বাংলারজমিন

ঠোঙা বিক্রি করে চলছে মা-ছেলের লড়াই

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

১২ মে ২০২১, বুধবার, ১:১১ অপরাহ্ন

খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা আইডিয়াল কলেজ রোডের নাদিরা খাতুন। ২০০৮ সালে এইচএসসি পাসের পরেই বিয়ে হয় বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজারের সঙ্গে। বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় স্বামীর সঙ্গে টুকটাক ঝগড়া হতো। এমনি চলতে চলতে জন্ম হয় ফুটফুটে ছেলে সানাউলের। ছেলের বয়স যখন এক বছর তখনই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপরই শুরু হয় সন্তানকে নিয়ে তার জীবন-যুদ্ধের লড়াই।
ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দ্বিতীয় বিয়ের চিন্তা করেননি তিনি। ছেলে সানাউল ইসলাম ও বৃদ্ধা মা নিলুফা বেগমকে নিয়ে তিনজনের সংসার। বিবাহ বিচ্ছেদের পরেই তিনি লেখাপড়ার জন্য ডিগ্রিতে ভর্তি হন। কাগজের ঠোঙা বানিয়ে বিক্রি করে নিজের লেখাপড়া চালিয়ে যান। শিশু সন্তান ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তাই আবারো লেখাপড়া ছেড়ে দেন। এরপরে শিশু সন্তান সামাউল হাঁটতে শিখলে ফের খুলনার আমদা নার্সিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। চার বছরের নার্সিং সম্পন্ন করে এক বছরের ইন্টার্নিও সমাপ্ত করেন নাদিরা।
নার্সিং সম্পন্ন হলেও চাকরি মেলেনি তার। ফলে পরিবারের হাল ধরতে জীবিকার সেই ঠোঙা বানিয়ে দোকানে বিক্রি করা। যা দিয়ে চলছে এ তিনজনের জীবনযুদ্ধ।
নাদিরা বলেন, আমি এক বছর ইন্টার্নি করেছি খুলনা সদর হাসপাতাল থেকে। আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখনো যদি চাকরি পাই তাহলে ঠোঙা বানানোর কাজ ছেড়ে দিবো। তিনি আরো বলেন, ছেলের যখন এক বছর বয়স তখন থেকেই লড়াই শুরু। এখন ছেলের বয়স ১০ বছর। মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আমরা মা ও ছেলে ভালো আছি। তিনি জানান, আত্মবিশ্বাসই আমাকে এখানে নিতে পেরেছে। বাবা নেই তবু বাবার বাড়ির আশ্রয়টা এখনো আছে। এখন আর শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের ভয় তাড়া করে না।
নাদিরার মা নিলুফা বেগম বলেন, আমি পেটে ধারণ করেছি সন্তানকে, সবাই ফেলে দিতে পারে। আমি তো ফেলে দিতে পারি না। শুধুমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে নাদিরাকে ওর স্বামীর কাছ থেকে নিয়ে আসছি।
নাদিরার প্রতিবেশী মাইমুনা আক্তার মিতু বলেন, শুধুমাত্র তার আত্মবিশ্বাসের কারণে আজও জীবনযুদ্ধে লড়াইটা চালিয়ে আসতে পারছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status