অনলাইন

বিদেশি উদ্যোক্তাদের অটোমোবাইল যন্ত্রাংশের কারখানা স্থাপনের আহ্বান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৮ এপ্রিল ২০২১, রবিবার, ৭:৫১ অপরাহ্ন

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অটোমোবাইল শিল্পের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য এগিয়ে আসতে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

রোববার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়ন: বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান করেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকিউক্ত ওয়েবিনারে অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইফাদ গ্রুপ অব বাংলাদেশ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন আহমেদ।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আগামী ২০২৬ সাল স্বল্পন্নোত দেশ হতে উন্নত দেশে পরিণত হবে। তিনি জানান, বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু গড় আয় প্রায় দুই হাজার ৬৪ ডলার এবং আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে তা আরো বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে দেশের মানুষের মাঝে নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি আধুনিক সুবিধা সম্বলিত যানবাহন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়বে, যেটি অটোমোবাইল খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, এখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য একটি সহায়ক নীতিমালার খসড়া প্রস্তুতের কাজ করছে শিল্প মন্ত্রণালয়, যেটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে এখাতের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার জন্য দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়কি বলেন, অনেক দেশের শিল্পায়নে অটোমোবাইল খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, বিশেষ করে জাপানে এখাত দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অটোমোবাইল শিল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে এবং বাংলাদেশের সেই উদাহরণ অনুসরণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অটোমোবইল খাতের বিকাশকে ত্বরান্তিত করতে হালকা প্রকৌশল শিল্পকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, জাপানের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশি বাংলাদেশে ‘সিকেডি প্ল্যান্ট’ স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছে এবং এ বিষয়ক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলমান আছে। তিনি অটোমোবাইল খাতের উন্নয়নে স্থানীয় হালকা প্রকৌশল শিল্পের বিকাশ একান্ত অপরিহার্য বলে মত প্রকাশ করেন।

স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, কোভিড পূর্ববর্তী সময়ে দেশের এ শিল্পখাত প্রতিবছর গড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলেও, বিআরটিএ তথ্য মতে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে মটর ভিহাইক্যালের নিবন্ধন কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ।

তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালার অভাব, সহায়ক শুল্ক কাঠামো না থাকা, স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত কাঁচামালের যোগান না থাকা, দক্ষ মানবসম্পদ ও বেকওয়ার্ড লিংকেজ খাতের অনুপস্থিতির কারণে দেশে অটোমোবাইল শিল্পে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি উল্লেখ করেন, এখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য শিল্পমন্ত্রণালয় ১০ বছর মেয়াদী ‘বাংলাদেশ অটোমোবাইল সেক্টর রোডম্যাপ ২০২১-২২’ এবং ‘অটোমোবাইল-ম্যানুফেকচারিং ডেভেলপমেন্ট পলিসি’-এর খসড়া প্রস্তুত করেছে, যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে চড়ান্তকরণ করা একান্ত অপরিহার্য। পাশাপাশি গাড়ি নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ তৈরিতে স্থানীয় শিল্পের বিকাশের জন্য যৌথ বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ, কমপক্ষে ৫-১০ বছর মেয়াদী সহায়ক শুল্ক নীতিমালা প্রদান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের এখাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য পাঁচ বছরের কর অব্যাহতি প্রদান এবং এখাতের গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিতকল্পে ‘জাতীয় অটোমোবাইল কাউন্সিল’ এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ‘জাতীয় অটোমোবাইল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল’ স্থাপনের প্রস্তাব করেন।

ওয়েবিনারের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশস্থ মার্কিন দূতাবাসের ইকোনোমিক অ্যান্ড ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স ইউনিট-এর প্রধান জন ডি ডানহাম, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তৌহিদুজ্জামান, উত্তরা গ্রুপ অব কোম্পানিজ-এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাতিউর রহমান এবং বারভিডা’র সভাপতি আব্দুল হক অংশগ্রহণ করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status