বিশ্বজমিন

মারা গেছেন প্রিন্স ফিলিপ

মানবজমিন ডেস্ক

৯ এপ্রিল ২০২১, শুক্রবার, ৫:৫৪ অপরাহ্ন

মৃত্যুবরণ করেছেন বৃটেনের রাণি দ্বিতীয় এলিজাবেথের দাম্পত্য সঙ্গী প্রিন্স ফিলিপ। বাকিংহাম প্যালেসের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বিবিসি। বাকিংহাম প্যালসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে- মহামান্য রাণি তার ভালোবাসার দাম্পত্য সঙ্গী এবং এডিনবার্গের ডিউক প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যু ঘোষণা করেছেন। আজ সকালে উইন্ডসর প্রাসাদে শান্তির সঙ্গে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

মৃত্যুকালে প্রিন্স ফিলিপের বয়স হয়েছিল ৯৯ বছর। ১০০ বছর পূর্ন হওয়ার মাত্র ২ মাস পূর্বেই পৃথিবী ছাড়তে হলো তাকে। ১৯২১ সালের ১০ জুন গ্রিক আইল্যান্ডের কর্ফুতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা প্রিন্স অ্যান্ড্রু ছিলেন গ্রিস ও ডেনমার্কের যুবরাজ হেলেনের রাজা প্রথম জর্জের ছেলে। তার মা প্রিন্সেস অ্যালিস ছিলেন লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেনের মেয়ে, কুইন ভিক্টোরিয়ার নাতনি। দ্বিতীয় এলিজাবেথ রাণি হওয়ার পাঁচ বছর আগে ১৯৪৭ সালে তাকে বিয়ে করেন প্রিন্স ফিলিপ। তাদের দুজনার ছিল দীর্ঘ ৭৩ বছরের দাম্পত্য জীবন। পরিবারে চার সন্তান ও ১০ জন নাতি-নাতনিকে রেখে গেছেন তিনি।

প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, তিনি অগণিত তরুণকে উৎসাহিত করেছেন। প্রিন্স ফিলিপ রাজ পরিবার ও শাসনের হাল ধরতে সাহায্য করেছিলেন, যাতে করে এটি আমাদের জাতীয় জীবনে ভারসাম্য ও শান্তি নিশ্চিত করতে পারে। প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে তার হৃদয় দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়েছে বলেও জানান বরিস জনসন। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে, কমনওয়েলথভুক্ত অঞ্চলগুলোতে এবং সমগ্র পৃথিবীতেই নতুন প্রজন্মের মানুষদের ভালোবাসা পেয়েছিলেন প্রিন্স ফিলিপ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াই করাদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন তাদের একজন ছিলেন প্রিন্স ফিলিপ। যুদ্ধের সময় তিনি যা শিখেছেন তা দিয়ে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশের ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিলেন বলে মন্তব্য করেন বরিস জনসন।

জীবনের শেষ দিনগুলোতে অসুস্থ ছিলেন প্রিন্স ফিলিপ। একাধিকবার ভর্তি হতে হয়েছে হাসপাতালে। এক মাস আগেও হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফেরার সময় গাড়িতে বসে হাসিমুখে হাত নাড়ছিলেন তিনি। শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হলেও ঘোষণা দেয়া হয় দুপুর বেলা। রাজ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও প্রিন্সের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৃটিশ সরকার। শেষকৃত্য সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।
বৃটেনের মানুষের কাছে রাণির পরেই ছিল প্রিন্স ফিলিপের স্থান। তাদের দীর্ঘ দাম্পত্য বৃটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসেও অনন্য নজির। জানা যায়, প্রতিটি সংকটেই প্রিন্স ফিলিপ ছিলেন রাণির সবথেকে আস্থার মানুষ। কৈশোরেই বৃটিশ নৌবাহিনীতে কর্মরত ফিলিপের প্রতি প্রেম জন্মায় রানির। কিন্তু জার্মানির অভিজাত মহলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ফিলিপের পরিবারের। তিনি বৃটেনে চলে এলেও তার পরিবারের অনেকেই জার্মানিতে থেকে গিয়েছিলেন। তার বোনেদের বিয়ে হয়েছিল নাৎসিদের সঙ্গে যুক্ত থাকা অভিজাত জার্মানদের সঙ্গে। এ কারণে ফিলিপের সঙ্গে রাণি এলিজাবেথের বিবাহে অনীহা ছিল রাজ পরিবারের। তবে সব বাধা পেরিয়ে, ১৯৪৭ সালে ২১ বছর বয়সে ফিলিপের সঙ্গেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রাণি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status