বাংলারজমিন

ফোরলেনে অস্তিত্ব হারাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাল

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

১২ জুন ২০২১, শনিবার, ৮:১১ অপরাহ্ন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়ক সম্প্রসারণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে খাল। এতে সেচ সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ফোরলেন সড়ক করার কাজ শুরুর পর দেশের ইউনিক সেচ সুবিধার সবুজ প্রকল্প সংকটে পড়ে। এতে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদী থাকার উপক্রম হয়। এই অংশটি ছাড়াও সড়ক সম্প্রসারণের কারণে খাটিহাতা বিশ্বরোড থেকে আখাউড়া পর্যন্ত বর্তমান সড়কের পাশে থাকা খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে এরইমধ্যে অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের বিরাশার এলাকায় ৪০টি দোকানে পানি ঢুকেছে। তলিয়ে গেছে লালপুর রাস্তার কিছু অংশ। স্থানীয় লোকজন জানান, খাল ভরাটের ফলে জলাবদ্ধতার মুখে পড়ছে বিভিন্ন এলাকা।
স্থানীয় সড়ক বিভাগ জানায়, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার সড়ক ফোরলেন করা হচ্ছে। প্রায় ৩৫শ’ কোটি টাকা মূল্যের এই কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন্স। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যাদেশ পাওয়ার পর ওই বছরের জুলাই মাস থেকে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৩টি প্যাকেজে বাস্তবায়নাধীন এই কাজের মধ্যে প্রথম প্যাকেজে আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার অংশের কাজ শুরু হলে অস্তিত্ব হারাতে বসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উত্তর পাশে থাকা বরোপিট ক্যানেলটি। যা আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন প্রকল্প বা সবুজ প্রকল্পের প্রধান সেচ খাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে বালি ভরাটের মাধ্যমে শুরু হয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। আর এতে এলাকার ৩৪ হাজার কৃষক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। সেচের মৌসুম শুরুর আগে পুরোদমে খাল ভরাট চলতে থাকায় অনিশ্চয়তায় পড়ে ফসল আবাদ। তবে সেচ প্রকল্পটি সচল রাখতে কাজ শুরুর আরও কয়েক মাস আগেই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি সরজমিন তদন্ত করে কিছু সুপারিশ তুলে ধরে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা করে বিষয়টি সুরাহার ব্যাপারেও মত দেয় এই কমিটি। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা উইং) মো. জাকির হোসেনের নেতৃত্বে করা ৯ সদস্যের কমিটির সুপারিশে সওজের বর্ণিত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক অংশের নকশা পরিবর্তন করে প্রস্তাবিত ঢাকা-সিলেট জাতীয় মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের (এন-২) নকশার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সড়ক সম্প্রসারণ করতে বলা হয়। তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসার আগেই কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, সেচ ক্যানেলের এই কাজের জন্য ৫৮০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দিয়েছেন তারা ১৫ দিন আগে। বিশেষ গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্প দ্রুত অনুমোদন হলে আগামী মৌসুমের আগে এই কাজ হতে পারে। এদিকে সড়ক সম্প্রসারণ কাজের জন্য বিশ্বরোড থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর পর্যন্ত কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দু’পাশের খালও ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এতে সড়কবর্তী নন্দনপুর, সুহিলপুর, ঘাটুরাসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
খাল ভরাটের বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ ভৌমিক বলেন, এই খালের জায়গা তাদেরই। ১৯৬১-৬২ সালে অধিগ্রহণ করা। প্রাকৃতিক কোনো খাল ভরাট করা হচ্ছে না।
তবে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, সবুজ প্রকল্পের খালটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পানি প্রবাহও ঠিক থাকবে, সড়কও থাকবে। আর অন্য অংশের খাল ভরাটের বিষয়েও প্রকল্পের যে টিম রয়েছে তারা স্টাডি করছেন। আমরা এ বিষয়ে তাদেরকে বলেছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status