বাংলারজমিন
বড়লেখায় ৪ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়ম
বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
১৯ জুন ২০২১, শনিবার, ৭:৪৩ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা বিদ্যালয়গুলোর ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে- নারীশিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বড়লেখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ছোটলেখা উচ্চ বিদ্যালয় ও চান্দ্রগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়। গত শুক্রবার পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী। এ সময় তিনি ছোটলেখা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে উপজেলার ছোটলেখা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণে ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, নারীশিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪ তলা একাডেমিক ভবনে ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, বড়লেখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণে ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা ও চান্দ্রগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণে ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী গত শুক্রবার দুপুরে নির্মাণাধীন বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর কাজের মান পরিদর্শনে যান। ইউএনওর সঙ্গে ছিলেন- বড়লেখা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাওলাদার আজিজুল ইসলাম ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন। বিকাল ৪টা পর্যন্ত তারা চারটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখেন। এ সময় তারা দেখতে পান নারীশিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের দরজায় অপরিণত কাঠ লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নিম্নমানের সামগ্রী ও বাথরুমে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ফিটিংস। র্যাম্প ফ্লোরের নেট ফিনিসিং উঠে গেছে। ফ্যানে জং ধরেছে। বড়লেখা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন দু’টির দরজায় নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। ভবনের ছাদের প্লাস্টার উঠে গেছে। জানালায় নিম্নমানের পুডিং ব্যবহার করা হয়েছে। চান্দগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন জায়গায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করতে দেখা গেছে। বালু ও সিমেন্টের মিশ্রণ কানো কোনো জায়গায় সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি। ছোটলেখা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাটিযুক্ত বালু দিয়ে প্লাস্টার কাজ করতে দেখা গেছে। এই ভবনের ছাদের প্লাস্টার উঠে গেছে। যথাযথভাবে কিউরিং করা হয়নি। মাটিযুক্ত বালু দিয়ে প্লাস্টার কাজ করায় তাৎক্ষণিক ওই বিদ্যালয়ের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, যেসব ত্রুটি পাওয়া গেছে এগুলো সংশোধনের জন্য চার প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারদের আগেই বলা হয়েছে। তারা সংশোধন করে দেবেন বলেছেন। কিছু সংশোধন কার্যক্রম চলছে। ভবনের কাজ চলমান আছে। কাজ যথাযথ না হলে বিল দেয়া হবে না। বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী গতকাল দুপুরে বলেন, ‘চারটি ভবনের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও বেশকিছু ত্রুটি পাওয়া গেছে। একটি ভবনে তাৎক্ষণিক কাজ বন্ধ করা হয়েছে। অন্যগুলোতে নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণ করতে বলা হয়েছে। দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী প্রত্যেক ভবনের যাবতীয় কাজ যথাযথ না হলে ঠিকাদারদের বিল না দিতে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।