বই থেকে নেয়া

মওদুদ আহমদ যখন রিমান্ডে (৮০)

‘এখন সবকিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের ওপর’

স্টাফ রিপোর্টার

১৯ জুন ২০২১, শনিবার, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন

বুধবার ২০ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৯৬
দুর্নীতি দমন কমিশন হাইকোর্ট ডিভিশনের মঞ্জুর করা রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের ৬০টি জামিনের সিদ্ধান্তের ওপর আপিল করেছে এবং নাইকো ও বার্জ মাউন্টেড পাওয়ার প্ল্যান্ট মামলার শুনানির দিনক্ষণ স্থির করেছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত এ মামলার শুনানির আবেদন করা হয়েছে কমিশনের পছন্দ করা একটি ডিভিশন বেঞ্চে। এতে বোঝা যাচ্ছে যে, সরকারের অভ্যন্তরীণ একটি স্বার্থবাদী মহল এ রাজনীতিবিদদের নাজেহাল করার তৎপরতায় সক্রিয় রয়েছে।
রাজনীতিবিদদের দুর্দিনে প্রায়ই বোনদের দেখা যায় ভাইদের পাশে নিঃস্বার্থভাবে দাঁড়াতে। বোনদের প্রতি ভাইদের স্বাভাবিক মমতার চাইতে ভাইদের জন্য বোনদের নৈকট্যমূলক অভিব্যক্তি অনেক বেশি গাঢ়তর। নাফিসাকে আমি প্রায়ই আসতে দেখি। জেলগেটে বা হাজিরার দিন পুরনো ঢাকার সেই আদালতে। বেবী সুদূর আমেরিকা থেকে আমার আত্মীয়স্বজনের কাছে প্রায় প্রতিদিন ফোন করে কান্নাকাটি করে। বারবার সে ঢাকা আসতে চাইছে। কিন্তু আমি শক্তভাবে তাকে নিষেধ করতে বলেছি। আমার এই দুই বোনই নিবেদিতপ্রাণ গৃহকর্ত্রী এবং তাদের অসুস্থ স্বামীর সেবা করেছে বছরের পর বছর ধরে। আমি প্রতিদিন নাফিসা ও বেবীর পরিবারবর্গ ও সন্তানসন্ততির কল্যাণের জন্য আল্লাহর দরবারে আকুল আবেদন জানাই।

বৃহস্পতিবার ২১ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৯৭
শেষ পর্যন্ত তৌফিক জেল থেকে বের হয়ে গিয়েছে এবং এ দফা আর তাকে পুনঃগ্রেফতার করা হয়নি। গতকাল হাইকোর্ট ডিভিশন আমাকে নাইকো ও আয়সম্পদ সম্পর্কিত এই দুটি মামলায় জামিন দিয়েছে। এখন আমার দরকার অ্যালকোহল মামলার ওপর জামিন। হাইকোর্ট বিভাগ প্রায় এক বছর আগে এ মামলার কার্যধারার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল করে রেখেছে।
সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশন হাইকোর্ট বিভাগের মঞ্জুর করা জামিনের ওপর আপিল করে প্রায় ৬০টি মামলা দায়ের করে। কিন্তু আপিল বিভাগ হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের ওপর হস্তক্ষেপ না করার ঐতিহ্যে অটল থেকে সেসব আপিল আবেদন হাইকোর্ট বিভাগের যথাক্রমিক বেঞ্চগুলোতে ফেরত পাঠিয়েছে।
আজ সেই কালো দিবস যেদিন ঢাকার আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে আয়োজিত জনসভায় শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নারী আন্দোলনের নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন সেদিনকার ভয়াবহ হামলায় নিহত হন। এ ঘটনায় আমি কতটা মর্মাহত হয়েছি তা প্রকাশ করার কোনো ভাষা আমার নেই। এদের দু’জনকেই আমি ভালো করেই জানি এবং এদের প্রতি আমার রয়েছে আন্তরিক শ্রদ্ধাবোধ।
চারদলীয় জোট প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদানের জন্য মিছিলের আয়োজন করলে পুলিশ তাতে অনুমতি দেয়নি। একবার জরুরি আইন প্রত্যাহার করা হলে এই সরকারের পদলেহীরা পালাবার পথ পাবে না এবং এ কারণেই বোধহয় তারা সহসা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করবে না।

