বাংলারজমিন

রূপগঞ্জে দুই কোটি টাকায় শুধুই শোভাবর্ধন

জয়নাল আবেদীন জয়, রূপগঞ্জ থেকে

৭ মে ২০২১, শুক্রবার, ৮:২৭ অপরাহ্ন

খেয়াঘাট আছে কিন্তু নৌকা বা খেয়া নেই। নেই জাহাজ নোঙরের জেটি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঠেরঘাট এলাকার চিত্র এটি। প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে খেয়া ঘাটটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ঘাট থাকলেও নদীর তীরে নৌকা  ভেড়ানো কিংবা মালামাল বোঝাইকৃত শিপ বা জাহাজ নোঙর করার জায়গা নেই। ফলে ঘাটটি কোনো উপকারেই আসছে না জনসাধারণের। সরজমিন দেখা গেছে, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে উপজেলার মঠেরঘাট এলাকায় নির্মিত খেয়াঘাটটিকে তৈরি করা হয়েছে মালামাল ও মানুষজন উঠানামার সিঁড়ি, যাত্রীছাউনি এবং পাবলিক টয়লেট। নদীর পানি থেকে প্রায় ১০-১২ মিটার দূরে ঘাটটি নির্মাণ করায় পানি ও ঘাটলার মধ্যবর্তী স্থানে নদীর চর ভেসে উঠেছে। মাটি শুকিয়ে সবুজ শ্যাওলা জমে আছে। জোয়ারের সময় হালকা পানি থাকলেও ভাটার সময় কাদা জমে থাকে। তাছাড়া মালামাল ওঠানামা করাতো দূরের কথা, মালবাহী নৌকা বা নৌযান নোঙর করাই জায়গা নেই। স্থানীয়দের দাবি, কাজের নকশা এবং পরিকল্পনায় ভুল থাকার কারণে নির্মাণের পর প্রায় ২ বছর অতিবাহিত হলেও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ঘাটলাটি। বর্তমানে মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে এই ঘাটটি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামীণ পরিবহন উন্নয়ন প্রকল্প-২ (আরটিআইপি) আওতাধীন এই খেয়াঘাটটি ২০১৬ সালের ১৭ই মে শুরু এবং গত বছরের ১৮ই জানুয়ারি নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন উপজেলার ‘মেসার্স আজমত অ্যান্ড (জেবি) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার নির্মাণ ব্যয় ছিল এক কোটি ৭২ লাখ ১৬ হাজার ৯৬৪ টাকা। কাজ শেষ হওয়ার দুই বছর অতিবাহিত হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করছেন না। কাজের ধরন হিসেবে জানা যায়, জমি বরাদ্দসহ রয়েছে মালামাল লোড-আনলোড এবং গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ব্যবস্থা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ডাক্তার, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নদীর দু-তীরের হাজার হাজার লোক প্রতিদিন এই নৌপথে নদী পারাপার হয়। পূর্বের অস্থায়ী খেয়াঘাটের নাজুক অবস্থা থাকায় স্থায়ীভাবে ঘাটলাটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু পরিকল্পনা সঠিক না হওয়ায় ঘাটলাটি কোনো কাজে আসছে না জনসাধারণের। নদীর পশ্চিমপারের হরিনা এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেন জানান, নিয়মিত পারাপার হই এখানবার নৌপথে। কিন্তু মালামাল নিয়ে পারাপার হতে গেলেই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নদীর পানি আর ঘাটলার মাঝে প্রায় বিশ গজ ফারাক। পুরোটাই কাদা। ভারি কোনো জিনিস নিয়ে নৌকায় উঠতে গেলে কাদা পায়ে যেতে হয়। আর রোগী থাকলে বিড়ম্বনার শেষ নেই। নারায়ণগঞ্জ জেলার গ্রামীণ পরিবহন উন্নয়ন প্রকল্প-২ (আরটিআইপি) সাবস্টেশন প্রকৌশলী শরীফ মিয়া জানান, ঘাটটি হাজার হাজার লোক সমাগমের চিন্তা মাথায় রেখেই করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হস্তান্তর করার পর এ অংশে ড্রেজিং করলেই ঘাটটি সচল হয়ে যাবে। রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জামাল হোসেন বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। এ ব্যাপারটা আমার সঠিক জানা নেই। ফাইল দেখে বিস্তারিত বলতে পারবো। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুসরাত জাহান বলেন, ঘাটটি এখনো উদ্বোধন হয়নি। আমরা কাজ সম্পন্ন করেই ঘাটটি উদ্বোধন করবো। তখন দুপারের বাসিন্দাদের অনেক উপকারে আসবে এই ঘাট।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status