শেষের পাতা

ফুটপাথের দোকানে বিক্রি কম

স্টাফ রিপোর্টার

৮ মে ২০২১, শনিবার, ৯:২৬ অপরাহ্ন

ফাইল ছবি

রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোতে আশানুরূপ বিক্রি হলেও এবার জমছে না ফুটপাথে ঈদের কেনাকাটা। বিভিন্ন সড়কের পাশে গড়ে তোলা ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। বিক্রেতারা অবসর সময় পার করছেন ক্রেতাদের অপেক্ষায়। দু’এ৭কজন এসে ভিড় জমালেও চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি নেই ব্যবসায়ীদের। গতকাল রাজধানীর নিউ মার্কেট, মিরপুর ১০, ফার্মগেট, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে দেখা যায় এমন চিত্র। ঈদের আগে জমজমাট থাকা ফুটপাথের দোকানগুলো অন্যান্য ঈদে ভিড় থাকলেও এবার দেখা গেছে ভিন্নতা। করোনার প্রভাবে অনেকে ঢাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে গ্রামে পাড়ি জমিয়েছেন। আবার কেউ বাসা থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না। কেউবা আবার অনলাইনের মাধ্যমে ঈদের কেনাকাটা সেরে ফেলছেন। ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা ক্রেতাদের অপেক্ষায় সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত থাকেন। ফুটপাথের এ দোকানগুলো বেশিরভাগ সময়ই দেখা গেছে ক্রেতাশূন্য। বিক্রেতাদের চাহিদামতো ক্রেতা মিলছে না। দু’একজন ক্রেতার দেখা মিললেও ক্রয় করছেন কম। ক্রেতাদের চাহিদামতো না হওয়ায় ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে আবার এ মার্কেট থেকে সে মার্কেটে ঘুরছেন।
গুলিস্তানের জুতার দোকানের ব্যবসায়ী রাজিব হাসান জানান, সারাদিনে মাত্র দুই জোড়া জুতা বিক্রি করেছেন। সাধারণত ঈদের বাজারে কখনো এত কম বিক্রি হয়নি তার। চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতা আসছে না। ফুটপাথের দোকানগুলোতে ঈদ ছাড়াও সব সময় অনেক ভিড় থাকে। কিন্তু এবার ঈদকে সামনে রেখেও অন্যবারের যা ভিড় থাকে তেমনটি হচ্ছে না বলে তিনি জানান।  
মিরপুর-১০ নম্বরের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, গত ৭ বছর ধরে ফুটপাথে প্যান্ট বিক্রি করি। এই রকম লোকসানের মধ্যে কখনো পড়তে হয়নি। খুব খারাপ অবস্থায় দিন যাচ্ছে। করোনার আগে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দোকানে ঈদের মালামাল এনেছিলাম। কিন্তু এখন দেখি চালানই ঠিকমতো উঠাতে পারবো না। আমার পরিবারের খরচ এই ব্যবসার ওপর থেকে করতে হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র তিনটি প্যান্ট বিক্রি করেছি।
ফার্মগেট এলাকায় ফুটপাথের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ক্রেতারা জিনিসপত্র দেখে চলে যান। কেউ তেমন কিছু কিনছেন না। ফুটপাথে বসতে হলেও চাঁদা দিয়ে বসতে হয়। বেচাবিক্রি চাহিদামতো একদম নেই। অথচ চাঁদার টাকা ঠিকই দিতে হচ্ছে। এতদিন সব বন্ধ ছিল। বড় ইচ্ছা ছিল ঈদের আগে কিছু বিক্রি হবে। চালানটা ঠিকমতো উঠাতে পারবো। সেটাও হচ্ছে না এবার।
নিউ মার্কেটের বাইরে ফুটপাথের ব্যাগ বিক্রেতা আনিস হোসেন বলেন, অন্যান্য ঈদে  পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে ক্রেতাদের ব্যাগ কেনার চাহিদা থাকে। কিন্তু এবার  তেমন কোনো ক্রেতা আসছেন না। যারা আসছেন তারাও দেখে চলে যাচ্ছেন। এবার সম্পূর্ণ  লোকসান গুনতে হবে।
ফার্মগেটে রাজাবাজার থেকে আসা ক্রেতা নাজনীন সুলতানা বলেন, ঈদের কেনাকাটা প্রায় শেষের দিকে। আজ কিছু কসমেটিকস ফুটপাথ থেকে স্বল্প দামের মধ্যে কিনতে এসেছি। এখানে তেমন কিছু পছন্দ হচ্ছে না। সেজন্য কাল অন্য কোথাও থেকে নিয়ে নেবো। তবে ফার্মগেট থেকে বোনের জন্য দুই জোড়া জুতা ক্রয় করেছি।
মোহাম্মদপুর থেকে নিউ মার্কেটে আসা ক্রেতা ডালিয়া বেগম বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি ঈদের কেনাকাটা করতে। আজই মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে এলাম। করোনার ভয়ে আসতে চাইনি। তবুও বাচ্চাদের মন রক্ষা করতে ছুটে আসা। ফুটপাথ থেকে দুই ছেলের জন্য জুতা নিয়েছি। ফুটপাথ থেকে কিছুটা হলেও কম দামে নিয়েছি। বাকি কেনাকাটাগুলোও আজ সেরে ফেলবো। করোনার পরিস্থিতি একদম খারাপ। শুধু বাচ্চাদের খুশি করার জন্য মার্কেটে এসেছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status