মোহনগঞ্জে ভূমিহীনদের বরাদ্দকৃত নির্মাণাধীন ঘরে ফাটল

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া নির্মণাধীন ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। গতকাল সরজমিন উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের রসুলপুর নতুনপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বরাদ্দকৃত নির্মণাধীন ঘরগুলোর বেশিরভাগেই ফাটল শুরু হয়েছে। উপকারভোগীরা জানান, ঘরের কাজে নিম্নমানের ইট, বালু ও অল্প পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার করার ফলেই দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়টি জানাজানি হয়ায় উপজেলা প্রশাসন ওইসব ঘরের ভাঙা ও ফাটলকৃত দেয়ালগুলোর ঘষামাজা শুরু করেছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে  উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে ৭৫টি ঘর নির্মাণের  প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। যার ব্যয় সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘর নির্মাণ বাবদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় ধরে চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ওইসব ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৩০শে মে’র মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে। গাগলাজুর ইউনিয়নের রসুলপুর নতুনপাড়া গ্রামের ভূমিহীন আব্দুল আওয়াল জানান, আমাদের ঘরের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট, বালু ও অল্প পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার করার ফলে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সম্পূর্ণ সরকারি খরচে আমাদেরকে ঘর নির্মাণ করে দেয়ার কথা থাকলেও  রাজমিস্ত্রীদের খাওয়ানো বাবদ ১৪-১৫ হাজার টাকা আমাদেরকে খরচ করতে হয়েছে। ভূমিহীন মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমরা সরকারি ঘর পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ঘর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়ায় আমার মন ভেঙে গেছে। গাগলাজুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভূমিহীনদের নির্মাণাধীন ঘরে ফাটল দেখা দেয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। জরুরিভিত্তিতে দেয়ালের ফাটল মেরামতের ব্যবস্থা করেছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রাকিবুল হাসান বলেন, নতুন ভিটেতে মাটি দেবে যাওয়ায় কয়েকটি নির্মাণাধীন ঘরের দেয়ালের পিছনের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে দ্রুতই সেগুলো মেরামতের কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান বলেন, ঘরের নির্মাণ কাজে কোনো অনিয়ম বা গাফিলতি করার সুযোগ নেই। যথাযথ নিয়ম মেনেই ওইসব ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নতুন ভিটেতে ঘর নির্মাণ করায় বৃষ্টির পানি জমে ভিটে দেবে যাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আর সেগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য এসিল্যান্ড ও পিআইওকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো।