বাংলারজমিন
ডিম নিয়ে বিপাকে...
গোলাম মোস্তফা রুবেল, সিরাজগঞ্জ থেকে
১৮ এপ্রিল ২০২১, রবিবার, ৭:৩৭ অপরাহ্ন
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ সারা দেশে শুরু হয়েছে ব্যাপক কড়াকড়ি। শহরগুলোতে দোকানপাট বন্ধ থাকায় সিরাজগঞ্জের পোল্ট্রি খামারিরা উৎপাদিত ডিম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। দূরপাল্লার যান চলাচল না থাকায় বিক্রি করতে পারছেন না সিংহভাগ ডিম। দু’ বছরের এই লকডাউনের কারণে অনেকেই এই পোল্ট্রি শিল্প থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে শুরু করেছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সম্ভবনাময় এই শিল্পটি। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে পোল্ট্রি ফার্মের অবস্থা অনেকটাই নাজুক। উৎপাদিত ডিম নিয়ে মহাবিপদে পোল্ট্রি খামারিরা। জেলায় ৩ হাজার ৭শ’ ৭৭টি পোল্ট্রি খামার হতে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ ডিম উদৎপাদন হচ্ছে। উৎপাদিত ডিম জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের অনেক জেলাতে সরবরাহ করে। প্রতিদিন ১০ লাখ ডিম উৎপাদিত হলেও এই জেলার চাহিদা মাত্র ২ লাখ। বাকি ৮ লাখ ডিম কোনোভাবেই অন্যত্র পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে লকডাউনের জন্য দূরপাল্লার যানবাহন না থাকায় দিন দিন ডিম বিক্রি করতে না পারায় চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারিদের। জেলার শিয়ালকোল এলাকার পোল্ট্রি খামারি শাহীন রেজা মানবজমিনকে বলেন, আমার খামারে ২৮ হাজার মুরগি আছে। প্রতিদিন ১৪ হাজার ডিম উৎপাদন হয়। গত ১০ দিনের লকডাউনে প্রতিদিন প্রাণিসম্পদের এই ভ্রাম্যমাণ ভ্যান ২ হাজার করে ডিম নিচ্ছে। বাকি ১২ হাজার ডিম আমি কী করবো। মুরগির খাদ্যের দাম অনেক বেশি। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন জেলা শাখার সভাপতি এসএম ফরিদুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, ভালো নেই আমাদের পোল্ট্রি খামারিরা। অথচ দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা আমরাই পূরণ করে থাকি। গত বছরের লকডাউনের কারণে চরম লোকসান গুনতে হয়েছে আমাদের। সরকার হাতেগোনা কয়েকজন খামারিকে কিছু সহযোগিতা করলেও সিংহভাগ খামারি কিছুই পাননি সরকারি সহযোগিতা। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া মানবজমিনকে বলেন, করোনাভাইরাসের জন্য আমার জেলার খামারিরা উৎপাদিত ডিম নিয়ে যাতে সমস্যা না হয়। সে কারণে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ফার্মারস এসোসিয়েশন (বিপিএফএ) এর বাস্তবায়ন এবং প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সারা দেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলা ও উপজেলা সদরগুলোতে ১০ দিনব্যাপী মোট ৪৪ টি ন্যায্যমূল্যের ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে বিক্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এ কেন্দ্রগুলোতে ফার্মের মুরগির ডিম ২৬ টাকা হালি, সোনালী মুরগির মাংস প্রতি কেজি ২৫০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে অবশিষ্ট ডিম যাতে করে রাজধানী সহ অন্য জেলাতে পাঠানো যায় তার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।