ভারত
প্রেমের ফুল (পর্ব-১)
ইন্দিরা গান্ধী সুঁই-সুতো নিয়ে নিজের হাতে সেলাই করে দিলেন সোনিয়ার শাড়ি
জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা
১৬ মে ২০২১, রবিবার, ৬:১১ অপরাহ্ন
(বলা হয়ে থাকে, প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে। এই ফাঁদে প্রতিনিয়তই পড়ছে আমজনতা থেকে বিশিষ্ট জন। এই ধারাবাহিকে বিশিষ্ট জনদের প্রেমকাহিনী প্রকাশিত হবে প্রতি রোববার। আজ রাজীব-সোনিয়া গান্ধীর প্রেমগাথা)
সুদর্শন, ধারালো চাবুকের মতো চেহারা। বংশ গৌরবেও অতুলনীয়। প-িত জওহরলাল নেহরুর নাতি। ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে বলে কথা। এমন পুরুষের প্রেমে পড়বে না- এমন মেয়ে আছে নাকি? রাজীব যে পরিসরে বড় হয়ে উঠছিলেন সেখানে কয়েক ডজন প্রেমপত্র, জন্মদিনে চকোলেট বার, গোলাপ ফুল তাঁর দুষ্প্রাপ্য ছিল না।
কিন্তু ভাগ্যের এমন ফের, এহেন রাজীব প্রেমে পড়লেন ইতালির একটি গ্রামের মেয়ে। সোনিয়া মাইনো। রোম থেকে ১২২ কিলোমিটার দূরে ওরবাসামা গ্রামে সোনিয়াদের কিউরিওর ব্যবসা ছিল। কেমব্রিজে পড়তে এসেছিলেন সোনিয়া। ক্যাম্পাস পার্টিতে তার সঙ্গে পরিচয় হয় কেমব্রিজে পড়তে আসা এক ভারতীয় যুবক রাজীব গান্ধীর। লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট! হতেও পারে, নাও হতে পারে। ভারতীয় যুবকটির সৌজন্যে প্রথম দিনই মুগ্ধ হয়েছিলেন সোনিয়া। তারপর তাদের প্রথম ডেট। লন্ডনের ইন্ডিয়ান জিমখানার রেস্তরাঁয় সোনিয়া যত নার্ভাস, রাজীব তার থেকে বেশি। এতটাই নার্ভাস যে, ফিশ অ্যান্ড চিপসের পর গরম কফিই ঢেলে দিলেন সোনিয়ার উজ্জ্বল নীল গাউনে। ততদিনে সোনিয়া জেনেছেন রাজীব এক ভারতীয় প্রিন্স। তার মতো সাধারণ এক নারীকে প্রিন্স-এর রাজপ্রাসাদে মানাবে তো? ভীরু ভীরু এই প্রশ্নের জবাবে রাজীব সেদিন শুধু হেসেছিলেন। তিনিও জানতেন না একদিন তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসবেন। সোনিয়া জানতেন না একদিন ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের দ-মু-ের কর্ত্রী হবেন তিনি। এমন একটা সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সফরে এলেন। রাজীব দেখলেনÑ এটাই মাহেন্দ্রক্ষণ। ইন্দিরা ভাবী বধূ নির্বাচন করুন আর সোনিয়া দেখে নিক তার হবু শাশুড়িকে। ‘ইন্ডিয়া হলে’ রাজীব সোনিয়াকে নিয়ে পৌঁছালেন। এক ভারতীয় বন্ধুর দেয়া শাড়ি পরে এসেছেন সোনিয়া। রাজীব সোনিয়াকে পরিচয় করালেন ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে, ‘আমার মা’। বুদ্ধিমতী সোনিয়ার বুঝতে অসুবিধা হলো না কে রাজীবের মা। রাজীবের বুক তখন ঢিব ঢিব করছে- মায়ের কি পছন্দ হবে সোনিয়াকে? প্রাথমিক কথাবার্তার পর নিজেই ঘর থেকে সুঁই-সুতো এনে সেলাই করতে বসলেন সোনিয়ার ছিঁড়ে যাওয়া শাড়ি। ভাবা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেলাই করছেন অজ্ঞাতকুলশীল এক নারীর শাড়ি! রাজীবের বুঝতে অসুবিধা হলো না যে, সোনিয়া ফার্স্ট এক্সাম পাস করে গেছেন ডিস্টিংকশন নিয়ে। হলোও তাই। রাজীবকে বিয়ের দিন ঠিক করতে নির্দেশ দিলেন ইন্দিরা। দেশে ফিরে মাইনো পরিবারকে দিল্লিতে ডেকে পাঠালেন ইন্দিরা। এরপর বিয়ের ফুল ফুটতে আর দেরি হয়নি। বিয়ের পর সোনিয়া ইন্দিরা পরিবারের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন। শাশুড়ি ইন্দিরার নিধনে এক হাতে চোখের জল মুছে অন্য হাতে সংসারের শাসনদ- তুলে নেন সোনিয়া। কয়েক বছর পরে ঘাতকের হাতে রাজীব নিহত হওয়ার পর দু’চোখের জলই মুছে ফেলেন তিনি। জন্ম হয় অন্য এক নারীর। ভারতীয় রাজনীতিতে যিনি বজ্রাদপি কঠোর।
সুদর্শন, ধারালো চাবুকের মতো চেহারা। বংশ গৌরবেও অতুলনীয়। প-িত জওহরলাল নেহরুর নাতি। ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে বলে কথা। এমন পুরুষের প্রেমে পড়বে না- এমন মেয়ে আছে নাকি? রাজীব যে পরিসরে বড় হয়ে উঠছিলেন সেখানে কয়েক ডজন প্রেমপত্র, জন্মদিনে চকোলেট বার, গোলাপ ফুল তাঁর দুষ্প্রাপ্য ছিল না।
কিন্তু ভাগ্যের এমন ফের, এহেন রাজীব প্রেমে পড়লেন ইতালির একটি গ্রামের মেয়ে। সোনিয়া মাইনো। রোম থেকে ১২২ কিলোমিটার দূরে ওরবাসামা গ্রামে সোনিয়াদের কিউরিওর ব্যবসা ছিল। কেমব্রিজে পড়তে এসেছিলেন সোনিয়া। ক্যাম্পাস পার্টিতে তার সঙ্গে পরিচয় হয় কেমব্রিজে পড়তে আসা এক ভারতীয় যুবক রাজীব গান্ধীর। লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট! হতেও পারে, নাও হতে পারে। ভারতীয় যুবকটির সৌজন্যে প্রথম দিনই মুগ্ধ হয়েছিলেন সোনিয়া। তারপর তাদের প্রথম ডেট। লন্ডনের ইন্ডিয়ান জিমখানার রেস্তরাঁয় সোনিয়া যত নার্ভাস, রাজীব তার থেকে বেশি। এতটাই নার্ভাস যে, ফিশ অ্যান্ড চিপসের পর গরম কফিই ঢেলে দিলেন সোনিয়ার উজ্জ্বল নীল গাউনে। ততদিনে সোনিয়া জেনেছেন রাজীব এক ভারতীয় প্রিন্স। তার মতো সাধারণ এক নারীকে প্রিন্স-এর রাজপ্রাসাদে মানাবে তো? ভীরু ভীরু এই প্রশ্নের জবাবে রাজীব সেদিন শুধু হেসেছিলেন। তিনিও জানতেন না একদিন তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসবেন। সোনিয়া জানতেন না একদিন ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের দ-মু-ের কর্ত্রী হবেন তিনি। এমন একটা সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সফরে এলেন। রাজীব দেখলেনÑ এটাই মাহেন্দ্রক্ষণ। ইন্দিরা ভাবী বধূ নির্বাচন করুন আর সোনিয়া দেখে নিক তার হবু শাশুড়িকে। ‘ইন্ডিয়া হলে’ রাজীব সোনিয়াকে নিয়ে পৌঁছালেন। এক ভারতীয় বন্ধুর দেয়া শাড়ি পরে এসেছেন সোনিয়া। রাজীব সোনিয়াকে পরিচয় করালেন ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে, ‘আমার মা’। বুদ্ধিমতী সোনিয়ার বুঝতে অসুবিধা হলো না কে রাজীবের মা। রাজীবের বুক তখন ঢিব ঢিব করছে- মায়ের কি পছন্দ হবে সোনিয়াকে? প্রাথমিক কথাবার্তার পর নিজেই ঘর থেকে সুঁই-সুতো এনে সেলাই করতে বসলেন সোনিয়ার ছিঁড়ে যাওয়া শাড়ি। ভাবা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেলাই করছেন অজ্ঞাতকুলশীল এক নারীর শাড়ি! রাজীবের বুঝতে অসুবিধা হলো না যে, সোনিয়া ফার্স্ট এক্সাম পাস করে গেছেন ডিস্টিংকশন নিয়ে। হলোও তাই। রাজীবকে বিয়ের দিন ঠিক করতে নির্দেশ দিলেন ইন্দিরা। দেশে ফিরে মাইনো পরিবারকে দিল্লিতে ডেকে পাঠালেন ইন্দিরা। এরপর বিয়ের ফুল ফুটতে আর দেরি হয়নি। বিয়ের পর সোনিয়া ইন্দিরা পরিবারের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন। শাশুড়ি ইন্দিরার নিধনে এক হাতে চোখের জল মুছে অন্য হাতে সংসারের শাসনদ- তুলে নেন সোনিয়া। কয়েক বছর পরে ঘাতকের হাতে রাজীব নিহত হওয়ার পর দু’চোখের জলই মুছে ফেলেন তিনি। জন্ম হয় অন্য এক নারীর। ভারতীয় রাজনীতিতে যিনি বজ্রাদপি কঠোর।