বাংলারজমিন

রাজবাড়ী সরকারি কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

১৭ এপ্রিল ২০২১, শনিবার, ৭:৩২ অপরাহ্ন

রাজবাড়ী সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও মাস্টাররোলে থাকা কর্মচারীদের হয়রানিসহ নানাবিধ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমান ২০১৮ সালের ২৪শে জুলাই রাজবাড়ী সরকারি কলেজে যোগদান করেন। কলেজে যোগদানের পর থেকেই তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন। তার এসব কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন কলেজের একজন প্রাক্তন শিক্ষক ও শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো. সরোয়ার মোর্শেদ স্বপন। অধ্যক্ষের এসব কাজে কোনো শিক্ষক বা কোনো কর্মচারী প্রতিবাদ করলেই তাকে বদলি বা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়। জানা গেছে, অধ্যক্ষ যোগদানের পরপরই কলেজের প্রশাসনিক ভবনের হিসাব শাখা থেকে ৩ লক্ষাধিক টাকা চুরি হলেও সে সময়ে মাত্র ৩০ হাজার টাকা নামমাত্র চুরি দেখিয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত কলেজটির অধ্যক্ষ আর্থিক খাতে বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলেও দীর্ঘদিন মাস্টাররোলে থাকা ৫৬ জন কর্মচারীও রেহায় পান না তার হাত থেকে। করোনার দোহায় দিয়ে তাদের যৎসামান্য বেতন থেকে ২০ ভাগ টাকা কর্তন করা হয়। মাস্টাররোলে থাকা এক কর্মচারী জানান, মাস্টাররোলে কর্মচারী নিয়োগ-ছাঁটাই পছন্দের কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধি বা কারো বেতন কমানো অধ্যক্ষের হাতে থাকায় আমরা তার এসব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করলেই আমাদের চাকরি থেকে ছাঁটাইসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদান করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের এক শিক্ষক বলেন, অধ্যক্ষ স্যারের বিভিন্ন অনিয়ম দেখেও অনেক সময় মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। এসব কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইতিপূর্বে আমাদের এক সহকর্মীকে মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে হাতিয়ায় বদলি হতে হয়েছে। আরেক শিক্ষক একই অপরাধ করা সত্ত্বেও অধ্যক্ষের কাছের হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জানা গেছে, কলেজটিতে ১৬টি ডিপার্টমেন্টে ১০ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে প্রত্যয়নপত্র নিতে গেলে কলেজ নির্ধারিতের বাইরেও টাকা গুনতে হয়। আর এসব টাকা সরকারি খাতে আদৌ জমা পড়ে কি-না কেউ বলতে পারে না। জানা গেছে কলেজটির বঙ্গবন্ধু, মীর মোশাররফ ও খালেদা জিয়া হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের সঙ্গে গোপনে লিয়াজোঁ করে নামমাত্র হলগুলো থেকে সেমিনার ফি ও অন্যান্য আয়ের সমান্য কিছু খরচ করে সিংহভাগ টাকাই অধ্যক্ষ আত্মসাৎ করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, এই হলগুলোতে নানা অনিয়ম হলেও প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে হাজার হাজার টাকার ভুয়া বিল-ভাউচার করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চলতি বছরের ১৬ থেকে ১৯শে মার্চের অডিট রিপোর্টে আর্থিক খাতে অনিয়ম ধরা পড়লেও অধ্যক্ষ মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের মাধ্যমে তা দফারফার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ কোনোটিই সত্য না। অডিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি আমাদের কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আর প্রত্যয়নপত্রসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে যে সব টাকা নেয়া হয় সেগুলো একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মানুযায়ী নিয়ে থাকি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status