বিশ্বজমিন

নেপালের শ্মশানে দায়িত্বরতদের আতঙ্ক

মানবজমিন ডেস্ক

১৬ মে ২০২১, রবিবার, ২:৫৭ অপরাহ্ন

নেপালে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দেহ দাহ করা হয় শ্মশানে। সেখানে যারা দায়িত্ব পালন করেন, এখন ভয় তাদেরকে নিয়ে। একে একে তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। এরই মধ্যে ১৬ জন কর্মীর মধ্যে ৯ জনের দেহে পাওয়া গেছে করোনা ভাইরাস। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। এমনই একজন কর্মী কুমার থাপা। বক্তারপুরের সিরুতায় বসবাস তার। সেখান থেকে প্রতিদিন অফিসে যান তিনি। ঘরে রেখে যান স্ত্রী কাঁচি থাপা মাগার’কে। তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় থাকেন, তার স্বামী যেন করোনা ভাইরাস বহন করে না ফেরেন। কুমার থাপার বয়স ৫৭ বছর। তিনি পুষ্পপতি এলাকায় বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অন্যতম। ২০১৬ সাল থেকে বৈদ্যুতিক এই দাহস্থান পরিচালনা করে আসছে পুষ্পপতি এরিয়া ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্প। কাঠমান্ডু উপত্যকায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের দেহ দাহ করার এটাই একমাত্র স্থান। কুমার থাপা বলেন, প্রতিদিন দাহ করতে কমপক্ষে ১৫টি মৃতদেহ নেয়া হয় সেখানে। এসব মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাদেরকে দাহ করে ভগ্ন হৃদয়ে বাসায় ফিরে আসতে হয় তাকে। এই উপত্যকায় যেহেতু করোনা সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়ছে, তাই সামনের দিনগুলোতে আরো মৃতদেহ বৃদ্ধি পাবে। নেপাল সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, কাঠমান্ডু উপত্যকা এখন করোনা ভাইরাসের হটস্পট। দেশে যে পরিমাণ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে শতকরা প্রায় ৬০ ভাগই এখানকার। গত ২৪ ঘন্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৮৮ জন। শুক্রবার নাগাদ কাঠমান্ডু উপত্যকায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৯৯১ জন। এখন পর্যন্ত কাঠমা-ুতে করোনায় মারা গেছেন ২১২ জন।  বক্তারপুর এবং ললিতপুরে মারা গেছেন যথাক্রমে ৬৩ ও ৫৮ জন। বৈদ্যুতিক প্রক্রিয়ায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের ইনচার্জ রাজু রেগমি বলেছেন, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০০ মৃতদেহের দাহ করা হয়েছে এখানে। এসব মানুষ করোনায় মারা গিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, ২৪ শে মার্চ থেকে দুটি বৈদ্যুতিক চুল্লির মধ্যে একটি সব সময় প্রস্তুত রাখতে হয়। এই চুল্লিতে দায়িত্ব পালন করেন ১৬ জন কর্মী। তাদের মধ্যে ৯ জনই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, আমিও নিজেকে আইসোলেট করেছি। মারাত্মক জ্বর ও মাথাব্যথা দেখা দিয়েছিল আমার। এখনও পরীক্ষার ফল পাইনি হাতে। তবে একদিন এই ভাইরাস আমাকে থাবা বসাবে এমনটাই মনে হয়। সপ্তাহের সাতদিনই এখানে কাজ করতে হয় স্টাফদের। সেক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে তাদেরকে ছুটি দিতে হয়। বৃহস্পতিবার এই চুল্লিতে দাহ করা হয়েছে করোনায় মারা যাওয়া  ব্যক্তিদের ২১ টি দেহ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status