শুক্রবার ২২ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৯৮
গতকাল হাইকোর্ট আমাকে শেষের মামলায় জামিন দিয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, আইন অনুসারে আমার বিরুদ্ধে আনীত তিনটি মামলায়ই জামিন পাওয়ায় আমি এখন মুক্ত। আনুষ্ঠানিক আদেশ পাওয়ার সাথে সাথে জেল কর্তৃপক্ষ আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য। তবে নিঃসন্দেহে সরকার আমার মুক্তির প্রক্রিয়া রোধ করতে চাইবে। সরকার হয়তো আপিল ডিভিশনে গিয়ে জামিনের বিরোধিতা করে আপিল করবে। কিংবা নতুন করে মিথ্যা মামলা দায়ের করবে। অথবা জরুরি আইনের ১৬(২) ধারামতে সন্দেহজনক গতিবিধির দায়ে আমাকে জেলগেটে পুনঃগ্রেফতার করতে পারে। দেখা যাক কী হয়। আল্লাহর অসীম রহমতেই আমি জামিন পেয়েছি।
গতকাল আপিল ডিভিশন হাইকোর্ট ডিভিশন থেকে পাঠানো দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারের দায়ের করা ৩৫টি মামলা কোনোরকমের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই হাইকোর্ট ডিভিশনে ফেরত পাঠিয়েছে। এতে সুপ্রিম কোর্টের ভাবমূর্তি উন্নত হয়েছে।

শনিবার ২৩ আগস্ট ২০০৮ দিন ৪৯৯
ব্যারিস্টার খোকন, শহীদ ও ফরিদ এসেছিল। খোকন আমাকে নিশ্চিত করেছে যে, সরকার নিশ্চিতভাবেই আপিল ডিভিশনে গিয়ে আমার মুক্তি রোধ করার চেষ্টা করবে। আমি নিজেও অবশ্য তার জন্য তৈরি। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়ায়। ছুটি চলতে থাকায় আমি হাইকোর্ট ডিভিশনের কাগজপত্র সোমবারের আগে পাবো না। এরপর আমার আইনজীবীদের যেতে হবে নিম্ন আদালতে আমার জন্য মুক্তি পরোয়ানা সই করাতে। সরকার বিভিন্ন কারণে এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার জন্য নিম্ন আদালতকে প্রভাবিত করতে পারে। অবশ্য আল্লাহ চাইলে সবকিছু নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়ে যেতে পারে।

রবিবার ২৪ আগস্ট ২০০৮ দিন ৫০০
সরকারের আসল প্রচারণা দুর্নীতির বিরুদ্ধে নয় - রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে। সরকারের এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আইনবিরোধী এবং এ কারণে অসৎ উদ্দেশ্য ও ইচ্ছাপ্রণোদিত এই সরকারের পতন হতে বাধ্য। সবচাইতে দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত লোকজনকে রেহাই দেওয়া হয়েছে এবং যাদের দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া হয়েছে তারাও একদিন আপিল শুনানি হলে বের হয়ে আসবেন। সরকারের গোটা কৌশল হলো দ্রুত মামলা পরিচালনা করে যত তাড়াতাড়ি রাজনীতিবিদদের জন্য সাজা নিশ্চিত করা এবং তা করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন নিজেদের প্রণয়ন করা আইন বা বিধি পালনেরও তোয়াক্কা করছে না। আইনের অপব্যবহারের ফলে একদিন আপিলগুলোর শুনানি হলে বিচারিক আদালতগুলো আইনের কঠোর পরীক্ষার মুখোমুখি দাঁড়াতে বাধ্য হবে।
বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে উপদেষ্টারা নানা রকম ভাষা প্রয়োগ করে বিরতি দিচ্ছেন, অথচ তারা জানেন যে, সকল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের হাতে ন্যস্ত করা হয়নি। এই সিদ্ধান্তের ভার রয়েছে অন্যত্র এবং এই মেরুদণ্ডহীন সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার ফলে বেগম জিয়ার সাথে কোনোরকমের সমঝোতায় আসার প্রক্রিয়াটি প্রায় আড়াই মাস যাবৎ ঝুলন্ত অবস্থায় আছে।
অন্যদিকে নতুন এক অধ্যাদেশ অনুসারে অযোগ্য নির্বাচন কমিশন আরেকটি জটিলতা সৃষ্টি করে নির্বাচন অনুষ্ঠান বিলম্বিত করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর রেজিস্ট্রিকরণের সবরকম শর্ত পরিপূরণ বাধ্যবাধক করা হলেও নির্বাচন কমিশন বুঝতে পারছে না যে, বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন ও অংশগ্রহণ ছাড়া সুষ্ঠু কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। কাজেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের নিজ নিজ দলকে রেজিস্ট্রিভুক্ত করতে অস্বীকৃতি জানালে কমিশনের পক্ষে কি কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে? নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে অংশ নেবে না, অংশ নেবে রাজনৈতিক দলগুলো। এই সহজ জিনিসটিও তারা বুঝতে পারছে না।

