিবার ৭ সেপ্টেম্বর ২০০৮ দিন ৫১৪
আনা সম্ভবত তার মার সাথে ওয়াশিংটনে আছে। তার বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ২৯ সেপ্টেম্বর এবং সে ইংল্যান্ডে যাবে ২৫ সেপ্টেম্বর। আমানের স্পেশাল কলেজ খুলতে যাচ্ছে এ সপ্তাহেই। সে ফিরে গেছে টনি ও ক্যারলের বাসায়। চমৎকার একটি ইংরেজ পরিবার।
দুই সপ্তাহ যাবৎ সে তাদের বড় ছেলে ক্রিস্টোফারের সাথে রয়েছে। আমান এই ইংরেজ পরিবারটিরই একটি অংশ। তাদেরও রয়েছে একটি প্রতিবন্ধী সন্তান। পরিবারটির সাথে আমান খুব ঘনিষ্ঠভাবে থাকে। আমানের হৃদয় অত্যন্ত সুন্দর ও রমণীয়।
সপ্তাহখানেক আগে ৩১ আগস্ট ছিল আনার জন্মদিন। সে উপলক্ষে আনা ক্রুজে করে আটলান্টিকে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তার মা এবারের মতো সে ব্যয়ভার বইতে পারেনি। এর আগে দুবার; একবার আনা ও আমান উভয়কে সাথে নিয়ে এবং আরেকবার শুধু আমাকে নিয়ে আমরা ১৩ তলাবিশিষ্ট একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্রুজে করে ফ্লোরিডা উপকূল থেকে গিয়েছিলাম সমুদ্র ভ্রমণে। এটা ছিল এক ভীষণ আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। সেভেন স্টার হোটেলের মতো বিরাট দৈত্যাকার সমুদ্রগামী জাহাজে চড়ে এ ভ্রমণের উপভোগ্যতা কেবলমাত্র ব্যবহারিকভাবেই অনুভব করা সম্ভব। ক্রুজে চড়লে মনে হবে, আমরা অন্য এক জগতে এসে প্রবেশ করেছি। এ যেন স্বয়ংসম্পূর্ণ আলাদা একটি ছোট শহর। সবকিছুর আয়োজন তাতে রয়েছে থিয়েটার থেকে শুরু করে হেলথ ক্লাব, ৬টি রেস্টুরেন্ট, ৪টি সুইমিং পুল, ৫টি সিনেমা হল, যুবক ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা। আমানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল শিশু ও তরুণদের অনুষ্ঠানে। গোটা দিন ওদের সাথে উপভোগ করেছে সে। জাহাজটি ২৪ ঘণ্টা চলতে থাকে, তবে মনেই হয় না যে, এটি চলছে। কোনো শব্দ বা দুলুনি নেই এতে।
আমার পাণ্ডুলিপির সংশোধনীর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।

(চলবে..)
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status