বাংলারজমিন

কাজের অগ্রগতি ২৫ শতাংশ

রূপগঞ্জে সড়কে লাখো মানুষের ভোগান্তি

জয়নাল আবেদীন জয়, রূপগঞ্জ থেকে

১২ মে ২০২১, বুধবার, ৮:২৫ অপরাহ্ন

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সড়ক নির্মাণে ধীরগতির কারণে খানাখন্দে ভরা বেহাল সড়কে বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাচ্ছে লাখো বাসিন্দা। এদিকে চলতি জুন মাসে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ২৫ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে কাজের। এ অবস্থা চলমান থাকলে আগামী ৬ বছরেও কাজ সমাপ্ত হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান খোদ উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তারা। উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের প্রায় ১৬ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার কারণে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হতো বছরের পর বছর। এ ইউনিয়নের বেহাল সড়কগুলো নতুন করে নির্মাণের দাবি ছিল এলাকাবাসীর অনেকদিনের। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে গত ২০১৯ সালে স্বর্ণখালী বাজার-চনপাড়া ৭.৩০ কিলোমিটার সড়ক, আতলাপুর-ডাঙ্গা ৪.৬০ সড়ক ও স্বর্ণখালী বাজার- ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ৩.৯ কিলোমিটার সড়ক ও এর সঙ্গে ৫টি ছোট ব্রিজ নির্মাণের জন্য ৫৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৩ টাকার দরপত্র সম্পন্ন হয়। এ তিনটি সড়ক নির্মাণের দরপত্র পান জেবি অফ এনসিইএল-পিডিএল নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ তিনটি সড়কই সংযোগ সড়ক। দরপত্র শেষে ২০১৯ সালের ১০ই নভেম্বর থেকে ১৬ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ধীর গতিতে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ চালাতে থাকে। এদিকে আগামী ২৯শে জুন সড়কগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কাজ শেষ হতে বাকি মাত্র দেড় মাস। এর মাঝে প্রতিষ্ঠানটি মোট কাজের মাত্র ২৫ ভাগ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, ভোলাব ইউনিয়নের এ ১৬ কিলোমিটার সড়ক দিয়ে পূর্বেরগাঁও, ছনপাড়া, কাঞ্চন, করাটিয়া, আতলাপুরসহ ২০ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করে। এ তিনটি সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় ছিল। সড়কের বিটুমিন উঠে গিয়ে রাস্তার মাঝে ছোট বড় খানাখন্দে ভরপুর ছিল। এ ছাড়া সড়কে নিষিদ্ধ ট্রাক্টরের কারণে রাস্তার আরো বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাস্তা দ্রুত ভেঙে যায়। স্থানীয়দের দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সড়কগুলোর নির্মাণের দরপত্র সম্পন্ন হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। শুষ্ক মৌসুমে সড়কগুলো ধুলায় ধূসরময় হয়ে থাকে আর বর্ষাকালে সড়কগুলো চষা ক্ষেতে পরিণত হয়। এ ব্যাপারে ভোলাবো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু বলেন, বেশ কয়েকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে সড়কগুলো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে বলা হলেও তারা শুনেনি। রাস্তাগুলো নির্মাণ শেষ না হওয়ায় সাধারণ মানুষকে চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি যদি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ না করে তাহলে এলাকাবাসীকে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আমাদের হাতে আর কোনো বিকল্প নেই। রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার মিটিং করেছি। আবার আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং করে ব্যবস্থা নিবো। এ রাস্তাটির নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে এলাকার মানুষ সত্যি কষ্টে রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রজেক্ট ম্যানেজার মোরশেদ আলম বলেন, সড়ক নির্মাণে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা যতবারই রাস্তাগুলোর কাজ করতে গিয়েছি ততবারই স্থানীয় লোকজন বাধা প্রদান করে। এ কারণে আমরা কাজ করতে পারিনি। সড়কগুলোর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করতে গত ৩রা মে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। তারা যেভাবে আমাদের গাইডলাইন দিয়েছে আমরা সেভাবেই কাজ করবো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status