কলকাতা কথকতা
কলকাতা কথকতা
মুকুল রায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনে ঝড় উঠল কলকাতা থেকে দিল্লিতে
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা
১২ জুন ২০২১, শনিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের ৩ বছর ৯ মাস পরে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের ঘটনায় ঝড় উঠেছে বঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে শুরু করে ভারতের রাজধানী দিল্লিতেও। কলকাতায় মুকুল রায় কেন্দ্রের দেয়া জেড ক্যাটিগরির নিরাপত্তা ছেড়ে দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছেন। শুক্রবার রাত থেকেই তার সল্ট লেকের বাড়ির সামনে এবং কাঁচরাপাড়া হালিশহরের বাড়ির সামনে রাজ্য পুলিশের এসকর্ট ভ্যান এবং সশস্ত্র পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে গেছে। বদলে গেছে মুকুল রায় এর টুইটার হ্যান্ডলেও। সেখানে মোদি-শাহের ছবির জায়গায় শোভা পাচ্ছে মুকুল রায়ের সঙ্গে মমতা, অভিষেকের ছবি। অনেকেই মনে করছেন মুকুল রায় নিজেতো তৃণমূলে ফিরলেনই, নিশ্চিত করলেন পুত্র শুভরাংশু রায়ের ভবিষ্যৎও। মুকুল পুত্র যুব তৃণমূলে বড় দায়িত্ব পেতে পারেন, মুকুল কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ ছাড়লে সেখানে দাঁড়াতে পারেন মুকুল পুত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারপর তাকে প্রতিমন্ত্রী করতে পারেন। কিন্তু সবটাই নির্ভর করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর। যেমন নির্ভর করবে রাজ্য সরকারের মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ৪৪ টি মামলার ভবিষ্যৎ। এর মধ্যে আছে নদিয়ার বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের হত্যার মামলা এবং রেলের চাকরি দেয়ার নাম করে অর্থ প্রতারণার মামলাটিও। মুকুল রায় সারদা-নারোদা মামলাতেও জড়িয়ে আছেন। সিবিআই কি এবার এই মামলা গুলিতেও সক্রিয় হবে? তাতে সমস্যা একটাই, প্রতিহিংসার তত্ত্ব আরও প্রতিষ্ঠিত হবে এবং মুকুল রায়কে জড়ালে জড়াতে হবে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও, বিজেপি এখনই যেটা চাইছে না। রাজ্য সরকার মুকুলের ওপর থেকে সব মামলা প্রত্যাহার করে নিতে পারে। ৪৪ টির মধ্যে ২০ টি মামলা এখনই প্রায় খারিজ হওয়ার পথে। মুকুল রায়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সর্বভারতীয় স্তরে কাজে লাগাবেন তা অনুমান করে শুক্রবার রাতেই দিল্লিতে জরুরি বৈঠক করেছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জগৎপতি নাড্ডা। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করে বাংলা থেকে আরো বেশি মন্ত্রী করে আনার প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে, মোদি গুরুত্ব দেন বাংলায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে। মুকুল রায় প্রথম যে কাজটিতে নামবেন তা হচ্ছে বিধানসভায় দল ভাঙাতে। তৃণমূলের লক্ষ্যই হচ্ছে বিধানসভায় বিজেপিকে সাতাশ আঠাশে নামিয়ে আনা। মুকুল-অভিষেক টর্নেডো থামাতে শুভেন্দু অধিকারীকে বঙ্গ বিজেপির প্রধান করার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা ওঠে। মুকুল রায়ের তৃণমূলের যোগদান তাই শুধু ঝড় নয়, হয়তো সুনামি।