বাংলারজমিন

অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ শাহানার

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

১১ মে ২০২১, মঙ্গলবার, ৮:৫৭ অপরাহ্ন

দরিদ্র শাহানা খাতুনের (৩৬) চোখে মুখে এখন শুধু হতাশার চিহ্ন ও অসহায়ত্বের চাহনি। সে সঙ্গে অভাবের দীর্ঘশ্বাস। হাত হারানোর কষ্টের পাশাপাশি বেঁচে থাকাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। রাত দিন দু’হাতে সুঁই সুতোর কাজ করে উপার্জন করা শাহানার জীবন এখন থমকে গেছে। একটি সড়ক দুর্ঘটনা তার স্বপ্নগুলো পিষে দিয়েছে। দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও উপার্জনের ডান হাতটি হারিয়ে কর্মক্ষম হয়ে পড়েন এক সময়ের গার্মেন্টকর্মী শাহানা। সে সঙ্গে অর্থের অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করতে পারছেন না। শিগগিরই তার হাতে প্লাস্টিক সার্জারি করাতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই সংগ্রামী নারী তার চিকিৎসা পূর্ণ করে কৃত্রিম হাত সংযোজনের মাধ্যমে আবারো জীবন সংগ্রাম চালিয়ে  যেতে চান। দু’হাতে চালাতে চান সেলাই মেশিন।
শাহানা বলেন, ধার-দেনা করে এতদিন তার চিকিৎসা চলেছে। এখন টাকা না থাকায় প্লাস্টিক সার্জারি করাতে পারছি না। অভাবের তাড়নায় নিজ ঘরেই শুরু করেন সেলাইয়ের কাজ। দর্জির কাজ করে তাদের টানাপড়েনের সংসার চলছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে খুবই সংকটে পড়ে যান শাহানা। স্বামী আনোয়ার হোসেন হোটেল শ্রমিক হলেও এখন বেকার। কোনো দিন কাজ পেলে কাজ করেন, আর না হলে বসে কাটে তার দিন। দর্জির কাজের পাশাপাশি অভাব ঘুচাতে একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করার কথা ছিল শাহানার। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। একটি ট্রাক তার রোজগারের ডান হাতটি কেড়ে নেয়। তাকে বাঁচাতে তার ডান হাতটি কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। শাহানা খাতুনের বাড়ি পঞ্চগড় জেলা সদরের পূর্ব জালাসী এলাকায়। শাহানা গত ২৫শে মার্চ বোন ফাহিমাকে নিয়ে পঞ্চগড় ইএসডিও কার্যালয়ে গিয়েছিলেন ঋণ নিতে। ঋণ প্রস্তুত না হওয়ায় বোনসহ রিকশায় বাড়ির দিকে রওনা হন। ফেরার পথে প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের সামনে মহাসড়কে তেঁতুলিয়া থেকে পঞ্চগড়গামী একটি বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় সড়কের ওপর ছিটকে পড়েন শাহানা। এ সময় ট্রাকের পেছনের একটি চাকা তার ডান হাতের ওপর দিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তার ডান হাতটির বেশির ভাগ অংশ কেটে ফেলতে হয়। শাহানা খাতুন বলেন, বাড়িতে দর্জির কাজ করে যা আয় হতো তার বেশির ভাগ টাকা বড় মেয়ের পড়ালেখার জন্য খরচ করতেন। ছোট ছেলের বয়স দেড় বছর। তার জন্যও বিভিন্ন খরচ করতে হয়। এ অবস্থায় কীভাবে জীবনযাত্রা ও ছেলে-মেয়ের খরচ চলবে তা ভেবে পাচ্ছি না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status