বাংলারজমিন

কমিশন ছাড়াই লিচু বিক্রি করবেন নাটোরের চাষিরা

ইসাহাক আলী, নাটোর থেকে

১৮ মে ২০২১, মঙ্গলবার, ৮:২৫ অপরাহ্ন

পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে অবশেষে ইজারার আওতায় আনা হলো নাটোরের গুরুদাসপুরের নাজিরপুর এলাকার  বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত। এতে করে পূর্বের শতকরা ৮ টাকা কমিশনের জায়গায় কোনো ধরনের খাজনাই দিতে হবে না কৃষকদের। অপরদিকে ক্রেতাদের শতকরা ৪ টাকা কমিশনের স্থলে ক্যারেট প্রতি দিতে হবে মাত্র ৫ টাকা ও বড় ঝুড়ি ২০ টাকা ও ছোট ঝুড়ি ১০ টাকা হারে। শতকরা হিসাবে যা ১ টাকারও কম। এ ছাড়া সরকারের রাজস্বখাতে জমা হবে ৯ লাখ টাকা। আড়তটি ইজারার আওতায় আসায় সিন্ডিকেট ভেঙে চাষিরা এখন বাড়তি লাভের মুখ দেখতে পেরে পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
রোববার দুপুরে গুরুদাসপুরের নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুরে নিরাপদ লিচু উৎপাদন, আহরণ এবং বিক্রয় নিয়ে ব্যবসায়ী, লিচু বাগান মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় চাষি ও ব্যবসায়ীদের বক্তব্যে ওঠে আসে আড়তদাড়ির নামে সিন্ডিকেট করে কমিশন বাণিজ্যের বিষয়টি। সে সময় তারা জানান, আড়তদাড়ির নামে চাষিদের কাছ থেকে শতকরা ৮ টাকা ও ব্যবসায়ীদের কাছ  থেকে ৪ টাকা হারে কমিশন নেয়া হতো। এ ছাড়া মসজিদ সহ সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নামে ঝুড়ি প্রতি নেয়া হতো ৫ টাকা করে। বিষয়টি জেনে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে কমিশন বাণিজ্য বন্ধের নির্দেশ  দেন। এরপরই আলোচনায় ওঠে আসে কমিশনের নামে এমন চাঁদাবাজির কথা। তবে আড়তদারদের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এর পুরো টাকা তাদের পকেটে যায় না, এর কমিশন যায় রাজনৈতিক নেতাসহ অনেকের পকেটে।
এলাকাবাসী জানান, লিচুর রাজধানী হিসেবে পরিচিত নাটোরের গুরুদাসপুরের উৎপাদিত লিচু নিয়ে গত ২০ বছর ধরে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত পরিচালনা হয়ে আসছে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানার জায়গার ওপর আড়ত প্রতিষ্ঠিত এমন ধুয়া  তোলার কারণে এতদিন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিতে পারেনি। এই সুযোগে বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত মালিক সমিতি কমিশন বাণিজ্য করে কৃষকের লাখ লাখ টাকা পকেটে ঢুকাচ্ছিল। এদিকে রোববার এসপি লিটন কুমার সাহার কমিশন বন্ধের হুঁশিয়ারির পর জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারস্থ হয় আড়ত মালিকরা। তবে প্রশাসন অনড় থাকায় হালে পানি পাননি আড়ত মালিকরা। অবশেষে উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ইজারার আওতায় আনা হলো লিচু আড়ত।   বেড়গঙ্গারামপুর লিচু আড়ত এলাকায় অনুসন্ধান করে খাস জায়গা বের করে হাটবাজার ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী সোমবার দুপুরে উন্মুক্ত ইজারা ঘোষণা করেন গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার আবু রাসেল। মোট ৯ লাখ টাকায় ইজারা মূল্যে ওই আড়তটি নিয়েছেন স্থানীয় এক আড়ত মালিক। এতে লিচু বাগান মালিকদের আর কোনো কমিশনের টাকা দিতে হবে না আড়তদারদের। তবে যারা লিচু ক্রয় করবেন তাদেরকে প্লাস্টিকের ক্যারেট প্রতি ৫ টাকা, বড় ঝুড়ি ২০ টাকা এবং ছোট ঝুড়ি প্রতি ১০ টাকা ইজারা দিতে হবে। আগামী দুই মাসের জন্য ৭ লাখ ৬০ টাকায় লিজ গ্রহণ করেন স্থানীয় মাহাবুব হোসেন নামের এক আড়ত মালিক। এ ছাড়া ২০ শতাংশ ভ্যাট ধরে  মোট ৯ লাখ টাকায় ইজারা  দেয়া হয়। এতে করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে লিচু বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এর জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার আবু রাসেল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status