সোমবার ২৫ আগস্ট ২০০৮ দিন ৫০১
নির্বাচন কমিশন সরকারের একটি এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, কাজেই তাদের যা করতে বলা হচ্ছে তাই তারা কেবল পালন করছে মাত্র। প্রথমত, রেজিস্ট্রেশন করার কারণে নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে তাদের উদ্দেশ্য সাধনে সাহায্য করবে- দ্বিতীয়ত, এভাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে তারা নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে। কমিশন যেসব শর্ত আরোপ করেছে তার ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হবে এবং তার জন্য তাদের দলের কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করতে হবে। অথচ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর জরুরি আইনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এই মুহূর্তে তা সম্ভব হচ্ছে না।
এটা স্পষ্ট যে, সরকার নির্ভেজাল কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাইছে না। কেবলমাত্র জাতীয় নির্বাচনের পথ অবরুদ্ধ করার লক্ষ্যেই উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পাঁয়তারা চলছে। এখন সবকিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের ওপর। যদিও মুখে উপজেলা নির্বাচনের আগে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছে, তারা শেষ পর্যন্ত তাদের এই সিদ্ধান্তে অটল থাকবে না। এই সরকারের সাথে সমঝোতা থাকায় তারা জরুরি আইনের অধীনেই যেকোনো নির্বাচনে অংশ নেবে, এক্ষেত্রে বিএনপি একটি চরম সংকটের মুখোমুখি হবে।

মঙ্গলবার ২৬ আগস্ট ২০১৮ দিন ৫০২
রাজনৈতিক দলগুলো উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলে অবৈধ সরকারকে বৈধতা দেওয়া হবে এবং এতে করে সরকার তার অবস্থান সংহত করে নিতে পারবে। এরপর সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও সে সংসদ হবে হাতবাছাই করা একটি সংসদ মাত্র। এ সমস্ত কারণে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার আপাতত কোনো সম্ভাবনা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না, তবে তাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে এবং শেখ হাসিনাকে যতদিন সম্ভব দেশ থেকে দূরে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারি অভিযানের একটি চমকপ্রদ দিক হলো যে, কর্মরত কিংবা অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা অফিসারকেও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বা গ্রেফতার করা হয়নি, অথচ তাদের অনেকে প্রকাশ্য আয়ের বাইরে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। আগের কথা বাদই দিলাম। শুধু গত দেড় বছরে অসংখ্য সেনা অফিসাররা বিপুল পরিমাণ অর্থবৃত্তের অধিকারী হয়েছেন এবং নির্বিঘ্নে তারা লুট করে যাচ্ছেন এখনো।
পিজি হাসপাতালে গিয়েছিলাম চিকিৎসার জন্য। আমি যেমনটি আশঙ্কা করেছিলাম, সরকার ও দুনীতি দমন কমিশন আমার জামিনের বিরোধিতা করে আপিল ভিডিশনে আপিল দায়ের করেছেন।

