দেশ বিদেশ
সাদা পাথরে নেই পর্যটক
শাব্বির আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট) থেকে
২০ জুন ২০২১, রবিবার, ৯:২৪ অপরাহ্ন
ধারাবাহিক করোনার প্রাদুর্ভাব এবং লকডাউনের কারণে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। পর্যটকের আগমন না ঘটায় এখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট জীবিকা নির্বাহকারী হাজারো মানুষ বেকার অবস্থায় পরিজন নিয়ে মারাত্মক দুর্ভোগে নিপতিত হয়েছেন। প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যে পর্যটন ঘাট ইজারা নিয়ে সংশিষ্টরা আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র সিলেট তথা বাংলাদেশের অন্যতম নয়নাভিরাম স্থান। ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা খরস্রোতা ধলাই নদীর উজানে অবস্থিত রাশি রাশি সাদা পাথরের সমাহার আর বিশাল ঝর্ণার কলকল ধ্বনীতে নেমে আসা স্বচ্ছ জলের অপূর্ব সমন্বয়ে গড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক স্বর্গীয় আবহ সাদা পাথর এলাকা। সুউচ্চ খাড়া পাহাড় থেকে নেমে আসা জলপ্রপাত আর পাহাড়-মেঘের মিতালীতে সৃষ্টি হওয়া আপরূপ দৃশ্য আবলোকন করতে প্রতিদিন এখানে ছুটে আসতেন হাজার হাজার পর্যটক। এক অনিন্দ্য সুন্দর এ নির্মল স্থানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং পাহাড় স্নাত নির্মল বাতাসের নির্যাস পেতে ভ্রমণ পিপাসুরা এখানে ছুটে আসেন। দূর আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমানো সুউচ্চ পাহাড় প্রকৃতির টানে প্রকৃতিপ্রেমিরা দলে দলে ভিড় জমাতেন এ নিসর্গে। প্রতিদিন হাজারো পর্যটকের আগমনে গমগম করতো এ সীমান্ত জনপদ। বৈশ্বিক মহামারি করোনা এবং লকডাউনের কারণে সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র বর্তমানে মৃতপুরিতে পরিণত হয়েছে। এখানে জীবিকা নির্বাহকারী কয়েকশ’ নৌকার মাঝি, শতাধিক হোটেল ব্যবসায়ী ও কর্মচারী, ফটোগ্রাফার, গাইড এবং ভাসমান হকাররা পরিজন নিয়ে দুর্ভোগে নিপতিত হয়েছেন। পাথর কোয়ারিতে পাথর আহরণ বন্ধ থাকায় এদের কোনো বিকল্প রোজগার না থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। সাদা পাথর পর্যটন এলাকার সরকারি ইজারাদার দিলোয়ার মাহমুদ রিপন জানান প্রায় দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে চলতি সনের জন্য তিনি পর্যটন ঘাট ইজারা নিয়েছেন। মহামারির কারণে পর্যটক না আসায় তিনি প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা রোজগার বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ইজারায় বিনিয়োগকৃত মূল টাকা প্রাপ্তি থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেছেন। সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জের হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের একমাত্র ক্ষেত্র। করোনা মহামারির এ ক্রান্তিকালে পর্যটন ব্যবসায় ধস নামায় এখনকার সংশ্লিষ্ট জীবিকা নির্বাহকারীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।