বই থেকে নেয়া

মওদুদ আহমদ যখন রিমান্ডে (৭৭)

‘ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তাচেতনায় মাইনাস-টু থিওরির উদ্ভাবন হয়েছিল’

স্টাফ রিপোর্টার

১৫ জুন ২০২১, মঙ্গলবার, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন

সোমবার ২১ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৬৬
আমি গিয়েছিলাম হাসপাতালে। আমার অন্যান্য সমস্যা ছাড়াও ডান চোখের পাতায় ছোট একটি দানার মতো দেখা দিয়েছে যার ফলে আমার দৃষ্টিশক্তি রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। ডা. জাফর খালেদ আমাকে দেখেছেন। একটা অপারেশন দরকার হবে।
আমার সেল থেকে জেলগেট অনেক দূরে। বিরাট দরজা পার হয়ে অফিসগুলোতে যেতে প্রায় পাঁচ মিনিট লেগে যায়। এরপর হাসপাতালে কিংবা আমাদের জন্য অপেক্ষমাণ লোকজনের দেখা পেতে মূল গেটে যেতে হয় এবং সেখানে বসার জন্য একটি চেয়ার দেওয়া হয়। জেলখানা থেকে বের হয়ে যেতে হলে প্রধান ফটক অতিক্রম করে যেতে হয়। বড় দরজা দু’টির কোনোটিই আমাদের জন্য খোলা হয় না। কেবলমাত্র সার্ভিসের যানবাহনের জন্যই সেগুলো খোলা হয়। দুই পাশে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা ছোট নিচু সাইড গেটগুলোই শুধু খোলা হয় আমাদের আসা-যাওয়ার জন্য।
আমি যখন সেল থেকে জেলগেটের দিকে যাই কিংবা অন্যান্য সেল বা খোলা চত্বর অতিক্রম করে সেলে ফিরে আসি তখন অনেক সাধারণ কয়েদি আমার সাথে হাত মেলাতে ও তাদের দুঃখের কাহিনী বলার জন্য আমার দিকে ছুটে আসে। অভিযোগগুলোর বেশির ভাগই হলো, মিথ্যা মামলায় তাদের জড়িত করা হয়েছে।
নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও তাদের সাজা দেওয়া হয়েছে। তারা বর্ণনা করে পুলিশ বাহিনীর দুর্নীতির কথা এবং কীভাবে টাকার অভাবে তারা ভালো কোনো আইনজীবীর সাহায্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে বা একই কারণে জামিন সংগ্রহ করতে পারছে না। বিচারাধীন কয়েদিদের অবস্থা আরো করুণ। তাদের অনেকে এমনকি চার্জশিট ছাড়াই জেলখানায় রয়েছে ২-৩ বছর বা আরো অনেক বেশি সময়ের জন্য এদের অনেকে জানেই না কেন তাদের জেলে আটক রাখা হয়েছে বা কি তাদের অপরাধ। আমার সাথে কথা বলার সময় বেশির ভাগই আমার পরামর্শ চায়। এসব ছোটখাটো ঘটনা থেকেই আমাদের বিচার প্রক্রিয়ার দুর্বলতাগুলো অত্যন্ত স্পষ্টভাবে আমার চোখের সামনে প্রায় প্রতিদিন ফুটে ওঠে।
আপিল বিভাগ আবার নতুন করে জামিনের ওপর হস্তক্ষেপ করতে শুরু করেছে। তরিকুল ইসলাম, রেদোয়ান আহমেদ ও মুজিবর রহমান সারোয়ার হাইকোর্ট ডিভিশন থেকে জামিন পাওয়ার পরও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রবল চাপে সেগুলোর ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
ড. কামাল হোসেনের একজন জুনিয়র সালেহ উদ্দীনকে নিয়োগ করা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের পদে যিনি তার পদের জন্য একেবারেই উপযুক্ত নন। তার মামলা পরিচালনা করার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না বললেই চলে এবং বারেও তিনি একেবারেই অপরিচিত। জানা যায় যে, একমাত্র ড. কামাল হোসেনের সাথে সম্পর্কের কারণেই তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এটা কি এক ধরনের দুর্নীতি নয়?

মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৬৭
প্রায় গোটা দিনের জন্য বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ ছিল না। জীবন এতে হয়ে পড়ে দুর্বিষহ। তবে এসব ধারায় আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এ সমস্যা সমাধানে আমাদের কিছু করার নেই। জেলখানার জেনারেটর চলে কেবল রাতে। কাজেই কোনো কাজ সারতে মোমবাতিই হলো একমাত্র ভরসা। আমি জানি না ইতিমধ্যে কত মোমবাতি আমি ব্যবহার করেছি।
যৌথবাহিনী জোর করে এবং আইনি কর্তৃত্বের বাইরে সাজাপ্রাপ্ত ও আটককৃত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১৫০০ কোটি টাকা আদায় করেছে। সেনাবাহিনী প্রধান উচ্চস্বরে বলেছেন যে, এ টাকায় তিনি হাসপাতাল বানাবেন। এখন জানা যাচ্ছে যে, টাকা বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াটিই বেআইনি ছিল বলে সে টাকা জমা দেওয়ার জন্য সরকারি ট্রেজারিতে প্রস্তাবিত কোনো খাত ছিল না বিধায় পুরো টাকাই এখন ব্যবসায়ীদের ফেরত দিতে হবে। আমি আশা করবো সেনাবাহিনী প্রধান এখন বুঝতে পারছেন যে, তিনি দেশের অর্থনৈতিক আইন সম্পর্কে কতটা অজ্ঞ এবং গায়ের জোরে যা ইচ্ছা তা করা যায় না।

বুধবার ২৩ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৬৮
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে সকল শ্রেণির জনগণ যখন দিশাহারা, অনেক অভিভাবক এখন খাদ্য কেনার জন্য টাকা জোগাতে গিয়ে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার লোক চাকরি হারিয়েছে এবং দেশের প্রায় ২০ শতাংশ লোক আবার নেমে গেছে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে। ঠিক এ সময় আবার দুর্নীতি দমন কমিশনের হেলিকপ্টার-প্রিয় চেয়ারম্যান রাষ্ট্রের তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে এবং রোদ-মেঘ-বৃষ্টিতে তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য স্কুলের কচি কচি বাচ্চাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে তার ৫০ দিনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচারণার রোড-শো’র সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন।
কেবলমাত্র জনগণের সাথে সংযোগবর্জিত একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন সরকারই এ ধরনের তামাশা বা প্রহসনের আয়োজন করতে পারে। সামরিক নেতারা সবসময়ই জাতির কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে এ ধরনের আড়ম্বরপূর্ণ প্রদর্শনীর আয়োজনে আত্মোৎসাহী হন।

বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৬৯
জীল দেশসমূহে জাতীয়তাবাদী ক্যারিশমেটিক জনপ্রিয় নেতৃত্বকে একক বাদী বহৎ শক্তিসমূহ কখনো সুনজরে দেখেন না। তারা পছন্দ করেন দুর্বল মান সরকার। নিজ নিজ দেশের স্বার্থরক্ষায় উৎসাহী বিশাল ব্যক্তিত্বধারী নেতৃত্ব তাদের অপছন্দ। এ ধরনের নেতৃত্ব সাধারণত অন্যান্য দেশের স্বার্থের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে নিজের দেশের স্বার্থের সাথে সমঝোতা করতে চান না বলে তাদের মধ্যে স্বার্থের সংঘাত অনিবার্য হয়ে ওঠে। এসব নেতৃত্বকে গুপ্তহত্যার শিকারে পরিণত করে খুন কিংবা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য থাকে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোকে ক্রমশ আরো দুর্বলতর করে তোলা। সুকার্নো, বেন বেল্লা, মহাত্মা গান্ধী, বন্দরনায়েক, শেখ মুজিবুর রহমান, ইন্দিরা গান্ধী, জিয়াউর রহমান, জুলফিকার আলী ভুট্টো ও বেনজীর ভুট্টোর ক্ষেত্রে গত ৫০ বছরে তাই ঘটেছে।

শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৭০
বাংলাদেশে এখন আমাদের রয়েছে দু’জন নেত্রী- দু’জনেই জনপ্রিয় এবং ক্যারিশমেটিক। শেখ হাসিনা নতজানু হয়ে জাতীয় স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে আত্মসমর্পণ করলে সাময়িকভাবে তিনি হয়তো টিকে যাবেন, কিন্তু ১৯৭২-৭৫ সালে তার পিতা নানা ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য যেমনটি করেছিলেন সেই ভূমিকা পালন করলে তিনিও হয়তো একদিন বিপদের সম্মুখীন হবেন। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তাচেতনার সমর্থনে একই ধারায় একদিন মাইনাস-টু থিওরির উদ্ভাবন করা হয়েছিল।

শনিবার ২৬ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৭১
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ কখনো এ ধরনের সংকটের সম্মুখীন হয়নি। এর একটি কারণ হলো ভূ-রাজনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন আরো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই বৃহৎ উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি, ভারত ও চীন, যখন ক্রমশ আরো শক্তি সঞ্চয় করছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এবং ভারত উচ্চতর ভূমিকা নিয়ে বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রীয় মঞ্চে আরোহণের প্রতিযোগিতায় সামিল হয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূর থেকে এই দুই শক্তির উদ্ভাবন ও তাদের পরাকৌশল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আর অন্যদিকে যেখানে পূর্বদিকে ভারতের ৭টি বিদ্রোহী রাজ্য দ্বারা পরিবেষ্টিত অবস্থায় অবস্থান করছে। সেখানে সকলের কাছেই বাংলাদেশের অবস্থান অনেকটা বিবেচনার বিষয় হয়ে। দাঁড়িয়েছে।

রবিবার ২৭ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৭২
ড. তৌফিক তিন সপ্তাহ আগে সুপ্রীম কোর্টের কাছ থেকে জামিন পাওয়ার পরেও জেলগেটে আবার গ্রেফতার হওয়ায় এবার পুনঃগ্রেফতারের ভয়ে এতটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে যে, বাইরে গিয়ে মুক্তির আস্বাদ গ্রহণ করার চাইতে এখন বরঞ্চ জেলখানায় দিন কাটানোকেই শ্রেয় বলে মনে করছে। আমি কখনো কাউকে এমন অবস্থায় দেখিনি যে, জামিন পাওয়ার পরেও স্বেচ্ছাকৃতভাবে জেলে থাকাটাকে শ্রেয়তর বলে মনে করে। ইচ্ছা করেই সে আদালত থেকে পাওয়া জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে গড়িমসি করছে যাতে করে বেশিদিন সে কারাগারেই থাকতে পারে। এ থেকেই বোঝা যায় ড. তৌফিকের মতো মানুষের মনে বর্তমান সরকার কী ধরনের একটা আতঙ্ক ও ভীতিবোধ সঞ্চারিত করেছে যিনি ছিলেন সরকারেরই একজন সচিব এবং অত্যন্ত মেধাবী একজন অফিসার।
আমার চোখ ও দাঁতের চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলাম হাসপাতালে। আমার ভাই নান্নুর কন্যা নীলা, একজন ব্যারিস্টার, অনেকদিন পর বাংলাদেশ সফরে এসেছে, অন্যদের সাথে জেলখানায় এসেছিল আমাকে দেখতে।

সোমবার ২৮ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৭৩
জামিন পাওয়ার পর দু’বার জেলগেটে পুনঃগ্রেফতার শেষে আলাল তৃতীয়বারের মতো জামিন পেয়ে এখন মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছে।
তেরটি মামলায়, মূলত দুর্নীতিবিষয়ক মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা ২০শে জুলাই স্টেট ডিপার্টমেন্টে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট রিচার্ড বাউচারের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন যা এক চরম হাস্যকর ব্যাপার। যারা একসময় মাইনাস-টু থিওরিতে সমর্থন দিয়ে তাকে রাজনীতি থেকে নির্মূল করতে চেয়েছেন। তারাই এখন তার সাথে বসছেন বৈঠকে। এ থেকে কেবল এটাই প্রমাণিত হয় যে, রাজনীতিবিদদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানটা আসলে ছিল একটা প্রহসন মাত্র।

মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৭৪
খালেদা জিয়ার সাথে দেনদরবার এখন একটিমাত্র প্রশ্নে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং তা হলো- তারেক রহমানের মুক্তি। বেগম জিয়া ভালো করেই জানেন যে, তারেক রহমান যদি এ মুহূর্তে মুক্তি না পান তাহলে তাকে আর কখনো দেশ ছেড়ে যেতে দেওয়া হবে না এবং বিচার করে তাকে তার বিরুদ্ধে আনীত ফৌজদারি মামলাগুলোর কোনো না কোনোটাতে সাজা দিয়ে দেওয়া হবে ।
গতকাল হাইকোর্ট ডিভিশন শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা এবং ১৫ই আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে একটি রায় দিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে কোনো আপিল না করা হলে এ সিদ্ধান্ত যে কোনো সরকার অনুসরণ করতে বাধ্য থাকবেন। অবশ্য হাইকোর্ট একটি ডিভিশনের রায়ের চাইতে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এই মহাবিতর্কিত রাজনৈতিক ইস্যুটি সমাধান করা বাঞ্ছনীয় ছিল।

বুধবার ৩০ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৭৫
খাবার জন্য জেলখানায় আমাদের যে শাকসবজি সরবরাহ করা হয় এমনিতেই তা বাজারের সবচেয়ে সস্তা দরেরটা দেওয়া হয়। আজ হঠাৎ করেই সরবরাহকৃত শাকসবজির পরিমাণ নামিয়ে আনা হয়েছে অর্ধেকে- যার কারণ আমার জানা নেই। এ নিয়ে প্রতিবাদ করারও কোনো সুযােগ নেই। জেল সুপারের কাছে এ নিয়ে আমরা একটি নোট পাঠিয়েছি, কিন্তু তার কোনো জবাব আসেনি। চামড়া, পাখনাপালক ও নাড়িভুঁড়িসহ প্রতিদিন ২৫০ গ্রাম মুরগির যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তা সবকিছু বাদ দিয়ে ঠেকে ১৫০ গ্রামে। এই ছোট টুকরাটি অনেক সময় হয়ে পড়ে খাওয়ার অনুপযোগী, কারণ পর্যাপ্ত মশলার অভাবে রান্না খারাপ হয়। পাশে উন্মুক্ত নর্দমা থেকে আসা দুর্গন্ধ, রাত্রে জলমান ইলেকট্রিক বাতি, পর্দাবিহীন দরজা ও জানালা এবং দিনেরবেলা প্রায়ই পানি ও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আমাদের মাসের পর মাস কাটে নির্বাক ক্রোধ ও পরাভূত লজ্জার মধ্য দিয়ে।
ওজন আমার কেবল কমছেই। এর আগে জেল হাসপাতালের স্টাফরা প্রতিটি বন্দির প্রতিসপ্তাহের ওজন লিপিবদ্ধ রাখতেন। কেউ ওজন হারালে তার প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতো ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে বিষয়টি এনে তার জন্য ব্যবস্থা করা হতো বাড়তি খাদ্যের। কিন্তু আজকাল এসব ওজন কমা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। সাধারণ কয়েদিদের কথা তো এক্ষেত্রে বিচার্যই নয়।

বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০০৮ দিন ৪৭৬
রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে সরকারের এ প্রতিহিংসা সকল মানের নিচে। এ যেন এক অতলস্পর্শী হীনমন্যতা। কোনোরকম বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে ওয়াসা থেকে একটি চিঠি দিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে যে, আমাদের গুলশানের বাসায় ১৯৮২ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে ২১ বৎসরে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন বাবদ ৯৯ হাজার টাকা পরিশোধ না করায় সংযোগ কেটে দেওয়া হবে। অথচ এ সময়ে ১৯৮৫-৯০ ও ২০০১-০৩ সালে ৭ বছর সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত থাকার ফলে এসব বিল পরিশোধ থেকে আমার অব্যাহতি রয়েছে। উপরন্তু আমার রেকর্ডকৃত হিসাব অনুসারে আমার কোনো বিলই অপরিশোধিত ছিল না। অন্যদিকে এই নোটিশটি আমাদের হাতে এসেছে পরিশোধ করার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর লাইন সংযোগ কেটে দেওয়ার তারিখসীমার তিন সপ্তাহ পরে। এখন আমাদের আশঙ্ক হলো এই যে, জরুরি আইনের আওতাধীন যে কোনোদিন আমার বাড়িতে এসব সংযোগ কেটে দেওয়া হতে পারে।

(চলবে..)
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status