বাংলারজমিন
পাকুটিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র
ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত লক্ষাধিক মানুষ
এবিএম আতিকুর রহমান, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) থেকে
১৮ মে ২০২১, মঙ্গলবার, ৮:২৬ অপরাহ্ন
পশ্চিমে গোপালপুর পৌরসভার বৃহৎ অংশ, পূর্বে সংগ্রামপুর, উত্তরে আলোকদিয়া, দক্ষিণে ২নং ঘাটাইল এবং মাঝখানে ১নং দেউলাবাড়ি ইউনিয়ন। এই একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সরকার ১৯৯৬ সালে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ১নং দেউলাবাড়ি ইউনিয়নে পাকুটিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র (সাব-সেন্টার) নামে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলে। বছর দেড়েক আগেও সদর হাসপাতালের মতোই রোগী হতো এখানে। কিন্তু বর্তমানে ফার্মাসিস্ট আব্দুল খালেকের অবসর আর ডাক্তার আব্দুল হাকিমের মৃত্যুতে চিকিৎসাসেবা একেবারেই ভেঙে পড়েছে ওই সাব-সেন্টারটিতে। সাব-সেন্টারটি এখন ময়লার ভাগাড়, মাছের বাজার, গাড়ির গ্যারেজ আর নেশাখোরদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে শামীম আল-মামুন নামে একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তবে তার বিরুদ্ধে সময়মতো অফিসে না আসা, রোগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, ঠিকমতো ওষুধ না দেয়া, কাটাছেঁড়া সেলাই ও ড্রেসিং করতে বাড়তি অর্থ আদায়, ভুল চিকিৎসা প্রদান, অন্য স্টাফদের সঙ্গে খারাপ আচরণ, সরকারি সম্পদ হাসপাতালের বেশ কয়েকটি গাছ কর্তনসহ ডজন খানেক অভিযোগ রয়েছে। মাস তিনেক আগে জাকির হোসেন জগু মৃধা নামে এক দিনমজুরকে ভুল চিকিৎসা করায় পায়ের আঙ্গুলসহ একাংশ কেটে ফেলতে হয়েছিল। পরবর্তীতে কাটা পায়ে ইনফেকশন নিয়ে অল্প কিছুদিন হাসপাতালের বেড়ে শুয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। শুধু তাই নয়, তৃতীয় শ্রেণির এই কর্মচারী কখনো নিজেকে সরকারদলীয় ক্যাডার আবার কখনো স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে এলাকার মানুষদের অসম্মান করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সরজমিন গিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা বেশ কয়েকজন রোগী, স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের হাতে ব্যবস্থাপত্র দেখে এ সব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, ডাক্তার শামীম এখানে আসার পর আমাদের কপাল পুড়েছে। মাসে একবার ওষুধ নিতে এলেও খালি হাতে ফেরত যেতে হয়। ডাক্তার স্থানীয় হওয়ায় মুখ দেখে ওষুধ দেন। গরিব মানুষের হক তিনি ধনী মানুষকে দিয়ে দেন। এটা দেখার কেউ নেই। আমরা একজন ভালো ডাক্তার এখানে চাই। এ বিষয়ে দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমার ইউনিয়নে অনেক বড় বড় ডাক্তার থাকলেও এলাকায় কেউ রোগী দেখেন না। তারা বাইরে চেম্বার করেন। বর্তমানে শামীম আল-মামুন নামে যে ডাক্তার আছেন তার পক্ষে এতো বিশাল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া স্থানীয় হওয়ায় অনেকের সঙ্গে প্রায়ই খারাপ আচরণ করেন। তার অভিজ্ঞতাও কম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আমার কাছে আসেন। তাকে বদলি করে একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ডাক্তার ও মেডিকেল অফিসার চেয়ে আমি ছাড়পত্রও দিয়েছিলাম। অজ্ঞাত কারণে আজও সেটা বাস্তবায়ন হয়নি।