খেলা
১০ দিন ভাইয়ের মৃত্যুর খবর লুকিয়ে রেখেছিলেন মা
স্পোর্টস ডেস্ক
১৩ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার, ৬:০৯ অপরাহ্ন
তখন সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফিতে ব্যস্ত ছিলেন চেতেন শাকারিয়া। এমন সময়ই মারা যান তার প্রিয় ছোট ভাই। কিন্তু তার মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটবে, এমন ভাবনা থেকে চেতনকে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর ১০ দিন দেননি তার মা। কথা বলতে দেননি তার বাবার সঙ্গেও, যদি বাবা বলে দেন- এই ভয়ে। পরে যখন ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পান শাকারিয়া, তখন পরিবারের সঙ্গে কথা বলেননি এক সপ্তাহ। ভাইয়ের বেদনা চাপাদেয়ে চেতন এই ম্যােেচই এখন তারকা।
রাজকোট শহর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে ভারতেজ নামের এক অঞ্চলে জন্ম রাজস্থান রয়্যালসের এই পেসারের। আইপিএলএ অভিষেক ম্যাচেই দ্যুতি ছড়িয়েছেন। অথচ চেতন ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলেন ব্যাটসম্যান। সিদ্ধান্ত বদলে হয়ে গেলেন পেস বোলার। ‘অ্যারাউন্ড দ্য উইকেট’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেদের পরিবারের কাহিনি জানিয়েছেন চেতনের মা। সেখানে তিনি জানিয়েছেন তার ছেলে চেতন শাকারিয়ারে সংগ্রামী গল্প। তিনি বলেন, ‘আশা করব, আমরা যেসব কষ্টের মধ্যে দিন কাটিয়েছি, কাউকে যেন কাটাতে না হয়। আমার মেজ ছেলে, চেতনের চেয়ে যে এক বছরের ছোট ছিল, সে মাসখানেক আগে আত্মহত্যা করে। চেতন তখন সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফি খেলছিল। আমরা চেতনকে ওর ভাইয়ের মৃত্যুর খবরটা দিইনি। কারণ, দিলে দেখা যেত, ওর খেলায় খারাপ প্রভাব পড়ছে। ১০ দিন ওকে ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ দিইনি আমরা। ওকে শুধু বলেছিলাম, ওর বাবার শরীরটা খারাপ। ও যখনই ফোন করত, বাবার সম্পর্কে জানতে চাইতো। ওকে বাবার সঙ্গে কথা বলতে দিইনি। কারণ, উনি কথা লুকিয়ে রাখতে পারবেন না, বলে দেবেন, তার ভাই মারা গেছে। ও যখন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইত, তখনো আমি প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলতাম। কিন্তু এক দিন আমি আর সত্য লুকিয়ে রাখতে পারলাম না। কাঁদতে কাঁদতে ওর ভাইয়ের মরার খবর দিই। ও এক সপ্তাহ ধরে আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি, কিচ্ছু খায়নি। ওরা দুই ভাই অনেক ঘনিষ্ঠ ছিল।’
সে সময় পরিবারের দায়িত্ব চেতনের বাবার ওপর থাকলেও হানা দেয় আরেক ট্রাজেডি, ‘বাবা ছিলেন ট্রাক ড্রাইভার। তিন-তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনবার অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। এখন বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। উনি এখন আর উপার্জন করতে পারেন না। উনি এখনো ছেলের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। কিচ্ছু খান না, কোনো কথা বলেন না।’
এত কষ্টের পর আইপিএলের চুক্তি পেয়ে চেতনের পরিবার এখন নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে, ‘এর এক মাস পরই চেতন আইপিএলের চুক্তি পায়। ১ কোটি ২০ লাখ টাকার চুক্তি। মনে হচ্ছিল, আমরা যেন স্বপ্ন দেখছি। আমরা আর্থিকভাবে অনেক কষ্ট করেছি। ছোটবেলায় মামার স্টেশনারি দোকানে কাজ করত চেতন। পাঁচ বছর আগেও আমাদের বাসায় টিভি ছিল না। ক্রিকেটের মাঠে চেতনের উন্নতির খবর ওর বাবা বাইরে থেকে শুনে এসে আমাদের বলত। আমার স্বামীর অসুস্থতার পর থেকে আমাদের পরিবারের ভার চেতন একাই বহন করে। এত কিছুর মধ্যে চেতনের আইপিএল চুক্তিটা আমাদের কাছে অনেকটা ঘায়ে মলম লাগার মতোই মনে হচ্ছে। এ অবস্থায় আসার জন্য আমার ছেলে অনেক কষ্ট করেছে।’
২০১৮-১৯ মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক চেতন শাকারিয়ার। এ পর্যন্ত ১৫টি প্রথম শ্রেণির টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন, সীমিত ওভারের প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন সাতটি, আর ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১৬টি। রঞ্জিজয়ী সৌরাষ্ট্র দলের অন্যতম অংশ তিনি। সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফিতেও আলো ছড়িয়েছেন, আর সেখানেই নজর কেড়েছেন আইপিএলের স্কাউটদের। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে ট্রায়াল দিয়েও লাভ হয়নি, শেষমেশ ১ কোটি ২০ লাখ রুপিতে জায়গা করে নিয়েছেন রাজস্থানে। সোমবার রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে অভিষেক হয়ে গেল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগেও (আইপিএল)। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে সফলও হয়েছেন এই পেসার। ৪ ওভার বল করে ৩১ রান দিয়ে নিয়েছেন তিন উইকেট। যদিও ম্যাচে জয় পায়নি তার দল। অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও তারা হেরে গেছে মাত্র চার রানের ব্যবধানে।
