বিশ্বজমিন

নিষিদ্ধ টিএলপির কাছে মাথানত পাকিস্তানের, ফরাসি রাষ্ট্রদূত বহিষ্কার প্রস্তাব উঠবে পার্লামেন্টে

মানবজমিন ডেস্ক

২০ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার, ২:০৭ অপরাহ্ন

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিবাদে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করা হবে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক হবে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে। ফ্রান্সে শ্রেণিকক্ষে মহানবী (স.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান এবং এর পক্ষে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সমর্থনের কারণে তেহরিকে লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) ঘটনার সময় থেকেই বিক্ষোভ করে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি তারা পাকিস্তান থেকে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের দাবিতে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলে। সেই আন্দোলনে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানী হয়। এতে সরকার টিএলপি’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু তাতে আন্দোলন থেমে থাকেনি। আরো জোরালো হয়েছে। এ অবস্থায় টিএলপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়েছে সরকার। সরকার ঘোষণা দিয়েছে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের বিষয়টি পাকিস্তানের পার্লামেন্টে তোলা হবে আজ মঙ্গলবারই। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ মঙ্গলবার কর্মব্যস্ত সময়ে ঘোষণা দিয়েছেন যে, তাদের মধ্যে সফল আলোচনা হয়েছে। ফলে টিএলপি প্রস্তাবিত শর্ত নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনা হবে। এর বিনিময়ে আন্দোলন স্থগিত করবে টিএলপি। আজ মঙ্গলবারই এ বিষয়টি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে উঠার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরো বলেছেন, এ নিয়ে টিএলপির সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে তার অধীনে জামিয়া মসজিদ রেহমাতুল্লিল আলামিনসহ সারাদেশে আন্দোলন বন্ধ রাখবে তারা। টিএলপি নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হবে। এ নিয়ে আরো আলোচনা হবে। দিনশেষে এ নিয়ে চুক্তির একটি বিস্তারিত বিবৃতি সংবাদ সম্মেলনে দেয়ার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রশিদের।


এর আগের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, সরকার এবং টিএলপির মধ্যে অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে। কারণ, নিষিদ্ধ টিএলপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদের পদত্যাগ, পাকিস্তানে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার, অবিলম্বে দলীয় প্রধান সৈয়দ সাদ হোসেন রিজভি সহ নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেছিল। এসব দাবি নিয়ে সোমবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত তৃতীয় দফায় আলোচনা চলতে থাকে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানায় সরকার। ফলে এখানেই আলোচনা ব্যর্থ হয়। আলোচনায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী নূরুল হক কাদরি, পাঞ্জাব গভর্নর চৌধুরী সরওয়ার, পাঞ্জাবের আইনমন্ত্রী রাজা বাশারাত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সিনিয়র নেতারা। এর আগে টিএলপি সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বেশ কিছু সদস্যকে অপহরণ করেছিল। দ্বিতীয় রাউন্ডের আলোচনা শেষে সোমবারই তাদেরকে ছেড়ে দেয় টিএলপি।

টিএলপি নেতাকর্মী এবং আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে দিনব্যাপী সংঘর্ষের পর রোববার প্রথম দফা আলোচনায় অংশ নেন পাঞ্জাব সরকার ও নিষিদ্ধ দলটির সিনিয়র নেতারা। দ্বিতীয় দফার আলোচনা হয় সোমবার সকালে। এতে অংশ নেন পাঞ্জাবের গভর্নর চৌধুরী সরওয়ার, প্রাদেশিক আইনমন্ত্রী রাজা বাশারাত। এরই মধ্যে সরকারি প্রতিনিধিরা টিএলপির প্রধান হাফিজ সাদ রিজভিকে কোট লাখপাত জেল থেকে মুক্তির নির্দেশ দেন, যাতে তাকে সারাদেশের বিক্ষোভ বন্ধ করাতে রাজি করানো যায়। এই প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন পাঞ্জাবের কোরআন বোর্ডের চেয়ারম্যান সাহিবজাদা হামিদ রাজা, মিল্লি ইয়াকজেহতি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ড. আবুল খায়ের মোহাম্মদ জুবায়ের, খাজা গুলাম কুতবুদ্দিন, পীর মিয়া আবদুল খালিক, সারওয়াট ইজাজ কাদরি, পীর খালিদ সুলতান, জলিল শারকপুরি, পীর নিজামুদ্দিন সিয়ালভি, হামিদ রাজা সিয়ালকোটি এবং অন্যরা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status