বুধবার ২৭ আগস্ট ২০০৮ দিন ৫০৩
বেইজিং-এ ১৬ দিনের বিশ্ব অলিম্পিক শেষ হয়েছে। গত রবিবার চীন ৫১টি স্বর্ণপদক লাভ করে প্রথমবারের মতো বিশাল ব্যবধানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাদের তুলনায় আমেরিকা জিতেছে ৩৬টি, রাশিয়া ১৩টি ও বৃটেন ১৯টি, চার বছর আগে অনুষ্ঠিত গত অলিম্পিকের তুলনায় এটা একটি অকল্পনীয় সাফল্য। চীন কেবলমাত্র অলিম্পিক ইভেন্টেই সকলকে পদানত করেনি, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় দেশটি একটি দ্রুততম উন্নয়শীল অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছে। উন্নয়নে তাদের এই আকর্ষণীয় অগ্রগতি সকলের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফুটবলে আর্জেন্টিনা নাইজেরিয়াকে হারিয়ে আবার স্বর্ণপদক জিতে নিয়েছে।
নির্বাচনের ব্যাপারে পরিবেশ সৃষ্টির ন্যূনতম প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে না বলে আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনী পরিবেশকে আরো বিঘ্নিত করে নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর রেজিস্ট্রিকরণের প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে অনেক দেরিতে।
আমার জামিনের ব্যাপারে চেম্বার জজের পক্ষ থেকে কোনো আদেশ ইস্যু হয়নি। বিচারক ইচ্ছে করলে এটর্নি জেনারেলের আবেদন নাকচ করে দিতে পারতেন। আগামীকাল পূর্ণ বেঞ্চে এর শুনানি হবে। বেক্সিমকো গ্রুপের শিল্পপতি সালমান এফ রহমান শেষ পর্যন্ত জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এটা একটা সুসংবাদ।

বৃহস্পতিবার ২৮ আগস্ট ২০০৮ দিন ৫০৪
আপিল ডিভিশন যদি জামিনের ব্যাপারে হাইকোর্ট ডিভিশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তাহলে আমি জেল থেকে বের হয়ে যেতে পারবো। কিন্তু আমি ঠিক যেমনটি আশঙ্কা করেছিলাম, সরকার আমার বিরুদ্ধে নতুন একটি মামলা দায়ের করেছে। যাতে করে আপিল ডিভিশন বর্তমান জামিন বহাল রাখলেও আমি যেন মুক্তি পেতে পারি। ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪৪৬ ধারার অধীনস্থ এই মামলাটি একটি বানোয়াট মামলা। এতে আইএফআইসি ব্যাংকে রাতের বেলা সংঘটিত এক লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। সরকারের নিচুতা ও হীনম্মন্যতার জুড়ি মেলাই ভার।
তারেক রহমানকে এখন ১৩টি মামলার সবকয়টিতেই জামিন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে শেষেরটি সুপ্রিম কোর্ট থেকে রুখার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং অবশেষে সেই জামিনও চূড়ান্ত হয়েছে। বেগম জিয়ার সঙ্গে সরকারের সমঝোতার এটি একটি বড় লক্ষণ।
আরো মজার ব্যাপার হলো খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন এবং আলী আহসান মুজাহিদকে সাব-জেলে খালেদার সঙ্গে দু’ঘণ্টার জন্য দেখা করতে দেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায় যে, এখন সিরিয়াস ধরনের রাজনৈতিক দেনদরবারের পালা চলছে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ সরকারের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে বলে জেলে অন্তরীণ অনেকেই এখন জামিনে মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন।
শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে বিএনপি’র প্রতিনিধি হিসেবে সংলাপে অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ক্ষেত্রবিশেষে একজন সজ্জন ব্যক্তি হলেও তার নিজস্ব কোনো ব্যক্তিত্ব নেই। সামরিক বাহিনী তাকে যা করতে বলছে তিনি শুধু তাই করেছেন।

(চলবে..)
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status