বাংলারজমিন
চাকরি পেয়ে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়লেন কোটালীপাড়ার ৪৩ ভিক্ষুক
গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া প্রতিনিধি
৩ মে ২০২১, সোমবার, ৯:০৯ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার চৌরখুলী গ্রামে সরকার পরিচালিত কাগজের প্যাকেট তৈরির একটি কারখানায় ৪৩ জন পেশাদার ভিক্ষুককে মজুরিভিত্তিক চাকরি দিয়েছে সরকার। গত শনিবার গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা নিজ হাতে ওই ৪৩ জন ভিক্ষুকের হাতে তাদের নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মাহফুজুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহসীন উদ্দিন, পৌর মেয়র হাজি মো. কামাল হোসেন শেখ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বাদল, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার রাকিবুল হাসান শুভ ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচী ছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন উপস্থিত ছিলেন। চাকরি পাওয়া ৩৯ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ গতকাল সকাল ১০টা থেকেই পূর্বের ভিক্ষাবৃত্তি পেশা ছেড়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। এ চাকরি পেয়ে খুশি তারা ও তাদের পরিবার-পরিজন। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, গত ডিসেম্বর মাস থেকে কোটালীপাড়া উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের চৌরখুলী গ্রামে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও সরকারি অর্থায়নে কাগজের তৈরি একটি কারখানা নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। এপ্রিল মাসে কারখানার নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর ওই ৪৩ জন ভিক্ষুককে ১৫ দিনের একটি প্রশিক্ষণ দিয়ে কাগজের প্যাকেট তৈরির কাজে দক্ষতা অর্জন করানো হয়। এরপর গত শনিবার তাদের মজুরিভিত্তিক প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা বেতনে নিয়োগপত্র দেয়া হয়। গতকাল সকাল ১০টা থেকে সকলে কাজে যোগদান করেছেন। শাহিদা সুলতানা বলেন, এটি একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। একজন ভিক্ষুক যদি নিজের এবং তার পরিবারের মানসম্মানের কথা চিন্তা করে তাহলে আমার বিশ্বাস তারা অতীত ভুলে নিজেরা পরিশ্রম করে কম টাকা রোজগার করেই জীবনযাপন করবে। তিনি বলেন ভিক্ষা নয়, কর্মময় হবে ৪৩ জন ভিক্ষুকের জীবন। এরা এখন থেকে নিজেরা কাজ করে সংসার চালাতে পারবে। এ ধরনের উদ্যোগ দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। ক্ষুদ্র এ উদ্যোগটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেশকে ভিক্ষুক মুক্ত করতে সহায়তা করবে বলেও বিশ্বাস জেলা প্রশাসকের।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম মাহফুজুর রহমান বলেন, কোটালীপাড়ায় প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত কাগজের প্যাকেটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারণে সরকারি অর্থায়নে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ফ্যাক্টরির নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে যারা কাজ করবেন তাদেরকে আমরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ কাজে যোগদান করিয়েছি। তিনি বলেন, এখানে যে ৪৩ জন ভিক্ষুক কাজ করবেন তাদের প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে বেতন দেয়া হবে। এ ছাড়াও প্যাকেট বিক্রির লভ্যাংশের একটি অংশ তারা পাবেন। ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের এ উদ্যোগ সফল হলে পরিবর্তন হবে চৌরখুলীর, পরিবর্তন হবে কোটালীপাড়ার। নতুন কাজে যোগদান করা কয়েকজন বলেন, আমরা আর ভিক্ষা করতে চাই না। কাজ করে খেতে চাই। ভিক্ষায় কোনো সম্মান নেই। এতদিন কোনো কাজ পাইনি। তাই ভিক্ষা করছি। এখন থেকে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারবো।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম মাহফুজুর রহমান বলেন, কোটালীপাড়ায় প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত কাগজের প্যাকেটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ কারণে সরকারি অর্থায়নে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ফ্যাক্টরির নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে যারা কাজ করবেন তাদেরকে আমরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ কাজে যোগদান করিয়েছি। তিনি বলেন, এখানে যে ৪৩ জন ভিক্ষুক কাজ করবেন তাদের প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে বেতন দেয়া হবে। এ ছাড়াও প্যাকেট বিক্রির লভ্যাংশের একটি অংশ তারা পাবেন। ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের এ উদ্যোগ সফল হলে পরিবর্তন হবে চৌরখুলীর, পরিবর্তন হবে কোটালীপাড়ার। নতুন কাজে যোগদান করা কয়েকজন বলেন, আমরা আর ভিক্ষা করতে চাই না। কাজ করে খেতে চাই। ভিক্ষায় কোনো সম্মান নেই। এতদিন কোনো কাজ পাইনি। তাই ভিক্ষা করছি। এখন থেকে সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারবো।