দেশ বিদেশ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটি, চেক ক্লিয়ারিং বন্ধ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৬ এপ্রিল ২০২১, শুক্রবার, ৯:২২ অপরাহ্ন
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটির কারণে চেক ক্লিয়ারিংয়ের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চেক লেনদেন নিষ্পত্তির কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (ব্যাচ) কাজ করছে না। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহক। সূত্রমতে, গত ১৩ই এপ্রিল থেকে গ্রাহকের চেক ক্লিয়ারিং বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটির কারণে এ সমস্যাটি হচ্ছে। গত ১৩ই এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি ডেটা সেন্টারের মধ্যে সংযোগকারী ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরপর মাইক্রোসফট ও ভিএমওয়্যার-এই দুইটি প্রযুক্তি টিম সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। যে দুটি সার্ভিস বন্ধ রয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। আন্তঃব্যাংক চেক লেনদেন ও ইএফটিএন-এই দুটিই ব্যাংকিং সেক্টরের আর্থিক খাতে লেনদেনের অন্যতম বড় দুটি মাধ্যম। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে আইটি বিপর্যয়ের কারণে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এটা হয়েছে। প্রথমে সিদ্ধান্ত হয় কোনো ব্যাংক খোলা রাখা হবে না। তখন হলিডে ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই ঘোষণা অনুযায়ী সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আবার যখন ব্যাংক খোলার ঘোষণা এলো তখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, আপাতত চেক নিষ্পত্তি বন্ধ আছে। রোববার নাগাদ ঠিক হবে। তিনি জানান, আন্তঃব্যাংক চেক ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে এখন ম্যানুয়াল সিস্টেম পরিপালন করা হচ্ছে। বেসরকারি একটি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, গত ১৩ই এপ্রিল থেকেই চেক ক্লিয়ারিংয়ে সমস্যা হচ্ছে। কোনো চেক ক্লিয়ারিং করতে পারিনি। শুনেছি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটির কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। তাদের পক্ষ থেকে জানিয়েছে বৃহস্পতিবার এ সমস্যার সমাধান হবে। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, জরুরি আন্তঃব্যাংক লেনদেন সম্পন্নের সুবিধার্থে সরকার ঘোষিত সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে নিষেধাজ্ঞার সময় বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বয়ংক্রিয় নিকাশ ঘরের কার্যক্রমও সীমিত পরিসরে চালু থাকবে। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, লকডাউনে ৫ লাখ টাকার বেশি অঙ্কের চেক ক্লিয়ারিংয়ের জন্য বেলা ১১টার মধ্যে পাঠাতে হবে। এসব চেক দুপুর ১২টার মধ্যে নিষ্পত্তি হবে। আর যেকোনো রেগুলার চেক বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে ক্লিয়ারিংয়ের জন্য পাঠাতে হবে। এসব চেক নিষ্পত্তি হবে দুপুর ১টার মধ্যে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এই সময়ে চেক ক্লিয়ারিং করবে বিএসিএইচ। কিন্তু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে গত ১৩ই এপ্রিল থেকে এ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ঢিলেঢালা কার্যক্রম, গ্রাহক কম, ব্যাংকারদের ভোগান্তি: এদিকে করোনা রোধে কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন এবং সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলছে ঢিলেঢালাভাবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্যাংক পাড়া মতিঝিল, দিলকুশা, দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকের উপস্থিতি কম। বি?শেষ প্র?য়োজন ছাড়া কেউ ব্যাংকে আসেন নি। ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংক বন্ধ থাকার খবরে গত তিনদিন গ্রাহক বেশি বেশি করে টাকা উত্তোলন করেছেন। এ ছাড়া লকডাউনের কার?ণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অনেকে বের হতে পারছেন না। এসব কারণে গ্রাহকের চাপ কম। মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, ক্যাশ কাউন্টারে প্রতিদিনের সেই চিরচেনা রূপ নেই। অনেক কাউন্টার গ্রাহকশূন্য। কর্মকর্তারা ব?সে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন।