প্রথম পাতা

সংবাদ সম্মেলনে বাবুনগরী

মামুনুল হকের ঘটনা ব্যক্তিগত

স্টাফ রিপোর্টার ও হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

১২ এপ্রিল ২০২১, সোমবার, ৯:৫১ অপরাহ্ন

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের রিসোট কাণ্ডের বিষয়টি তার ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছেন হেফাজতের আমীর 
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। একইসঙ্গে হেফাজত থেকে তার অব্যাহতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল হাটহাজারী মাদ্রাসায় এক সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। বাবুনগরী লকডাউনে সকল মাদ্রাসা খোলা রাখারও দাবি জানিয়েছেন। গতকাল চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় এক জরুরি সভা শেষে হেফাজতের আমির এসব কথা বলেন। বেলা সাড়ে ১১টায় সভাটি শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয়।
হেফাজতের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, করোনার অজুহাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র দেশের তৌহিদী জনতা মেনে নেবে না। করোনা মহামারি থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কুরআনের তিলাওয়াত, যিকির, তসবিহ পাঠ ও দোয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্যে কুরআন ও হাদিসের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা সরকারেরই নৈতিক কর্তব্য। তাই পবিত্র মাহে রমজানে হিফজখানা, নূরানী মক্তব চালু রাখতে হবে। মসজিদে সুন্নাহ মোতাবেক নামাজ তারাবীহ, ইতিকাফ চলবে। লকডাউনের নামে শরীয়তবিরোধী কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না। যথানিয়মে তাফসীর, দাওয়াত ও তালীমের কাজ চালু রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত ২৬শে মার্চ হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের ওপর পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও সরকারদলীয় হেলমেট বাহিনী কর্তৃক আক্রমণের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল বের করে। হাটহাজারী ও বি.বাড়িয়ায় মিছিল বের হলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে গুলি করে পাঁচ জনকে শহীদ করে। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম ২৭শে মার্চ বিক্ষোভ ও ২৮শে মার্চ শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু হেফাজতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ২১ জনকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ ও সরকারদলীয় ক্যাডার বাহিনী।
বাবুনগরী বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, হেফাজত কোনো তাণ্ডব চালায়নি, বরং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে গুপ্ত হামলার তাণ্ডব চালিয়ে রাজনৈতিকভাবে এখন হেফাজতকে দোষারোপ করা হচ্ছে। সরকারের লোকজন এবং কতিপয় ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া এখন আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। আমরা জানতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতাল চলাকালীন কারা তাণ্ডব চালিয়েছিল? কারা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে, নিশ্চয়ই সেখানকার সিসি ক্যামেরাগুলোতে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন। কিন্তু নিরীহ আলেম, ওলামা, মাদ্রাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানি করবেন না। অবিলম্বে গণগ্রেপ্তার বন্ধ করুন। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করুন। যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিন।
সভায় দেশের সকল মাদ্রাসা ও মসজিদে করোনা মহামারি থেকে মুক্তি ও সমকালীন সংকট থেকে উত্তরণের জন্য কুনূতে নাযেলার আমল চালু করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সভায় যেকোনো সংকটকালীন সময়ে হেফাজতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া আগামী ২৯শে মে হাটহাজারীতে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম (পীর সাহেব ফিরোজ শাহ), মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা শোআইব জমীরী, মাওলানা ওমর মেখলী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুনির হুসাইন কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদরীস, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, ড. নূরুল আবসার আজহারী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা ইলিয়াস হামিদী, মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status