প্রথম পাতা

স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই ফেরা

নূরে আলম জিকু

১২ মে ২০২১, বুধবার, ৯:৩৫ অপরাহ্ন

ঈদের বাকি এখনো ১/২ দিন। এরই মধ্যে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। এখনো সড়ক, নৌ-পথে রয়েছে ঘরমুখো মানুষের ঢল। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরছেন তারা। দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভেঙে ভেঙে ছুটছেন ঘরমুখো মানুষ। বাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, নৌকা, ব্যক্তিগত গাড়ি ও ফেরিসহ যে যেভাবে পারছেন ঢাকা ছাড়ছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়, চলমান লকডাউন, বিধিনিষেধ সহ বৈরী আবহাওয়ায়ও থেমে নেই বাড়ি ফেরা। রাস্তায় নানা বাধা-বিপত্তি ও যানবাহনের চাহিদা বেশি থাকায় ঘরমুখো মানুষকে গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ ভাড়া।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নানা রকম বিধিনিষেধ দিয়ে ১৬ই মে পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটা ও যাতায়াতের সুবিধার্থে শপিংমল ও জেলার ভেতরে বাস চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। শর্ত জুড়ে দেয়া হয় ক্রেতা-বিক্রেতা, যাত্রী ও পরিবহনসহ সংশ্লিষ্টদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যে যেখানে আছেন, সেখানেই ঈদ উৎসব করতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বন্ধ রাখা হয়েছে দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ। তবে দূরপাল্লার বাস ও নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও থেমে নেই নগরবাসী। সরকারের সব ধরনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঈদের আগেই ঢাকা ছাড়ছেন তারা। ফেরিঘাট ও সড়কপথে রয়েছে মানুষের জট। স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও প্রাণহানির সংশয় থাকলেও ভাড়া করা যানবাহনে গাদাগাদি করে যাচ্ছেন এসব ঘরমুখো মানুষ। এতে বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়কে ভোগান্তির পাশাপাশি কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া। তারপরও থেমে নেই ঘরমুখো মানুষের চাপ। গত কয়েকদিন ধরে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ঘাটে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিটি ফেরিতে পারাপার হচ্ছেন প্রায় সহস্রাধিক মানুষ। থাকছে না কোনো সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি। ফেরিতে একজনের সঙ্গে ঠেলাঠেলি করেই যাতায়াত করছেন আরেকজন। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষও। বাড়ানো হয়েছে ফেরির সংখ্যা। তবুও কমেনি ঘুরমুখো মানুষের চাপ। দেখেও যেন দেখছে না কেউ। এদিকে লকডাউনে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার পয়েন্টগুলোয় পুলিশের চেকপোস্টে রয়েছে ঢিলেঢালা ভাব। চেকপোস্টে ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে চলাচলের কারণ জানতে চাওয়া হলেও হেঁটে চলাচলকারীরা অবাধে ঢাকা ছাড়ছেন। সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বেশির ভাগই। এদিকে সড়কপথে গতকাল ছিল সর্বোচ্চ ভিড়। এদিন রাজধানী ছেড়েছেন অনেকেই। অনেকেই অগ্রিম ছুটি নিয়ে আগেভাগেই গ্রামের পথে ছুটেছেন। এতে স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা করেননি তারা।
দুপুরে মগবাজার রেললাইন এলাকায় প্রায় ১২/১৫ জন লোক জড়ো হয়েছেন। তাদের কারো কারো হাত ও কাঁধে একাধিক ব্যাগ, কারো মাথায় বস্তা, মালামাল। কেউ কেউ স্ত্রী-সন্তানসহ অপেক্ষা করছেন ভাড়া করা প্রাইভেটকারে। তারা জানান, তাদের অনেকেই নির্মাণ শ্রমিক। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের উৎসব করতে নোয়াখালী যাচ্ছেন তারা।
জাফর নামের এক নির্মাণ শ্রমিক বলেন, পথে ভোগান্তি হবে জেনেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। প্রতি বছর সবাই এক সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করি। অনেক দিন হয়েছে বাবা-মাকে দেখা হয় না। তাই তাদের সঙ্গে ঈদ করার জন্য যত কষ্টই হোক যেতে হবে। এতে করোনায় আক্রান্ত হলেও কিছু করার নেই।
এদিকে গতকাল দুপুরের পর থেকে তীব্র যানজটে পড়ে সড়ক-মহাসড়কগুলো। সড়কে দূরপাল্লার পরিবহন তেমন একটা না থাকলেও ট্রাক ও প্রাইভেটকার, মোটরবাইক, সিএনজির চাপ ছিল সবচেয়ে বেশি। বিধিনিষেধ অমান্য করে ট্রাক ও প্রাইভেটকার যাত্রী পরিবহন করেছে। সাভারের আশুলিয়া ও বাইপাইল, আমিনবাজার, হেমায়েতপুর, সাভার বাজার স্ট্যান্ড, নবীনগর পয়েন্টে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। অনেকেই জেলার বাসে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পৌঁছেছেন। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। এদিন দাউদকান্দির শহীদনগর থেকে পুটিয়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে পৌঁছেছে এ যানজট।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status