বাংলারজমিন

‘কাজ নাই, খাবার নাই, ঢাকায় কি আঙ্গুল চুষবো’

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

৮ মে ২০২১, শনিবার, ৯:২২ অপরাহ্ন

আব্দুর রহিম। বয়স পঞ্চাশের ওপরে। বাড়ি বগুড়ায়। গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। সপ্তাহখানেক ধরে কাজ বন্ধ। উপার্জনের টাকায় এ কয়দিন বসে খেতে হয়েছে তাকে। পাননি কোনো সহায়তা। ফুরিয়ে আসছিল কষ্টার্জিত টাকা। কোনাবাড়ী থেকে কয়েক দফা গাড়ি পাল্টিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড় পর্যন্ত আসতে তার খরচ হয়েছে ৬০০ টাকা। সরকারি নির্দেশনার কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাগে বলে উঠলেন, ‘কাজ নাই, খাবার নাই, ঢাকা বসে বসে কি আঙ্গুল চুষবো’।
শুধু রহিম নয়, কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়া তার মতো হাজারো লোকজন বাড়ি ফিরছেন অনেকটাই খালি হাতে। একদিকে কাজ করতে পারছেন না। অন্যদিকে পায়নি কোনো সহায়তা। তাই পরিবারের লোকজনের কাছেই ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে নানা পন্থায় বাড়ি ফিরছেন মানুষ। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় খোলা ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট যানবাহনে গাদাগাদি করে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হচ্ছেন তারা। কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এতে করে বেড়ে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।
করোনাভাইরাসের কারণে ঈদে কর্মস্থলে থাকার কথা থাকলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘরমুখো হচ্ছেন মানুষজন। আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ থাকায় কয়েক দফা গাড়ি পাল্টিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলযোগে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গাদাগাদি করে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হচ্ছেন উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। গেল ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২১ হাজারেরও অধিক যানবাহন পারাপার হয়েছে। যা থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যার অধিকাংশই ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহন। তবে রাতের আঁধারে চলাচল করছে গণপরিবহন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হানিফ পরিবহনের এক চালক জানান, গাড়ি নিয়ে বের হলে সারাদিন গাড়ি আটকে রাখা হয়। পরে দুই হাজার টাকা দিয়ে রাতে চলাচল করি। আজ চট্টগ্রাম যাবো। এখন পর্যন্ত (বেলা তিনটা) ১৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছি। আরো কতো লাগবে আল্লাহই জানেন। তিনি আরো বলেন, সেতুর পশ্চিম পাড়ে গিয়ে দেখেন অনেক গাড়ি আটকে আছে। সন্ধ্যার পর ছাড়বে তাদের।
অভিযোগ রয়েছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় কর্তব্যরতরা যেসব ট্রাকগুলোতে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে সেসব ট্রাকের চালকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের সেতু পারাপার হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। আর টাকা না দিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, মহাসড়কের ৫৪টি জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে। তারা মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। ট্রাক, পিকআপ ও মোটরসাইকেলে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, যদি এমনটি হয় তাহলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status