বাংলারজমিন

কমলগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের বাদ দেয়ার দাবি তৃণমূলের

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

১৮ মে ২০২১, মঙ্গলবার, ৮:১৩ অপরাহ্ন

কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটি থেকে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি অনুমোদনের জন্য জেলা কমিটির কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৯ই নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ একযুগ পর অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনে আছলম ইকবাল মিলনকে সভাপতি ও এডভোকেট এএসএম আজাদুর রহমান আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। ৬ সদস্যের এই কমিটি ঘোষণার দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে প্রস্তাবিত এই কমিটি অনুমোদনের জন্য মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠানো হয়।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত ১২ই এপ্রিল দাখিলকৃত ওই কমিটিতে নৌকা বিরোধী একাধিক ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ একাধিক পদ দখল করে নিয়েছেন। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, সম্পাদকের স্বজন, নিকট আত্মীয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, সদ্য সমাপ্ত কমলগঞ্জ পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত আনোয়ার হোসেনের ভাই সানোয়ার হোসেন, আব্দুল মুমিন তরফদার, খন্দকার আহমেদ হোসেন, রাসেল মতলিব তরফদার, আব্দুল মন্নান, ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ, আব্দুল বাছিত, সেলিম মিয়া প্রকাশ্যে নির্বাচনে বিরোধিতা করলেও দখল করে নিয়েছেন কমিটির বড় বড় পদ। এছাড়া প্রস্তাবিত ওই কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদসহ সদস্য পদে স্থান করে নিয়েছেন হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী। অভিযোগ রয়েছে যারা কোনোদিন আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি তাদেরকেও পরিবারতন্ত্রের কারণে কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ দানা বাঁধছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে। এছাড়া প্রস্তাবিত কমিটিতে প্রকাশ্যে নৌকা বিরোধী একটি গ্রুপও দখলে নিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদ- এমন অভিযোগও রয়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীও।
এরই প্রেক্ষিতে ক্ষুদ্ধ তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রস্তাবিত উপজেলা কমিটি থেকে হেফাজত, জামায়েত ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে দলের পরীক্ষিত নেতাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গত ৫ই মে মৌলভীবাজার জেলা কমিটির বরাবর লিখিত অভিযোগ করে শমসেরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। এরপর প্রস্তাবিত কমিটি যাচাই-বাছাইপূর্বক অনুমোদনের জন্য জেলা কমিটির কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি। সর্বশেষ ১৬ই মে কমলগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল জেলা কমিটির কাছে অভিযোগ করেন।
দলের নেতাকর্মীরা জানান, কোনোদিন রাজনীতি না করেও প্রস্তাবিত কমিটির যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে আসীন হয়েছেন সাধারণ সম্পাদক এ এস এম আজাদুর রহমানের ভাতিজা এডভোকেট এ এস এম মাহফুজুর রহমান। এছাড়া মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে আসীন হয়েছেন সভাপতি আছলম ইকবাল মিলনের মেয়ে এডভোকেট রোকশানা আক্তার ও তার নিকট আত্মীয় আশরাফুল হক বদরুল। হেফাজত নেতা নূরুল ইসলামকে করা হয়েছে সদস্য। আদমপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক অর্থ সম্পাদক মো. ফারুক আহমদও সদস্য পদে স্থান করে নিয়েছেন। কমিটির সদস্য পদে স্থান করে নিয়েছেন জামায়েত নেতা আমির আলী। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল দল। এই দলে পরীক্ষিত নেতাকর্মীর অভাব নেই। নৌকা বিরোধী বিএনপি জামায়াতের লোক টেনে এনে প্রস্তাবিত কমিটিতে রাখা মানেই দলের জন্য অশনী সংকেত। কমলগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম পুষ্প বলেন, পরিবারতন্ত্রের বাইরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি হওয়া উচিত। নৌকা বিরোধী, হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপির মানুষকে নিয়ে প্রস্তাবিত যে কমিটি দাখিল করা হয়েছে সেই কমিটি দিয়ে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করা যাবে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status