অনলাইন

প্রণোদনা প্যাকেজের একটা অংশ ‘অনুদান’ হিসেবে চান ব্যবসায়ীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১৮ এপ্রিল ২০২১, রবিবার, ৭:৩৬ অপরাহ্ন

করোনাভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে দেয়া প্রণোদনা প্যাকেজের একটা অংশ ‘অনুদান’ হিসেবে চান ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এফবিসিসিআইয়ের যৌথভাবে আয়োজিত ৪১তম পরামর্শ সভায় এ প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। ভার্চ্যুয়ালি এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এ ধাক্কা যদি আরেক প্রান্তিক অব্যাহত থাকে, তাহলে এ দেশের ছোট-বড় শিল্পমালিকরা বিপাকে পড়তে পারেন। ক্ষতি মোকাবিলায় প্রণোদনার ছাড় করা অর্থের একটা অংশ ‘অনুদান’ হিসেবে দেয়া জরুরি। এক্ষেত্রে বৃহৎ শিল্প মালিকদের জন্য দেয়া প্রণোদনার ছাড় করা অর্থের ৫ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ অনুদানে রূপান্তর করা উচিত।’ এ ছাড়া কৃষি খাতে যেসব প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার অর্থ পেয়েছে, তাদেরও ৫০ শতাংশ অর্থ অনুদান হিসেবে ঘোষণা দেয়ার দাবি জানান তিনি। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে মোট এক লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। এ অর্থের সিংহভাগই ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। খাতভিত্তিক এ প্রণোদনার একটি অংশ অনুদান হিসেবে চান ব্যবসায়ীরা। এদিকে আগামী দুই বছরের মধ্যে আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর ও আগাম ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানায় এফবিসিসিআই। সংগঠনটি মনে করে, করোনার সময় ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। সবকিছু আবারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ সময়ে অগ্রিম আয়কর ও আগাম ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নগদ টাকার প্রবাহ বাড়বে। ওদিকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত ০.২৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান। এ ছাড়া পোশাক রপ্তানিতে নগদ সহায়তার ওপর উৎসে কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি জানান তিনি। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেন, বাঙালির স্বাভাবিক খাদ্য মুড়ি। বর্তমানে ১৫ শতাংশ হারে মুড়ির ওপর ভ্যাট দিতে হচ্ছে। করোনার সময়ও মুড়ির ওপর ভ্যাট গুণতে খারাপ লাগে। র-সুগার আমদানির ওপর এখন প্রতি কেজিতে ২৭ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়। এটিও কমানো জরুরি। ই-কমার্স খাতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতির দাবি জানান বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির। তিনি বলেন, উদীয়মান এ খাতের বিকাশে ভ্যাট প্রত্যাহার অত্যন্ত জরুরি। এ ছাড়া ডিজিটাল লেনদেন ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানান। সাইবার সিকিউরিটির ডিভাইস ও সফটওয়্যার ডিউটি ফি ন্যূনতম পর্যায়ে আনার দাবি করা হয়। পাশাপাশি আইটি খাতের সফটওয়্যার রফতানি বাড়াতে ৫০০ কোটি টাকার তহবিল চায় বেসিস। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জাতীয় বাজেটে ব্যবসায়ীদের দাবি-দাওয়া বা চাওয়া যুক্তিসঙ্গত। অযৌক্তিক কোনও চাওয়া থাকে না। তারা দেশের নিবিড় অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ব্যবসায়ীদের সুযোগ বাড়িয়ে দিলে দেশও উন্নত হয়। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো মানে দেশকে শক্তিশালী করা। এটা দেশের স্বার্থে করতে হবে। ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিলে একদিকে রাজস্ব আয় বাড়বে, অপরদিকে কর্মসংস্থানও বাড়বে। তাই তাদের দাবিগুলো যথাসম্ভব বিবেচনা করা হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া বাংলাদেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে উল্লেখে করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা যদি দেশকে উজাড় করে দেন, তাহলে ঠকবেন না। আপনাদের নিজের যেমন আয় বাড়বে, তেমনি দেশের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status