দেশ বিদেশ
মুক্তি পেলো অন্যের হয়ে জেল খাটা সেই মিনু
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৭ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৮ অপরাহ্ন
হত্যা মামলার আসামি কুলসুমার হয়ে প্রায় তিন বছর ধরে জেলে থাকা সেই মিনু আক্তার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন। কারা ফটকে মিনু আক্তারের সঙ্গে থাকা তার আইনজীবী এডভোকেট গোলাম মওলা মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ৭ই জুন যাবতীয় প্রমাণ সাপেক্ষে আইনজীবী এডভোকেট শিশির মনিরের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহিউদ্দিনের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মুক্তির আদেশ দেন।জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৯ই জুলাই একটি মোবাইল ফোন নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালির রহমতগঞ্জ ৮১ নম্বর গলির সাঈদ ডাক্তারের বাড়িতে কোহিনুর আক্তার নামে এক গার্মেন্ট কর্মী খুন হন। এই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তার সহকর্মী দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার বাসিন্দা কুলসুমা আক্তারকে সে সময় আটক করে পুলিশ। পরে ২০০৯ সালে তিনি জামিন পান। জামিন পেয়েই গা-ঢাকা দেন কুলসুমা। পরে মামলাটিতে ৪র্থ মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০১৭ সালের নভেম্বরে কুলসুমার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। মামলার এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য কুলসুমাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তিনি এমন কাউকে খুঁজতে থাকেন, যিনি তার বদলে সাজা ভোগ করবেন। মর্জিনা নামে জনৈক মহিলার মাধ্যমে মিনু আক্তারকে খুঁজে পান তিনি। পরে বিভিন্ন সুবিধার লোভে কুলসুমা পরিচয়ে জেলে যান মিনু আক্তার। এদিকে চুক্তি অনুযায়ী কুলসুমা বেশকিছু মিনুর সন্তানদের ভরণপোষণ চালালেও কিছুদিন আগে থেকে তা বন্ধ করে দেন। ভাই রুবেলের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে হঠাৎ বেঁকে বসেন কুলসুমা। সিদ্ধান্ত নেন সব ফাঁস করে দেয়ার। সর্বশেষ আইনজীবী এডভোকেট নয়ন মুরাদের মাধ্যমে সহকারী জেল সুপার শফিকুল ইসলামকে জানান। পরে জেল সুপার চলতি মাসের ১৮ তারিখ হাজতের নারী ওয়ার্ড পরিদর্শন করতে গেলে মিনু আক্তার সবকিছু খুলে বলেন। এই বিষয়টি পরে তিনি আদালতকে অবহিত করেন। মিনু আক্তারকে গত সোমবার আদালতে হাজির করা হয়।
এ সময় ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়া এক আদেশে মঙ্গলবার কারাগার থেকে মূল আসামি কুলসুমা আর মিনুর হাজতবাস ও কয়েদির ছবি সংবলিত বালামসহ কারা কর্তৃপক্ষকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। পরে সেখান থেকে নিরীহ মিনু আক্তারের মুক্তির আদেশ আসে।
এ সময় ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়া এক আদেশে মঙ্গলবার কারাগার থেকে মূল আসামি কুলসুমা আর মিনুর হাজতবাস ও কয়েদির ছবি সংবলিত বালামসহ কারা কর্তৃপক্ষকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। পরে সেখান থেকে নিরীহ মিনু আক্তারের মুক্তির আদেশ আসে।