শেষের পাতা

বেসরকারি কলেজে অনার্স মাস্টার্স নিয়ে কড়াকড়ি

পিয়াস সরকার

৭ মে ২০২১, শুক্রবার, ৯:৩৫ অপরাহ্ন

ফাইল ছবি

শিক্ষার মান উন্নয়নে বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। পরিকল্পনা ঠিক করতে গঠন করা হয়েছে ১৫ সদস্যের কমিটি। এই কমিটির প্রথম বৈঠক হয় গত মঙ্গলবার। সূত্রমতে, অনার্স-মাস্টার্সের গুণগত মান রক্ষায় নতুন কলেজ অনুমোদন না দেয়া, মানহীন কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি না করানো, শর্ট কোর্স ও ডিগ্রি চালু করাসহ বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি একাধিকবার এই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। সমপ্রতি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স আর ভবিষ্যতে থাকবে না। আমরা সনদধারী বেকার তৈরি করতে চাই না। জেলায় জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে।

তথ্যমতে, ১৯৯৩ সালে বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্সের অনুমোদন মেলে। ৩১৫টি কলেজে পড়ানোর অনুমোদন দেয়া হলেও পরবর্তীতে ২০০টি কলেজ সরকারি কলেজে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গঠিত কমিটির প্রধান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স বন্ধ হচ্ছে এরকম কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। আমরা শুধুমাত্র এসব কলেজের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন ইনস্টিটিউটে যেরকম ডিপ্লোমা কোর্স চালু আছে সেরকম কোর্স চালু করা যায় কিনা সে বিষয়ে আমরা চিন্তা করছি। তবে এখানে কিছু আইনি জটিলতা আছে। সেসব আইনি জটিলতাও কাটিয়ে উঠতে হবে আমাদের।

নতুন করে আর বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্সের অনুমোদন দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক কলেজ আছে যেখানে বেতন দেয়া হয় না। বিনা বেতনে তো আর পাঠদান হয় না। ফলে শিক্ষার মান কমে আসছে। শিক্ষা এসব কলেজে গাইড বইকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। আমরা চাই না কোনো শিক্ষক এসব কলেজে যোগদান করে তার ক্যারিয়ার ধ্বংস করুক। নামকাওয়াস্তে যাতে কোন অনার্স-মাস্টার্স চালু না থাকে।

তিনি আরো বলেন, ধরেন একজন শিক্ষার্থী ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী। মানহীন কলেজের শিক্ষার্থীরা এমনিতেই ভালো অবস্থানে নেই। আমরা চাই না তার কাছে একটা বার্তা যাক যে তার অনার্স কোর্স নিয়ে শঙ্কা আছে। যেসব শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে লেখাপড়া শেষ করে বেরিয়ে যেতে পারবেন। এসব কলেজে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে। আমরা চাই কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ করতে। কোনো কলেজে যদি দেখা যায় কোনোভাবেই মাননিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সেক্ষেত্রে আমরা পরিকল্পনা করছি অনার্সে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি না করিয়ে সেখানে ডিগ্রি ও শর্ট কোর্স চালুর।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ বলেন, ঢালাওভাবে অনার্স-মাস্টার্স উঠিয়ে দিলে অবশ্যই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে শিক্ষার্থীদের। অনেক কলেজ রয়েছে যাদের অবস্থা ভালো, মান ভালো। তাদের কলেজ চালু রাখতেই পারে। তবে নামসর্বস্ব কলেজগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়াই ভালো। আমরা ২৯ বছর ন্যূনতম বা বিনা বেতনে চাকরি করে আসছি। আমাদের দাবি এমপিওভুক্তি করা। গুণগত মান রক্ষার কথা বলে যদি ফের কলেজের হাতে দায়িত্ব দেয়া হয় আবার একই অবস্থা হবে। আমরা দেশব্যাপী ৫৫০০ শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছি। শিক্ষার মান উন্নয়নে আমাদের এমপিওভুক্তির দাবি সময়ের দাবি।
তিনি আরো বলেন, আমরা এই দাবিতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। এই মে মাসের মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে এ মাসের ৩০ তারিখ থেকে লাগাতার আন্দোলনে যাবো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status