শেষের পাতা

ঢাবি শিক্ষক নীলা তাপসীর বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

১৪ জুন ২০২১, সোমবার, ৯:৩৫ অপরাহ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সংগীতশিল্পী মহসিনা আক্তার খানমের (লীনা তাপসী খান) পিএইচডি থিসিসে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ আনেন সংগীতশিল্পী ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) সাবেক মহাপরিচালক ইফফাত আরা নার্গিস। সংবাদ সম্মেলনে ইফফাত আরা নার্গিস বলেন, লীনা তাপসী খানের পিএইচডি থিসিসের ওপর ভিত্তি করে রচিত ‘নজরুল-সংগীতে রাগের ব্যবহার’ গ্রন্থে ৮০ পৃষ্ঠার স্বরলিপি স্ক্যান করে ঢোকানো হয়েছে মূল পাঠ হিসেবে, যা অনৈতিক। এই ৮০ পৃষ্ঠার স্বরলিপির স্থান হতে পারতো গ্রন্থের পরিশিষ্টে। মূল পাঠে এই স্বরলিপি কোনোভাবেই স্থান পাওয়ার কথা নয়। এটিও এক ধরনের চৌর্যবৃত্তি। দেখা যাচ্ছে যে, ২৭৭ পৃষ্ঠার বইয়ের মধ্যে ৮০ পৃষ্ঠার স্বরলিপিসহ ১৬৯ পৃষ্ঠা লীনা তাপসী খানের রচনা নয়। এগুলো অন্যের গ্রন্থ থেকে হুবহু গৃহীত, লেখকের নয়। বাকি ১০১ পৃষ্ঠা লীনা তাপসী খানের লেখা বলে দাবি করা হয়েছে। এরমধ্যে ইদ্রিস আলীর গ্রন্থ থেকেও নেয়া হয়েছে। যথাযথ অনুসন্ধান হলে প্রমাণিত হতে পারে যে ওই পৃষ্ঠাগুলোতে ব্যবহৃত তথ্যও লেখকের নয়। এমন অবস্থায় বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি। ইফফাত আরা নার্গিস বলেন, সংগীতের প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে আমি লীনা তাপসী খানের ‘নজরুল-সংগীতে রাগের ব্যবহার’ নামের গ্রন্থটি সংগ্রহ করি। কিন্তু গ্রন্থটি পড়তে গিয়ে আমার এর আগে পড়া তিন-চারটি গ্রন্থের সঙ্গে বেশকিছু অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাই, যা পরিষ্কার চৌর্যবৃত্তি। এই চুরির ওপর ভিত্তি করে যদি তার পিএইচডি থিসিস রচিত হয়ে থাকে, তবে এই ডিগ্রি তদন্ত করে বাতিল করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আর যদি এই গ্রন্থের সঙ্গে পিএইচডির কোনো সম্পর্ক না থাকে, তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক হয়ে অন্যের গ্রন্থ থেকে যথাযথ তথ্যসংকেত উল্লেখ না করে নিজের গ্রন্থে ব্যবহার করে যে চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় তিনি নিয়েছেন, তার যথাযোগ্য বিচার হওয়া উচিত বলে আমি দাবি করি। এই থিসিসের কারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন, এই গ্রন্থের কারণে তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন। এই গ্রন্থের জন্য তিনি নজরুল পদকও পেয়েছেন। অর্থাৎ এই চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে তিনি আর্থিক সুবিধা, পেশাগত সুবিধা ও সামাজিক মর্যাদা গ্রহণ করেছেন। যা দুর্নীতি হিসেবেও গণ্য। সংবাদ সম্মেলন ডাকার কারণ হিসেবে ইফফাত আর নার্গিস বলেন, এ বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর অভিযোগ জানিয়ে তদন্তের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাতে ফল হয়নি। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছাড়াও দু’জন প্রো-ভিসি ও সিন্ডিকেটের সব সদস্যের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু তদন্তের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বরং লীনা একজন জাতীয় অধ্যাপকের দোহাই দিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, কেউ তার কিছুই করতে পারবেন না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন বিষয়টি তদন্ত করছে না, সেটি তার কাছে রহস্য লাগছে। এই সংবাদ সম্মেলন থেকে অভিযোগ তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী লীনা তাপসী খানের পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল করার দাবিসহ ৫টি দাবি জানান ইফফাত আর নার্গিস।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status