রাজকোট শহর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে ভারতেজ নামের এক অঞ্চলে জন্ম রাজস্থান রয়্যালসের এই পেসারের। আইপিএলএ অভিষেক ম্যাচেই দ্যুতি ছড়িয়েছেন। অথচ চেতন ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলেন ব্যাটসম্যান। সিদ্ধান্ত বদলে হয়ে গেলেন পেস বোলার। ‘অ্যারাউন্ড দ্য উইকেট’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেদের পরিবারের কাহিনি জানিয়েছেন চেতনের মা। সেখানে তিনি জানিয়েছেন তার ছেলে চেতন শাকারিয়ারে সংগ্রামী গল্প। তিনি বলেন, ‘আশা করব, আমরা যেসব কষ্টের মধ্যে দিন কাটিয়েছি, কাউকে যেন কাটাতে না হয়। আমার মেজ ছেলে, চেতনের চেয়ে যে এক বছরের ছোট ছিল, সে মাসখানেক আগে আত্মহত্যা করে। চেতন তখন সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফি খেলছিল। আমরা চেতনকে ওর ভাইয়ের মৃত্যুর খবরটা দিইনি। কারণ, দিলে দেখা যেত, ওর খেলায় খারাপ প্রভাব পড়ছে। ১০ দিন ওকে ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ দিইনি আমরা। ওকে শুধু বলেছিলাম, ওর বাবার শরীরটা খারাপ। ও যখনই ফোন করত, বাবার সম্পর্কে জানতে চাইতো। ওকে বাবার সঙ্গে কথা বলতে দিইনি। কারণ, উনি কথা লুকিয়ে রাখতে পারবেন না, বলে দেবেন, তার ভাই মারা গেছে। ও যখন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইত, তখনো আমি প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলতাম। কিন্তু এক দিন আমি আর সত্য লুকিয়ে রাখতে পারলাম না। কাঁদতে কাঁদতে ওর ভাইয়ের মরার খবর দিই। ও এক সপ্তাহ ধরে আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি, কিচ্ছু খায়নি। ওরা দুই ভাই অনেক ঘনিষ্ঠ ছিল।’
সে সময় পরিবারের দায়িত্ব চেতনের বাবার ওপর থাকলেও হানা দেয় আরেক ট্রাজেডি, ‘বাবা ছিলেন ট্রাক ড্রাইভার। তিন-তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় তিনবার অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। এখন বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। উনি এখন আর উপার্জন করতে পারেন না। উনি এখনো ছেলের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। কিচ্ছু খান না, কোনো কথা বলেন না।’
এত কষ্টের পর আইপিএলের চুক্তি পেয়ে চেতনের পরিবার এখন নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে, ‘এর এক মাস পরই চেতন আইপিএলের চুক্তি পায়। ১ কোটি ২০ লাখ টাকার চুক্তি। মনে হচ্ছিল, আমরা যেন স্বপ্ন দেখছি। আমরা আর্থিকভাবে অনেক কষ্ট করেছি। ছোটবেলায় মামার স্টেশনারি দোকানে কাজ করত চেতন। পাঁচ বছর আগেও আমাদের বাসায় টিভি ছিল না। ক্রিকেটের মাঠে চেতনের উন্নতির খবর ওর বাবা বাইরে থেকে শুনে এসে আমাদের বলত। আমার স্বামীর অসুস্থতার পর থেকে আমাদের পরিবারের ভার চেতন একাই বহন করে। এত কিছুর মধ্যে চেতনের আইপিএল চুক্তিটা আমাদের কাছে অনেকটা ঘায়ে মলম লাগার মতোই মনে হচ্ছে। এ অবস্থায় আসার জন্য আমার ছেলে অনেক কষ্ট করেছে।’
২০১৮-১৯ মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক চেতন শাকারিয়ার। এ পর্যন্ত ১৫টি প্রথম শ্রেণির টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন, সীমিত ওভারের প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন সাতটি, আর ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১৬টি। রঞ্জিজয়ী সৌরাষ্ট্র দলের অন্যতম অংশ তিনি। সৈয়দ মুস্তাক আলী ট্রফিতেও আলো ছড়িয়েছেন, আর সেখানেই নজর কেড়েছেন আইপিএলের স্কাউটদের। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে ট্রায়াল দিয়েও লাভ হয়নি, শেষমেশ ১ কোটি ২০ লাখ রুপিতে জায়গা করে নিয়েছেন রাজস্থানে। সোমবার রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে অভিষেক হয়ে গেল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগেও (আইপিএল)। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে সফলও হয়েছেন এই পেসার। ৪ ওভার বল করে ৩১ রান দিয়ে নিয়েছেন তিন উইকেট। যদিও ম্যাচে জয় পায়নি তার দল। অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও তারা হেরে গেছে মাত্র চার রানের ব্যবধানে।