বিশ্বজমিন

ডকুমেন্ট ফাঁস

২০১৫ সালেই করোনা ভাইরাসকে জীবাণুঅস্ত্র বানাতে চেয়েছিলেন চীনের বিজ্ঞানীরা

মানবজমিন ডেস্ক

১০ মে ২০২১, সোমবার, ১:২৬ অপরাহ্ন

চীনা বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসকে জীবাণুঅস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন ২০১৫ সালে। ‘দ্য আন-ন্যাচারাল অরিজিন অব সার্স অ্যান্ড নিউ স্পেসিস অব ম্যান-মেড ভাইরাসেস অ্যাজ জেনেটিক বায়োউইপনস’ শীর্ষক এক ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে এই জীবাণুঅস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করা যাবে। ভারতের অনলাইন এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ওই ডকুমেন্টটি ২০১৫ সালে লিখেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এতে বলা হয়েছে সার্স করোনা ভাইরাস হলো নতুন এক জেনেটিক অস্ত্র। যাকে কৃত্রিমভাবে মানবরোগের ভাইরাস হিসেবে আবির্ভাব করানো যেতে পারে। তারপর তাকে জীবাণুঅস্ত্র হিসেবে অবমুক্ত করা যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার উইকলি অস্ট্রেলিয়ান-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এসব কথা লিখেছে এনডিটিভি। এতে দেখা যায়, কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর ৫ বছর আগে সার্স করোনা ভাইরাসকে জীবাণুঅস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন চীনের সামরিক বাহিনীর বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে উইকলি অস্ট্রেলিয়ানের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে news.com.au এই সাইটে। এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই)-এর নির্বাহী পরিচালক পিটার জেনিংস বলেছেন, আমরা যা পেয়েছি এই ডকুমেন্ট থেকে তা বন্দুকের গুলি ছুড়ে দেয়ার সময় যে ধোয়া বের হয় তারই মতো। আমি মনে করি এটা খুব উল্লেখযোগ্য বিষয়। কারণ এ ডকুমেন্ট খুব পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেয় যে, করোনাভাইরাসের বিভিন্ন স্ট্রেইনের সামরিক ব্যবহারের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছিলেন চীনা বিজ্ঞানীরা। তারা চিন্তাভাবনা করছিলেন এই করোনা ভাইরাসের স্ট্রেইনকে কিভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায়। আমরা এখন যে অবস্থায় আছি, এটা হতে পারে সামরিক ব্যবহারের প্যাথোজেন (করোনা ভাইরাস) দুর্ঘটনাক্রমে অবমুক্ত হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরো বলেন, এই ডকুমেন্টই বলে দেয় কেন কোভিড-১৯ নিয়ে বাইরের দেশগুলোর তদন্তের ক্ষেত্রে চীন এত অনীহা প্রকাশ করে। যদি চীনের সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তো তাহলে নিজেদের স্বার্থেই তদন্তে সহযোগিতা করার কথা ছিল চীনের।কিন্তু আমরা চীনকে দেখতে পাচ্ছি বিপরীত অবস্থানে।
সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রবার্ট পটার চীন সরকারের ফাঁস হওয়া ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ করেছেন। তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন দ্য অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকার সাংবাদিক। জবাবে রবার্ট পটার বলেছেন, এই ডকুমেন্টটি কোনোভাবেই ভুয়া হতে পারে না। আমরা উচ্চ পর্যায়ে আস্থায় পৌঁছেছি যে, এটা প্রকৃত ডকুমেন্ট। এটা ভুয়া নয়। কিন্তু এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে অন্যদের। পটার আরো বলেন, চীন সরকার যে এই গবেষণাকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়নি বা নিতে চায়নি তা এই ডকুমেন্ট বলে না। রবার্ট পিটার বলেন, এই ডকুমেন্ট চমৎকার মজার একটি বিষয়। এটা বলে দেয় চীনের বৈজ্ঞানিক গবেষকরা কি চিন্তাভাবনা করছেন।
উল্লেখ্য, সার্স-কোভ-২ নামের করোনা ভাইরাস সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারি সৃষ্টি করেছে। এর উৎপত্তি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। করোনা ভাইরাস ভাইরাসের বিশাল একটি পরিবার। এর মধ্যে আছে নানা রকম স্ট্রেইন। এর মধ্যে কিছু স্ট্রেইন মানবদেহে শ্বাসপ্রশ্বাসে মারাত্মক সঙ্কট সৃষ্টি করে। এর মধ্যে সাধারণ ঠাণ্ডা থেকে শুরু করে সেভার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) পর্যন্ত সংক্রমণ রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status