বিশ্বজমিন

এর নাম বন্ধু!

মানবজমিন ডেস্ক

২৮ এপ্রিল ২০২১, বুধবার, ৩:৩৬ অপরাহ্ন

বন্ধুকে বাঁচাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ২৪ ঘন্টায় আরেক বন্ধু পাড়ি দিয়েছেন ১৪০০ কিলোমিটার পথ। এ সময়ে তিনি পাড়ি দিয়েছেন তিনটি রাজ্য। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। এ ঘটনা ভারতের। উত্তর প্রদেশের নয়ডায় বন্ধু রাজন আগরওয়াল করোনায় আক্রান্ত। তার পিতামাতা অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য এসওএস বার্তা দিয়েছেন। তা দেখে ঝাড়খন্ড রাজ্যের বোকারোতে অবস্থানকারী বন্ধু দেবেন্দ্র ঠিক থাকতে পারলেন না। তিনি অক্সিজেন গ্যাসভর্তি একটি সিলিন্ডার নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন বন্ধুকে বাঁচাতে। দেবেন্দ্র ৩৮ বছর বয়সী একজন স্কুলশিক্ষক। তার বসবাস ঝাড়খন্ডের শিল্প শহর বোকারোর ৪ নম্বর সেক্টরে। দেবেন্দ্র জানতে পারেন, তার বন্ধু আগারওয়ালের পিতামাতা সবার কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। যার কাছেই গেছেন, সেখান থেকেই তাদেরকে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে। তারা ছেলেকে বাঁচাতে জরুরি বার্তা (এসওএস) পাঠিয়েছেন। তা দেখে দেবেন্দ্রর মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা। তিনি বসবাস করেন ঝাড়খন্ডের বোকারো শহরে। সেখানে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। তবু তিনি আশাহত না হয়ে অক্সিজেন উৎপাদনকারী কয়েকটি কারখানা এবং শহরের কয়েকটি সরবরাহকারীর দ্বারে ধরনা দেন। তারা তাকে একেবারে বিমুখ করলেন না। জানিয়ে দিলেন, অক্সিজেন নিতে হলে তাকে একটি খালি সিলিন্ডার নিয়ে যেতে হবে। তাহলেই তারা সিলিন্ডার ভরে দিতে পারবেন অক্সিজেন। কিন্তু খালি সিলিন্ডার কোথায় পাবেন দেবেন্দ্র! তাই তিনি অন্য পথ ধরেন।
শেষ চেষ্টা হিসেবে তিনি বালিদি শিল্প এলাকায় অবস্থিত ঝাড়খন্ড স্টিল অক্সিজেন প্লান্টের অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অপারেটর তাকে জানিয়ে দিলেন, তাকে অক্সিজেনভর্তি সিলিন্ডার দিতে পারবেন। কিন্তু তার জন্য নিরপত্তা জামানত দিতে হবে। অগত্যা, স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন দেবেন্দ্র। তিনি অক্সিজেনের মূল্য ৪০০ রুপিসহ ১০ হাজার রুপি পরিশোধ করেন। তারপর অক্সিজেনভর্তি সিলিন্ডার নিয়ে নয়ডায় বন্ধু রাজনের উদ্দেশে রওনা দেন। পথে বিহারে এবং উত্তর প্রদেশ রাজ্য পেরিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। এ দুটি রাজ্যে দু’স্থানে দু’বার তাকে থামায় পুলিশ। কিন্তু বন্ধুর পরিণতির কথা শুনে তারা তার পথে আর বাধা দেয়নি। সেই অক্সিজেন নিয়ে সোমবার বিকেলে নয়ডায় পৌঁছেছেন দেবেন্দ্র। রাজনকে বাঁচাতে এই অক্সিজেন বিরাট ভূমিকা রেখেছে। মঙ্গলবার টেলিফোনে দেবেন্দ্র বলেছেন, আমার বন্ধুর অবস্থা এখন স্থিতিশীল। সে পুরো সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমি নয়ডা থেকে বাড়ি ফিরবো না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status