অনলাইন

ফের উত্তপ্ত কোম্পানীগঞ্জ

বাদলের ওপর হামলা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬, ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে

১২ জুন ২০২১, শনিবার, ২:৫৩ অপরাহ্ন

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কোম্পানীগঞ্জ। হামলার ঘটনায় বসুরহাট মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে দায়ী করে তাকে ও তার অনুসারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে বাদলের অনুসারীরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে বাদলের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে ৬ নেতাকর্মী আহত হন। ওদিকে কাদের মির্জা ও তার অনুসারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কোম্পানীগঞ্জে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও সেতুমন্ত্রীর ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু আগামীকাল থেকে এই ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা করেন। লাইভে তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন,  কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সেতুমন্ত্রীর ভাগিনা আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম রাহাত। এ সময় লাইভে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ডুয়েল রোল প্লে করছেন বলে অভিযোগ করেন মঞ্জু। তিনি কাদের মির্জা ও তার বাহিনীর গ্রেপ্তার দাবি করেন। উল্লেখ্য, শনিবার সকাল ৯টার দিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে আওয়ামী লীগ নেতা আলালসহ ঢাকার উদ্দেশ্যে বসুরহাট হয়ে রওনা করেন। যাত্রা পথে বসুরহাট বাজারের প্রেসক্লাব কোম্পানীগঞ্জের একটু সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে কাদের মির্জা তার ৪০-৫০ জন অনুসারী নিয়ে বাজার পরিদর্শন করে আসার পথে বাদলের গাড়ির মুখোমুখি হন। এ সময় কাদের মির্জার তার অনুসারী কেচ্ছা রাসেল, ডাকাত মাসুদ, খান, শিহাব, সজল, আরিফ, ওয়াসিমসহ ৪০-৫০ জন অনুসারী মিজানুর রহমান বাদলের গাড়ির গতিরোধ করে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মঞ্জু অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা প্রথমে তার গাড়ির পিছনে গুলি করে। এক পর্যায়ে গাড়ির গতিরোধ করে তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তার হাত-মাথা পাটিয়ে দেয়, পা ও বুকের হাড় ভেঙ্গে দেয় এবং কানে গুরুত্বর জখম করে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. জোবায়ের জানান, হামলায় বাদল বুক, হাত, পা, মাথায় গুরুত্বর আঘাত পেয়েছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে হামলার পরপরই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে তার কর্মী সমর্থক ও অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ ঘটনায় কাদের মির্জার সম্পৃক্ততার অভিযোগে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে কাদের মির্জার বিচার দাবি করে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এ সময় চরকাঁকড়া টেকের বাজারে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীদের সরাতে পুলিশ গুলি চালালে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ (৫৫) ও তার ছেলে তরিকুল ইসলাম চয়ন (১৮)। অন্যদের নাম এখনও জানা যায়নি।
গুরুতর আহত চয়নকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলির চিহ্ন রয়েছে।  আহত সবাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাদলের অনুসারী।
গুলিবিদ্ধ সবুজ জানান, তারা কাদের মির্জার গ্রেফতার দাবিতে আন্দোলন করার সময় পুলিশ বেপরোয়া গুলি চালায়। এতে তারা পিতা-পুত্রসহ অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ৩-৪ জন পুলিশ আহত হয়। পরে পুলিশ ২০-২৫ রাউন্ড শটগানের গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status