বিশ্বজমিন

ইরান ইস্যুতে অবস্থান বদলেছে সৌদি ও আমিরাত

মানবজমিন ডেস্ক

১০ জুন ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৩:০৬ অপরাহ্ন

সব সময় ইরানের ঘোর বিরোধী সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। কিন্তু পারমাণবিক চুক্তির ইস্যুতে এখন তারা আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তারা ইরানের সঙ্গে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা ইস্যুকে আমলে নিয়ে ভবিষ্যত আলোচনার জন্য তদবির চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব শক্তিগুলো ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে ইরানের সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। এ জন্য তারা ইরানের সঙ্গে ভিয়েনায় সমঝোতা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে সম্পাদিত চুক্তিতে তেহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে রাজি হয়েছিল। বিনিময়ে তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন প্রশাসন এই চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করতে চায়। এর আগে চুক্তিটি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে ওয়াশিংটনের উপসাগরীয় মিত্ররা সবসময় বলে আসছে যে, এই চুক্তিটি যথার্থ ছিল না। কারণ এতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র রফতানি এবং আঞ্চলিক যোদ্ধা গোষ্ঠীগুলোকে ইরানের সমর্থন দেয়াসহ অন্যান্য ইস্যুগুলো অগ্রাহ্য করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সোমবার স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই চুক্তিতে ফেরার বিষয়টি ওয়াশিংটনের অগ্রাধিকারে রয়েছে। এরপর তা অন্য সমস্যা সমাধানের জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যবহার করা হবে।

তবে ইয়েমেনের ব্যয়বহুল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে সৌদি আরব। ফলে তেল খনির অবকাঠামোতে বার বার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মুখোমুখি হয় সৌদি আরব। এর জন্য ইরান ও তার মিত্রদের দায়ী করা হয়। এসব ইস্যুকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে অতীতের সংলাপে সক্রিয় ছিলেন গাল্ফ রিসার্চ সেন্টারের আবদুল আজিজ সাগের। তিনি বলেছেন, উপসাগরীয় দেশগুলি বলেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তিতে ফিরে যেতে পারে। এটি তাদের সিদ্ধান্ত। আমরা একে পরিবর্তন করতে পারি না। তবে আঞ্চলিক সুরক্ষার উদ্বেগকে বিবেচনায় নেয়া আমাদের সবার প্রয়োজন।  

ইরান শুধু ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদেরই সমর্থন করে এমন না, তাদের হাতে প্রচুর কার্ড রয়েছে। সৌদি আরব ছয় বছরের যুদ্ধেও এই হুতিদের পরাজিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। যা ওয়াশিংটনকে ধৈর্যহারা করে দিয়েছিল। সাগের বলেন, ইরানের জন্য একটি সস্তা জায়গা হলো ইয়েমেন। অন্যদিকে সৌদি আরবের জন্য তা ব্যয়বহুল। এটি ইরানকে একটি শক্তিশালী অবস্থান এনে দিয়েছে।  তৃতীয় আঞ্চলিক একটি সূত্র জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইতিমধ্যে ইরানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে। ২০১২ সালে তার উপকূলে ট্যাংকারে আক্রমণ করা হয়েছিল। ওই হামলার পরে তাদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। সেই উত্তেজনা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্য এখন অগ্রাধিকার হল তাদের অর্থনীতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। তবে সুরক্ষা নিশ্চয়তা সেই পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।

ওয়াশিংটনে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ আল ওতাইবা এপ্রিলে বলেছিলেন যে, পারমাণবিক চুক্তি ইরানে মধ্যপন্থিদের ক্ষমতায়নের একটি হাতিয়ার হয়ে উঠবে ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status