বাংলারজমিন
নোয়াখালীতে ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে
১১ জুন ২০২১, শুক্রবার, ৭:২৪ অপরাহ্ন
নোয়াখালীর হাতিয়ায় এক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পিচ্চি আজাদের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নে রবীন্দ্র চন্দ্র দাস (৪৮) নামের এক ইউপি মেম্বার ও আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করেছে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের প্রতিপক্ষরা। পূর্ব বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের। গত বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রবীন্দ্র চন্দ্র দাস চরঈশ্বর ৩নং ওয়ার্ডের সতীষ চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আল আমিনসহ মোটরসাইকেল যোগে চরঈশ্বর থেকে ওছখালী নিজের বাসায় আসছিলেন রবীন্দ্র চন্দ্র দাস। মোটরসাইকেলটি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ির সামনে আসলে একদল দুর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে গতিরোধ করে। এ সময় মোটরসাইকেলের পিছনে থাকা আল আমিন পিছন দিকে দৌড়ে পালিয়ে গেলেও হামলাকারীদের হাতে আটকা পড়ে রবীন্দ্র। হামলাকারীরা প্রথমে রবীন্দ্রকে গুলি ও পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাতের কব্জি ও রগ কেটে ফেলে যায়। পরে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রবীন্দ্রের লাশ উদ্ধার করে। রবীন্দ্রের সঙ্গে থাকা শ্রমিক লীগ নেতা আল আমিন বলেন, আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে আসার পথে আজাদ চেয়ারম্যানের ভাতিজা সোহেল, ছেলে অমি, রহিম ডাকাত ও নাজিমসহ কয়েকজন আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এ সময় মোটরসাইকেল রেখে পালানো চেষ্টা করলে তারা রবীন্দ্রকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতের পিতা সতীষ চন্দ্র দাস বলেন, রাতে বাংলা বাজার থেকে ওছখালি যাচ্ছিল রবীন্দ্র। পরে তার মোবাইল বন্ধ পেয়ে ওছখালি বাসায় কল দিয়ে জানতে পারি সে বাসায় যায়নি। এর কিছুক্ষণ পর একজন মোবাইলে জানায় রবীন্দ্রকে হত্যা করা হয়েছে। চরঈশ্বর ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাশেদ উদ্দিন জানান, আব্দুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে রবীন্দ্র মেম্বারসহ আমাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ১১ জন মেম্বার একসঙ্গে লিখিতভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয়। এ নিয়ে আজাদ চেয়ারম্যান আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। এর জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে আব্দুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যান বলেন, আমি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছি। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমি, আমার পরিবারের ও দলের কোনো লোকজন জড়িত নেই। একটি চক্র আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের মানবজমিনকে জানান, রাতে রবীন্দ্র চন্দ্র দাস ও আল আমিনসহ আরও ২ জন ৩টি মোটরসাইকেল নিয়ে ওছখালি আসার পথে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।