বিশ্বজমিন

দুই দিনেই শেয়ারবাজারে ১,৭০,০০০ কোটি টাকা খোয়া এক ব্যক্তির

মানবজমিন ডেস্ক

১৩ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার, ৭:৪৭ অপরাহ্ন

প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে বুদ্ধিদীপ্ত বিনিয়োগের মাধ্যমে রাতারাতি প্রায় ২ হাজার কোটি ডলার বা ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছিলেন বিল হোয়াং। তবে গত মাসে বেশ কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ধসে পড়ে তার বিনিয়োগ তহবিল আরকেগস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। দুই দিনেই সব হারান হোয়াং। ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে মার্কেট ইনসাইডার।

খবরে বলা হয়, বিখ্যাত হেজ তহবিল টাইগার ম্যানেজমেন্টের এলামনাস হোয়াং। ২০১৩ সালে ২০ কোটি ডলার উত্তোলন করে সেই অর্থ প্রযুক্তি বিষয়ক শেয়ারে সফলভাবে বিনিয়োগ করে ২ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের সম্পদের মালিক হয়ে উঠেন তিনি।

কিন্তু গত মাসে উচ্চমূল্যের বেশ কয়েকটি ভুল বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আর এতেই সব বিপর্যয় নেমে আসে। তার ব্যাংক তার বিনিয়োগের বিশাল অংশ বিক্রি করে দেয়। এর ফলে ধস নামে একাধিক মার্কিন মিডিয়া ও চীনা প্রযুক্তি সংস্থার শেয়ার মূল্যে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলার হারায় প্রতিষ্ঠানগুলো।
ব্লুমবার্গ জানায়, প্রাথমিকভাবে আরকেগস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ব্যবহার করে এমাজন, ভ্রমণ-বুকিং প্রতিষ্ঠান এক্সপিডিয়া, লিঙ্কডইন ও নেটফ্লিক্সের মতো প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন হোয়াং। তবে পরবর্তীতে হরেক রকমের প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা শুরু করেন তিনি, বিশেষ করে ভায়াকমসিবিএস ও ডিসকভারির মতো মিডিয়া সাম্রাজ্যগুলোর শেয়ারে। পাশাপাশি বাইডু ও জিএসএক্স টেকেডু’র মতো প্রযুক্তি বিষয়ক চীনা কোম্পানিগুলোতেও অর্থ ঢালেন।

২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে আরকেগস যেসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছিল, সেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্য ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। শক্ত অবস্থানে চলে আসে আরকেগস।
কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় ভায়াকমসিবিএস-এর বিনিয়োগটি ঘিরে। গত মাসের ২২ তারিখ থেকেই এর শেয়ার দর কমতে থাকে। এর পরপরই, আরকেগসকে অর্থ ঋণ দেওয়া ও এর লেনদেন সামলানো প্রধান ব্যাংকগুলো ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টটির কাছ থেকে অতিরিক্ত জামানত চায়। বাণিজ্যের ভাষায় এটি ‘মার্জিন কল’ হিসেবে পরিচিত।
তবে ব্যাংকগুলোর দাবি পূরণ করতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ জমা দিতে পারেননি হোয়াং। ফলস্বরূপ আরকেগসের ৫০০ কোটি ডলার সমমূল্যের হোল্ডিংস বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করে দেয় বিনিয়োগ ব্যাংক মরগ্যান স্ট্যানলি। একই পথ অনুসরণ করে গোল্ডম্যান স্যাকসও। বিক্রি করে দেয় আরকেগসের শত শত কোটি ডলারের স্টক।

সব ব্যাংক অবশ্য এত দ্রুত পদক্ষেপ নেয়নি। যার ফলে, ক্রেডিট সুইস ও নমুরা হোল্ডিংসকে যথাক্রমে ৪৭০ কোটি ডলার ও ২০০ কোটি ডলারের লোকসান গুণতে হয়েছে।

হোয়াংয়ের সম্পদ ধসের পেছনে অন্যতম প্রধান একটি কারণ হচ্ছে, তিনি প্রচুর পরিমাণে ‘লেভারেজ’ ব্যবহার করেছিলেন। অর্থাৎ, নিজের বিনিয়োগের জন্য অর্থ যোগান দিতে আরকেগসের মাধ্যমে ঋণ করেছিলেন। আর বিনিয়োগগুলো ব্যর্থ হলে বড় ধরণের লোকসানের ঝুঁকিতে ছিলেন।

আরবিসি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের মার্কিন ব্যাংক বিশ্লেষক জেরার্ড ক্যাসিডি গত মাসে ইনসাইডারকে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, লেভারেজ হচ্ছে দুইপাশ ধারওয়ালা তরোয়ালের মতো। বাজারেন শেয়ারের দাম বাড়তে থাকলে আপনার আয় বাড়তে থাকবে। আবার দর কমতে থাকলে আপনার মাথা কাটা পড়বে, যেমনটা এক্ষেত্রে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করে আরকেগস থেকে সাড়া পায়নি ইনসাইডার। তবে গত মাসে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক মন্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র কারেন কেসলার বলেন, এটা আরকেগস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং এর সহযোগী ও কর্মচারীদের জন্য কঠিন সময়। ভবিষ্যতে কী করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনা করছেন হোয়াং ও তার টিম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status