প্রথম পাতা
ফিলিস্তিনে রক্তপাত বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা চায় ঢাকা
স্টাফ রিপোর্টার
১৮ মে ২০২১, মঙ্গলবার, ৯:৩১ অপরাহ্ন
ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসন ও চলমান রক্তাক্ত সহিংসতা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার ফিলিস্তিনি-ইসরাইলি সংঘাত নিয়ে বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগের কথা রাষ্ট্রদূত মিলারকে জানান। পাশাপাশি সংঘাত থামাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন শাহরিয়ার আলম। সমপ্রতি ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) নির্বাহী পরিষদের জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন দ্রুত সময়ে ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী দুই দেশের সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। এসময় আন্তর্জাতিক দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাড়াও রোহিঙ্গা ইস্যু, বিশেষ করে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি), প্রত্যাবাসন, করোনাভাইরাস ও টিকা নিয়ে আলোচনা হয়। রাষ্ট্রদূত মিলার প্রতিমন্ত্রীকে জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য হতে যাওয়া এ বছরের জেআরপিতেও সর্বোচ্চ অর্থায়নে ভূমিকা রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে মিলার বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে অব্যাহত সমর্থন দেবে যুক্তরাষ্ট্র। ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থনের ওপর জোর দেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, প্রত্যাবাসনই বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশের প্রয়োজন মেটাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে জরুরি ভিত্তিতে টিকা পাওয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কাজ করছে। এ সময় রাষ্ট্রদূত ভ্যাকসিন বিতরণে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি আঞ্চলিক পদ্ধতি থাকা জরুরি উল্লেখ করে বলেন, তার দেশ বাংলাদেশি ওষুধ সংস্থাগুলোর সঙ্গে মার্কিন ভ্যাকসিন তৈরির সম্ভাবনাগুলো খতিয়ে দেখছে। বাংলাদেশি যেসব শিক্ষার্থী ভিসা জটিলতায় যুক্তরাষ্ট্র যেতে পারছেন না, তাদের ভিসা ইস্যুর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। এতে করে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান তিনি। জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, চলমান লকডাউনের কারণে সমস্যা হচ্ছে। তবে সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কাজ করছে। সমপ্রতি বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে হোয়াইট হাউস। এ প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম রাষ্ট্রদূতকে জানান, বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্যাদি যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়নি, কারণ সরকার দেশে সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি ও বৈষম্য নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। প্রতিমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বর্তমান সরকার কঠিন পরিস্থিতিতে ২০১১ সালে ভেস্টেড প্রপার্টি রিটার্ন (সংশোধন) আইন চালু করে সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিকতার জোর দিয়েছিল। তিনি রাষ্ট্রদূত মিলারকে আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং চুক্তিটি ধীরে ধীরে কার্যকর হচ্ছে।